নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, সরকারের লক্ষ্য সংখ্যালঘুদের বিশ্বাস অর্জন। মন্ত্র হবে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর সঙ্গে ‘সবকা বিশ্বাস’। দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আজ সংসদে প্রথম বক্তৃতায় মোদী মুসলিম মহিলাদের ক্ষমতায়ন না করার জন্য কংগ্রেসকে দুষলেন। তাঁর বক্তব্য, দেওয়ানি বিধি ও শাহ বানো মামলার ভুল শোধরাতে কংগ্রেস তিন তালাক বিলে সমর্থন করুক।
পাল্টা জবাবে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী ঝাড়খণ্ডে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে মারা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘নীরবতা’র কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। বিজেপি শাসিত ঝাড়খণ্ডে মুসলিম যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মারার আগে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার পর রাহুলের মন্তব্য, ‘‘এ নিয়ে বিজেপি শাসিত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের জোর গলায় বলিয়ে-কইয়েদের নীরবতা অত্যন্ত আশ্চর্যজনক।’’ রাজ্যসভায় কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহের কটাক্ষ, ‘‘এককালে যিনি ফেজ টুপি পরতে অস্বীকার করেছিলেন, ইফতারের নিমন্ত্রণে যেতে চাননি, এখন কেন তাঁর মুসলিমদের আস্থা অর্জনের দরকার হচ্ছে? এটাও কি জুমলা?’’
মোদী আজ লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে বিতর্কের জবাবে অভিযোগ করেন, পঞ্চাশের দশকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, তার পর শাহ বানো মামলায় সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস মুসলিম মহিলাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ হাতছাড়া করেছিল। রাজীব গাঁধী সরকারের মন্ত্রী আরিফ মহম্মদ খানকে উদ্ধৃত করে মোদী বলেন, ‘‘রাজীব সরকারের এক মন্ত্রী বলেছিলেন, মুসলিমদের উত্থান ঘটানো কংগ্রেসের কাজ নয়। তারা নর্দমায় পড়ে থাকতে চাইলে থাকতে দাও।’’ মোদীর এমন প্ররোচনাতেও কংগ্রেস নেতৃত্ব ফাঁদে পা দেননি। দলের কিছু সাংসদ প্রতিবাদ করায়, সনিয়া-রাহুল তৎক্ষণাৎ থামিয়ে দেন। কিছু সাংসদ এ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মোদী বলেন, ওই সাক্ষাৎকারের ইউটিউবেল লিঙ্ক পাঠিয়ে দেব।’’
১৯৮৫-তে শাহ বানোর খোরপোষ সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বিবাহবিচ্ছিন্ন মুসলিম মহিলাদের খোরপোষ পাওয়ার অধিকার দেয়। সাক্ষাৎকারে আরিফের যুক্তি ছিল, আধুনিক মনস্ক রাজীব নতুন বিল এনে সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্টে দিতে চাননি। তিনি বরং নোটে লিখেছিলেন, মৌলবাদের সঙ্গে আপস করা চলবে না। নরসিংহ রাও, অর্জুন সিংহ, নারায়ণ দত্ত তিওয়ারির মতো নেতারা তাঁকে চাপ দিয়েছিলেন। তাঁদের মত ছিল, কংগ্রেসের কাজ মুসলিমদের সংস্কার করা নয়। মুসলিমরা নর্দমায় পড়ে থাকতে চাইলে থাকুক। রক্ষণশীল মুসলিম সমাজ শাহ বানো রায়ের প্রতিবাদ করায় মুসলিমদের জন্য আলাদা নতুন দেওয়ানি আইন আনা হয়। বিজেপি প্রথম থেকেই মুসলিমদের আলাদা আইনের বদলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে। দ্বিতীয় দফায় বাড়তি ক্ষমতা নিয়ে এসে মোদী এ বার তা চালু করার চেষ্টা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। আজ সেই ইঙ্গিত দিয়েই তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চাশের দশকে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আলোচনার পরেও কংগ্রেস সুযোগ হাতছাড়া করেছিল। ওরা হিন্দু বিধি বিলের কথা বলে পার পেয়ে যায়। ৩৫ বছর পরে শাহ বানো মামলায় সেই সুযোগ হাতছাড়া করে। আবার ৩৫ বছর পরে সুযোগ এসেছে। আমরা মুসলিম মহিলাদের অধিকার সুরক্ষিত করতে বিল এনেছি। এর সঙ্গে কোনও সম্প্রদায়কে জুড়ে দেখা ঠিক নয়।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy