রাজনৈতিক শিবিরের মতে, পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে কেন্দ্র এখন অনেকটাই হালকা। বিশেষত উত্তরপ্রদেশে জয় আসার পরে বিজেপি সরকার অনেকটা আত্মবিশ্বাসীও। ফলে বিরোধীদের দাবি মেনে সংসদে এক দিন আলোচনা সেরে নিলে সরকারের বিশেষ সমস্যা হবে না।
নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
সংসদের দু’কক্ষেই বিরোধীদের চাপে শেষ পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনায় সম্মত হল কেন্দ্র। স্থির হয়েছে আগামী সপ্তাহে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে স্বল্পমেয়াদী আলোচনা হবে। পাশাপাশি বিরোধীদের একাংশের আরও একটি দাবি অনুযায়ী, চলতি ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে আগামী বুধবার।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে কেন্দ্র এখন অনেকটাই হালকা। বিশেষত উত্তরপ্রদেশে জয় আসার পরে বিজেপি সরকার অনেকটা আত্মবিশ্বাসীও। ফলে বিরোধীদের দাবি মেনে সংসদে এক দিন আলোচনা সেরে নিলে সরকারের বিশেষ সমস্যা হবে না। ঘাড়ের কাছে কোনও ভোটও নেই। পাশাপাশি রাজধানীর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, সংসদীয় বিতর্কের যে অভিঘাত এবং বার্তা গোটা দেশের কাছে আগে পৌঁছত, নানা কারণে তা লঘু হয়ে গিয়েছে। এক দিন বিতর্কে রুটিন বিরোধিতা হবে, এবং সরকার পক্ষ থেকে তার কিছু তৈরি করা জবাব দেবে। সংসদে আলোচনার পরেই কেন্দ্র কোমর বেঁধে জ্বালানির দাম কমাতে ঝাঁপিয়ে পড়বে, এমন আশা না করাই ভাল।
আজ লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এমন একটা দিন আসতে পারে যখন পেট্রল, ডিজ়েল এবং রান্নার গ্যাসের দাম বিশ্বে শীর্ষে পৌঁছবে ভারত। কিন্তু এই পরিস্থিতি নিয়ে কেউ কোনও জবাবদিহি করেনি। সাধারণ মানুষ এটাই ভাবছেন, ভোট হওয়ার পরেই হঠাৎ জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দেওয়া হল। প্রধানমন্ত্রী আমাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে সংসদকে অবগত করান।” পাশাপাশি লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার আজ ডাকাতি করছে। জ্বালানির দাম এ ভাবে বাড়ানোর পরে এ বার আগামী ১ এপ্রিল থেকে ৮০০টি ওষুধের দামও বাড়ানো হবে।”
আজ রাজ্যসভায় অধিবেশন শুরু হতে না হতেই মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গ ওঠে। এই বিষয়ে মুলতুবি প্রস্তাব এনে আলোচনার দাবি জানায় বিরোধী দলগুলি। আর তৎক্ষণাৎ দুপুর ১২টা অবধি রাজ্যসভা মুলতুবি করে দেন অধ্যক্ষ। বিরোধীদের বক্তব্য, এর আগেও বহু বার এরকম ঘটনার সাক্ষী থেকেছে সংসদ। অস্বস্তিকর যে কোনও আলোচনা থেকেই পালাতে চায় বিজেপি। অভিযোগ, বিজেপিকে প্রশ্নবাণ থেকে বাঁচাতেই তড়িঘড়ি এই মুলতুবি করার সিদ্ধান্ত।
রাজ্যসভায় তৃণমূলের নেতা ডেরেক ও ব্রায়েনের বক্তব্য, “প্রত্যেকটি সাংসদ সেই সময় নিজের আসনে বসেছিলেন। কিন্তু তাও চেয়ারম্যান বারোটা অবধি মুলতুবি করে দিলেন। আসলে বিজেপি মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা থেকে পালাতে চাইছে। সংসদ সুষ্ঠু ভাবে চলুক তা চায় না বিজেপি। রাজ্যসভার ফুটেজ দেখানো হোক। দেশ সত্যিটা জানতে পারবে।” কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ জয়রাম রমেশ এই প্রসঙ্গে টুইট করে বলেন, “মোদী সরকার কোনও আলোচনা বা বিতর্ক চাইছে না। তাই মূল্যবৃদ্ধি আর ভারত বন্ধের প্রসঙ্গ উঠতেই মুলতুবি করা হল রাজ্যসভা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy