ডেরেকের এই ছবিটাই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
যেখানে রাস্তায় পড়ে থাকা অসুস্থ মানুষকে সাহায্য না করে পাশ কাটিয়ে চলে যান অনেকেই, যেখানে গাড়ির ধাক্কায় ফুটপাথে ঘুমিয়ে থাকা মানুষগুলোর মৃত্যুর পরেও নির্লিপ্ত থাকেন কেউ, সেখানে এক শিশুর মানবিকতা এবং সরল মন ছুঁয়ে গেল সারা বিশ্বকে। দুর্ঘটনায় মৃত একটি মুরগিছানাকে বাঁচানোর জন্য যে ভাবে আপ্রাণ চেষ্টা করে গেল শিশুটি, তা অবাক করার মতো।
শিশুটির বয়স মাত্র ৬ বছর। মিজোরামের সাইরাঙের বাসিন্দা ওই শিশুর নাম ডেরেক সি লালছানহিমা। সম্প্রতি বাই-সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় অসাবধানতাবশত একটি মুরগিছানার উপর দিয়ে সাইকেলটা চালিয়ে ফেলে ডেরেক। সাইকেলের চাকায় পিষে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় ওই মুরগিছানা।
একটা সামান্য মুরগির ছানার প্রাণ নিয়ে এত উদ্বিগ্ন সচরাচর কাউকেই হতে দেখা যায় না। ডেরেক কিন্তু তেমনটা হতে পারেনি। বিষয়টাকে পাত্তা না দিয়ে সাইকেল নিয়ে চলে যেতে পারেনি সে। বরং সাইকেল থেকে নেমে তৎক্ষণাৎ মুরগি ছানাটাকে হাতে তুলে নেয়। মুরগি ছানাটা নড়াচড়া করছিল না। মারা গিয়েছিল। কিন্তু ডেরেক সেটা বুঝতে পারেনি। কী করবে প্রথমে বুঝে উঠতে পারছিল না সে। ছানাটাকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
মুরগিছানাটা যে আর বেঁচে নেই সেটা অবশ্য প্রথম দেখাতেই বুঝে গিয়েছিলেন ডেরেকের বাবা। কিন্তু ছেলের এই চেষ্টায় তিনি বাধা দিতে চাননি। তাঁর পরামর্শেই ডেরেক বাড়ির কাছেই একটি হাসপাতালে মুরগিছানাটাকে নিয়ে যায় চিকিৎসার জন্য। সঙ্গে নিতে ভোলেনি তার সঞ্চয়ের ১০ টাকা।
আরও পড়ুন: ‘আমার উপর অ্যাসিড হামলার চেষ্টা হয়েছিল’, নির্বাচনী জনসভায় কেঁদে ফেললেন জয়াপ্রদা
এক হাতে মুরগিছানা আর এক হাতে ১০ টাকা নিয়ে সে হাসপাতালে ঢুকে একটি নার্সকে সবটা বলে। নার্সের মন ছুঁয়ে যায় ডেরেকের সরলতা। এক হাতে ১০ টাকা এবং অন্য হাতে মুরগিছানা নিয়ে ছবিটা ওই নার্সই তুলেছিলেন। সেটাই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। নার্সের তোলা ওই ছবিটা ফেসবুকে শেয়ার করেছেন ডেরেকের প্রতিবেশী সাংমা।
এখানেই অবশ্য শেষ নয়। হাল ছাড়তে নারাজ ডেরেক। কেউই চিকিৎসা করছেন না দেখে, কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে ফিরে আসে ডেরেক। তারপর বাবার কাছে আবদার করে একটি ১০০ টাকার নোট নিয়ে ফের হাসপাতালের দিকে রওনা দেয়। মুরগিছানাকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা নাছোড়বান্দা ছেলেকে এ বার একপ্রকার বাধ্য হয়েই ডেরেকের বাবা সত্যিটা বলে দেন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে ফেসবুকের পোস্ট সকলের হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছে। একজন লিখেছেন, ‘তার খাঁটি এবং সৎ হৃদয়ের উপর ঈশ্বরের আশীর্বাদ ঝরে পড়ুক।’ কেউ তার মধ্যেই ঈশ্বরকে দেখেছেন তো কেউ লিখেছেন, ‘আমাদের সকলেরই ওর থেকে শেখা উচিত।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy