চলন্ত ট্রেনে সেনা-কামরায় গণধর্ষণের শিকার হল দমদমের এক নাবালিকা।
বাড়ি থেকে পালাতে চেয়েছিল মেয়েটি। লুধিয়ানা যাবে বলে হাওড়া স্টেশন পৌঁছেছিল। হাতের কাছে পেয়ে যায় অমৃতসরমুখী একটি ট্রেন। কিন্তু, ট্রেনের কোনও কামরাতেই জায়গা নেই। কাজেই সে এক কামরা থেকে অন্য কামরায় খুঁজে বেড়াচ্ছিল এক টুকরো বসার জায়গা। শেষে একটা কামরা একটু ফাঁকা পায়। সে দিকে তাকাতেই কামরায় থাকা সেনা-জওয়ানরা তাকে উঠে আসতে বলে। কামরাতে উঠেও যায় নাবালিকা ওই মেয়েটি। এর প্রায় ঘণ্টা ছয়েক পর সেনা-জওয়ানদের জন্য সংরক্ষিত ওই কামরা থেকে ঝাড়খণ্ড রেল পুলিশ উদ্ধার করে তার অচৈতন্য দেহ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ট্রেনের সেনা-কামরাতেই গণধর্ষণ করা হয়েছে ওই নাবালিকাকে। আপাতত মধুপুর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন আছে সে। এই ঘটনায় মঞ্জরিশ ত্রিপাঠি নামে এক সেনা জওয়ানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্ধান চলছে আরও দুই জওয়ানের।
রেল পুলিশ সূত্রে খবর, কামরায় ওঠার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই জওয়ানরা একটা বোতলে পানীয় খেতে দেয় নাবালিকাকে। তার পরেই অচৈতন্য হয়ে পড়ে সে। একটা মত, ওই পানীয়ে মদ মেশানো ছিল। অন্য মতও শোনা যাচ্ছে। তাঁরা বলছেন, পানীয়ের মধ্যে মাদক মেশানো ছিল। ওই বেহুঁশ অবস্থাতেই তাকে গণধর্ষণ করা হয়।
কী ভাবে উদ্ধার হল ওই নাবালিকা?
পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রথম অভিযোগটা করেছিল কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। রেল পুলিশ (জিআরপি)-এর কাছে এক নাবালিকার ছবি-সহ ওই অভিযোগে তারা জানায়, দমদম এলাকার এই মেয়েটি বাড়ি থেকে পালিয়ে লুধিয়ানা যাচ্ছে। এমনকী, সে যে আপ অমৃতসর এক্সপ্রেসে চেপে পালাচ্ছে এই কথাও জানানো হয়। এর পরেই নড়েচড়ে বসে রেল পুলিশ। রবিবার দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে হাওড়া থেকে ছেড়ে যাওয়া অমৃতসরমুখী ওই ট্রেন জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। কিন্তু, কোথাও ওই নাবালিকার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এর পর এ রাজ্যের রেল পুলিশের তরফে ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। নাবালিকার ছবিও পাঠানো হয়। ঝাড়খণ্ড পুলিশ এ বার সে রাজ্যের জিআরপিকে ওই বার্তা পাঠায়। রেল রক্ষী বাহিনী (আরপিএফ)-র সঙ্গে যৌথ ভাবে রেল পুলিশ ফের তল্লাশি শুরু করে অমৃতসর এক্সপ্রেসে। শেষে মধুপুরের কাছে এসে সব কামরা পেরিয়ে সেনা-জওয়ানদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় এক নাবালিকার সন্ধান মেলে। মেঝেতে পড়ে থাকা অজ্ঞান ওই নাবালিকার সঙ্গে বার্তায় পাঠানো ছবি মিলিয়ে দেখা হয়। ওই কামরায় তখন মঞ্জরিশ ত্রিপাঠি নামে এক জওয়ান ছিলেন। মুখ মিলে যাওয়ায় ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত তখন প্রায় সাড়ে ৮টা।
হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও এসে পৌঁছয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy