Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মন্দির-গর্জনে পোস্টারে জিত মোদী ও যোগীর

হরিদ্বারে নমো নমো করে একটা হয়, উজ্জ্বয়িনী বা নাসিকে হয় না। শুধু প্রয়াগেই গুরুত্ব দিয়ে অর্ধকুম্ভ হয়।

—ছবি এপি।

—ছবি এপি।

গৌতম চক্রবর্তী
ইলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ) শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:০৫
Share: Save:

গত কয়েক মাস ধরে সোশ্যাল মিডিয়া ও সর্বত্র মহাকুম্ভ’১৯ নিয়ে হইচই। সাধুসন্তেরা অবশ্য বলেন, অর্ধকুম্ভের কোনও গুরুত্ব নেই। হরিদ্বারে নমো নমো করে একটা হয়, উজ্জ্বয়িনী বা নাসিকে হয় না। শুধু প্রয়াগেই গুরুত্ব দিয়ে অর্ধকুম্ভ হয়।

ভোটের বছরে এ বার গুরুত্ব, আরও! কুম্ভে বড় বড় সাধুসন্তদের ছবি-সহ ব্যানার ও পোস্টার থাকে, কে কোথায় শিবির পেতেছেন, কখন প্রবচন দেবেন ইত্যাদি। এ বার সাধুসন্তদের পোস্টারকে হার মানিয়ে দিয়েছেন দুই রাজনীতিক। বিভিন্ন জায়গায় নরেন্দ্র মোদী ও যোগী আদিত্যনাথের ছবি-সাঁটা পোস্টার। কোথাও লেখা, ‘পধারিয়ে সাধু, সন্ত আউর সজ্জনো। স্বাগত হ্যায়, নতমস্তক হম।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পোস্টারে আরও জানাচ্ছেন, ‘জঁহা পুণ্য কি পুঁজি অপার/আপকা স্বাগত বারংবার।’

সোশাল মি়ডিয়ার বিজ্ঞাপনে যা থাকুক না কেন, এখানে পোস্টারে, ব্যানারে মহাকুম্ভ শব্দটি কেউ উচ্চারণ করেনি। উল্টে অন্য হরেক বিশেষণ—দিব্য কুম্ভ, ভাব্য কুম্ভ। এক মাতাজি বুঝিয়ে দিলেন, ভাব্য মানে অনেক রকম ভাবনা যেখানে থাকে। বিলক্ষণ! দারিদ্রসীমার নীচে উত্তরপ্রদেশের কত লক্ষ মহিলা রান্নার গ্যাস পেয়েছেন, রাজ্যের ‘গ্রাম্য বিকাশ বিভাগ’ গত কয়েক বছরে কী সাফল্য রেখেছে, পোস্টার দেখতে দেখতে মুখস্ত হয়ে যাবে। কুম্ভের মি়ডিয়া সেন্টারে অক্ষয়কুমারের ‘টয়লেট এক প্রেমকথা’ এবং ঋষি কপূরের ‘মুলক’ ছবির স্টিল দিয়ে এক পুস্তিকা জানাচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে শুটিং করলে কত ছাড় ও কী কী সুবিধা মিলবে!

এই পরিস্থিতিতে মেলায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শিবিরে অনুষ্ঠিত ধর্মসংসদে যে বক্তাদের গলা চড়বে, তা জানাই ছিল। বাবা রামদেব, ‌মোহন ভাগবত ও অন্য বক্তারা জানালেন, এই সরকারই রামমন্দির তৈরির ক্ষমতা রাখে। রামদেব বললেন, মন্দিরের জন্য তিনি আত্মাহুতি দিতে তৈরি। পুরীর শঙ্করাচার্য নিশ্চলানন্দ সরস্বতীও জানিয়েছেন, মন্দির জলদি তৈরি করতে হবে।

এক দিকে রণহুঙ্কার, অন্য দিকে সর্বভারতীয় আখড়া পরিষদের সভাপতি, নিরঞ্জনী আখড়ার নরেন্দ্র গিরি বলেছেন, পরিষদের এই উদ্যোগে তাঁর সমর্থন নেই, বিরোধিতাও নেই। শিবিরটি ঝুলনের মতো সাজানো। কোথাও ধনুকধারী রামচন্দ্র, কোথাও বা প্রস্তাবিত মন্দিরের মডেল। ভিতরে যখন মাইক লাগিয়ে অগ্নিবর্ষী সভা চলছে, প্যাভিলিয়ন থেকে গাড়ি চেপে বেরিয়ে আসছেন অনেক সাধু। ব্রিগেডে সভায় যেমন হয় আর কি!

তবে তাঁবুতে শ্রীচৈতন্যের একটি মডেল আছে। সবাই রাম-রাম করেন না, কেউ কেউ ‘হা কৃষ্ণ’ বলেও কাঁদেন! মোহন ভাগবতেরা কুম্ভস্নানে সে কথা বুঝলেই ভাল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE