Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

রবীন্দ্রসঙ্গীতে মজলেন মোদী-শাহ-গডকড়ীরা

প্রাথমিক প্রস্তুতির জন্য সময় ছিল মাত্র চার দিন। আর তাতেই অসাধ্য সাধন। 

প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বাউল নাচ। শনিবার দিল্লিতে। ছবি প্রধানমন্ত্রীর টুইটার থেকে নেওয়া।

প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে বাউল নাচ। শনিবার দিল্লিতে। ছবি প্রধানমন্ত্রীর টুইটার থেকে নেওয়া।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৫১
Share: Save:

প্রাথমিক প্রস্তুতির জন্য সময় ছিল মাত্র চার দিন। আর তাতেই অসাধ্য সাধন।
পশ্চিমবঙ্গ নয়। রাজধানীর প্রবাসী বাঙালিদের হাত ধরেই এ বার বঙ্গসংস্কৃতির ছোঁয়া দিল্লির রাজপথে। আজ প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাউলের গেরুয়া পোশাকে বিনয়নগর বেঙ্গলি স্কুলের প্রায় দেড়শো ছাত্র-ছাত্রীর ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি’ গান ও নাচের মূর্চ্ছনায় মেতে ওঠে গোটা রাজপথ। কিন্তু একেবারে শেষ সময়ে যে ভাবে ওই স্কুলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক স্তরে। অনেকেই বলছেন, মমতাকে বার্তা দিতেই দিল্লির বাংলা স্কুলকে অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নিয়েছে মোদী সরকার। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিতর্কে যেতে নারাজ। তাদের বক্তব্য, দিল্লির বুকে বঙ্গসংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখা গিয়েছে সেটাই বড় কথা।
এর আগে নিয়মের গেরোয় বাদ পড়েছিল পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো। শর্ত না মানায় রাজ্যের ট্যাবলোকে বাতিল করে দেয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। যা নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বঞ্চনার রাজনীতি করার অভিযোগে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এ বারের কুচকাওয়াজে যখন বাংলার উপস্থিতি শূন্য বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল, তখনই অনুষ্ঠানের প্রায় শেষ পর্বে গোটা রাজপথ গুনগুনিয়ে ওঠে ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি’ গানে। গান শুরু হতেই দর্শকাসনে দ্বিতীয় সারিতে বসে থাকা বাবুল সুপ্রিয়ের মুখে চওড়া হাসি। মেয়েকে কোলে নিয়ে ততক্ষণে উঠে দাঁড়িয়েছেন তাঁর স্ত্রী। গানের তালে এক সময়ে তাল মেলাতে দেখা যায় অমিত শাহের স্ত্রীকেও। পাশে বসে তখন মিটিমিটি হাসছেন অমিত। মরাঠি হলেও রবি ঠাকুরের গানের সুরে হাঁটুতে চাপড় মেরে আগাগোড়া তাল দিতে দেখা যায় নিতিন গড়কড়ী ও তাঁর স্ত্রীকে। অনুষ্ঠানের শেষে বাউলের পোশাক পরা ছাত্র-ছাত্রীদের ছবি টুইট করে মোদী বলেন, ‘‘ভারতের বৈচিত্র্যই আমাদের শক্তিশালী করে। আমরা গর্বিত যে বিভিন্ন ধরনের সংস্কৃতি ভারতে খুশি মনে সহাবস্থান করে।’’

আরও পড়ুন: হিংসা নয়, মোদীর বার্তা যুবসমাজকে


এ বারই প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবসে অংশ নেওয়ার ডাক পেয়েছিল বিনয়নগর স্কুল। তাও শেষ লগ্নে। প্রথম পর্বে নাম না দিলেও পরে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ‘তাগাদা’ ফোন যায় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। বাছাই শেষ হতে তখন হাতে সময় মাত্র চার দিন। তাতেই বাজিমাত। স্কুলের শিক্ষক অভীক চট্টোপাধ্যায় গানে, শ্রীখোলে অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়, দোতারায় মিন্তাল গাজি, বাঁশিতে পঙ্কজ মিশ্র, মঞ্জিরাতে বিবেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় গানটির রেকর্ডিং হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সপ্তম-নবম ও একাদশ শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা যে ভাবে অল্প সময়ে গোটা বিষয়টি রপ্ত করেছে তাতে কোনও প্রশংসাই কম নয়।’’
গত ২৫-৩০ বছরে দিল্লির কোনও বাঙালি স্কুল এ ভাবে প্রজাতন্ত্র দিবসে অনুষ্ঠান করেছে বলে মনে করতে পারছেন না প্রবীণ বাঙালিরা। যে ভাবে একেবারে শেষ মুহূর্তে ওই স্কুলকে চূড়ান্ত করা হয়েছে তার পিছনে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের কথা ভেবে বাঙালি সমাজের উদ্দেশে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলেও মনে করা হচ্ছে। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ এ সব ভাবতে নারাজ। শেষ মুহূর্তে ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কায় আজকের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার বিষয়টিও পাঁচকান করা হয়নি বলে জানালেন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান উৎপল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘সময় খুব কম ছিল। এমনকি অনুষ্ঠান করার বাজেটই স্বীকৃতি পেয়েছে ২৫ জানুয়ারি। দিল্লির প্রবাসী বাঙালিদের কাছে আজকের দিনটি গর্বের।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy