Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

হিন্দুত্বের পথে জন্ম নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র

নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনের পরে এ বার বিজেপি-আরএসএসের ‘হিন্দুত্ব’-র কর্মসূচিতে সন্তানের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া আসছে বলে ইঙ্গিত মিলেছিল।

নরেন্দ্র মোদী।

নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩২
Share: Save:

স্বাধীনতা দিবসে লাল কেল্লা থেকে বক্তৃতায় পরিবার পরিকল্পনাকে ‘দেশপ্রেমের অঙ্গ’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ, অযোধ্যায় রামমন্দির, নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনের পরে এ বার বিজেপি-আরএসএসের ‘হিন্দুত্ব’-র কর্মসূচিতে সন্তানের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া আসছে বলে ইঙ্গিত মিলেছিল।

সেটি আরও স্পষ্ট করে মোদী সরকারের ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ নীতি আয়োগ এ বার জনসংখ্যাকে স্থিতিশীল করার খসড়া পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করল। শুক্রবারেই এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত বৈঠক স্থগিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নীতি আয়োগ জানিয়েছে, ১৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পরিবার পরিকল্পনায় গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছিলেন। সেই অনুযায়ীই নীতি আয়োগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে একটি খসড়া পরিকল্পনা তৈরি করবে। মজার কথা হল, নীতি আয়োগ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করলেও চলতি বছরেই অর্থ মন্ত্রকের আর্থিক সমীক্ষা ঠিক উল্টো কথা বলেছে। আর্থিক সমীক্ষা পরিসংখ্যান দিয়ে দেখিয়েছে, আগামী দু’দশকে ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দ্রুত কমবে। ২০৩০-এর মধ্যে অনেক রাজ্যে বৃদ্ধের স‌ংখ্যা বাড়বে। প্রজননের হার কমে যাওয়ায় ১৯ বছরের কমবয়সীদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। যার অর্থ, দেশের সমস্যা জনবিস্ফোরণ নয়। সমস্যা হল, জনসংখ্যায় বয়স্কদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া।

নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর নীতি আয়োগ কি উল্টো পথে হাঁটছে? প্রধানমন্ত্রী যুক্তি দিয়েছিলেন, ‘‘প্রত্যেকের উচিত পরিবারকে ছোট রাখা। প্রত্যেকের জন্য যদি শিক্ষা-স্বাস্থ্য পরিষেবা সুনিশ্চিত করা না-যায়, তবে দেশ সুখী হতে পারে না।’’ কিন্তু একই সঙ্গে মনে করিয়েছিলেন, সমাজের একটি অংশই পরিবারের সদস্য সংখ্যা কম রাখছে। বিরোধীদের অভিযোগ, নাগরিকত্ব আইনের মতো এ ক্ষেত্রেও মোদী সরকার তথা বিজেপি-আরএসএসের নিশানা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। দেশের জনসংখ্যা বিস্ফোরণ ও তার ফলে উদ্ভূত সমস্যার কথা বলে বিজেপি নেতৃত্ব সংখ্যালঘুদের দিকে আঙুল তুলতে চাইছে। কিন্তু আর্থিক সমীক্ষায় তুলে ধরা বাস্তব হল, এমন কোনও সমস্যাই আদতে নেই। নীতি আয়োগের অবশ্য যুক্তি, গর্ভনিরোধকের বিকল্প বাড়ানো, মহিলাদের দেরিতে গর্ভবতী হওয়ার সমস্যা ও দুই সন্তানের মধ্যে ব্যবধান রাখার বিষয়ে সচেতন করা পরিবার পরিকল্পনার মধ্যে থাকবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Birth Control Policy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE