মুম্বইয়ের করাচি বেকারি। টুইটার থেকে নেওয়া ছবি।
নামে রয়েছে ‘করাচি’। তা নিয়ে গত বছর থেকেই বিখ্যাত বেকারি চেনটির বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিল রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)। কখনও পাঠানো হয়েছে আইনি নোটিস, কখনও মুম্বইয়ের বান্দ্রা ওয়েস্টে দোকানটির সামনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। এ বার পাকাপাকি ভাবে ঝাঁপ বন্ধই করে দিল ‘করাচি বেকারি’-র সেই আউটলেট। আর টুইটারে ফলাও করে তার কৃতিত্ব নিলেন এমএনএস নেতা হাজি সইফ শেখ। মালিক পক্ষের ঘনিষ্ঠ সূত্রের অবশ্য দাবি, আর্থিক ক্ষতির জন্যই বান্দ্রার করাচি বেকারি বন্ধ করতে হয়েছে। এর সঙ্গে এমএনএসের বিক্ষোভের যোগ নেই।
টুইটারে এমএনএস নেতা সইফ লিখেছেন, ‘‘করাচি বেকারির নামে ‘করাচি’ থাকা নিয়ে এমএনএসের সহ-সভাপতি হাজি সইফের নেতৃত্বে বড়সড় বিক্ষোভের পরে শেষ পর্যন্ত তারা মুম্বইয়ের দোকানটি বন্ধ করল।’’ টুইটে রাজ ঠাকরেকেও ট্যাগ করেছেন তিনি। যদিও সইফের এই টুইটের পরেই তড়িঘড়ি বিবৃতি দিয়ে এমএনএস বলেছে, ‘‘এটা একেবারেই দলের সরকারি অবস্থান নয়। দয়া করে সবাই সেটা খেয়াল রাখবেন।’’ আর এক এমএনএস নেতা সন্দীপ দেশপাণ্ডেও একই কথা বলেছেন।
হায়দরাবাদের বিখ্যাত বেকারি চেন ‘করাচি বেকারি’। দেশভাগের পরে করাচি থেকে হায়দরাবাদে চলে এসে ১৯৫৩ সালে সেখানে এই বেকারির প্রথম দোকানটি খুলেছিলেন এক সিন্ধি উদ্বাস্তু— খানচন্দ রমনানি। ক্রমশ কেক আর কুকির জন্য সারা দেশে বিখ্যাত হয়ে ওঠে বেকারি চেনটি। আজ শুধু হায়দরাবাদেই তাদের অন্তত ১৪টি আউটলেট।
পূর্বপুরুষের ভিটেমাটির স্মৃতিতে দোকানের নামে ‘করাচি’ রেখেছিলেন রমনানি। কিন্তু এমএনএস নেতাদের বক্তব্য অন্য। প্রথমত, ভারতের দোকানে পাকিস্তানের শহরের নাম কেন থাকবে? দ্বিতীয়ত, দাউদ ইব্রাহিম যে শহরে লুকিয়ে রয়েছে বলে শোনা যায়, সেই করাচিরই নামই বা কেন থাকবে? এর জন্য ভারতের আমজনতা ও সেনাবাহিনীর ভাবাবেগ আহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করে গত বছরের নভেম্বরে করাচি বেকারিকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন সইফ। গত মাসেও ‘করাচি’ নাম পাল্টানোর দাবি তুলে দোকানের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন তিনি। তখন আবার পাশে পেয়েছিলেন নিতিন নন্দগাঁকরের মতো শিবসেনা নেতাকে। যদিও শিবসেনার তরফে সঞ্জয় রাউত জানিয়ে দিয়েছিলেন, এই দাবির সঙ্গে দল একমত নয়।
বেকারির মালিকদের তরফে অবশ্য ফেসবুকে ভিডিয়ো-সহ বলা হয়েছিল, করাচি বেকারির নামটি বিখ্যাত ও ঐতিহ্যবাহী। কাজেই তা বদলানো সম্ভব নয়। রমনানি পরিবারের এক বন্ধু বলেন, ‘‘ওঁদের কোনও লাভ হচ্ছিল না। বরং খরচ বেশি হচ্ছিল। লকডাউনে সেই ক্ষতি আরও বাড়ে। বান্দ্রা ওয়েস্টের ওই এলাকায় বাড়িভাড়া অনেক চড়া। সেটাও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়ছিল। কয়েক মাস আগেও ওঁরা বলছিলেন যে, বেকারি বন্ধ করে দেবেন। এমএনএসের বিক্ষোভের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই। বিক্ষোভ সত্ত্বেও তো ওঁরা বলেছিলেন যে, নাম পাল্টানো সম্ভব নয়।’’
আম মুম্বইকরেদের অনেকেরই অবশ্য মন খারাপ। সমাজমাধ্যমে কেউ কেউ লিখেছেন করাচি বেকারির বিখ্যাত কেক আর ‘ফ্রুট বিস্কিট’ নিয়ে সুখস্মৃতির কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy