ঘটনাস্থলে হাজির উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: এএফপি।
প্রায় দু’সপ্তাহ কাটতে বসেছে। অথচ হদিশ নেই মেঘালয়ে কয়লাখনিতে আটকে পড়া ১৫ জন শ্রমিকের। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তাঁদের মধ্যে একজনকেও। গোটা ঘটনায় সরকারের উদাসীনতা নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গাঁধী।
বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে নিজের টুইটার হ্যান্ডলে রাহুল লেখেন, ‘‘দু’সপ্তাহ ধরে জলভর্তি খনিতে আটকে ১৫ শ্রমিক। হাওয়া-বাতাস পাচ্ছে না। সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বগিবিল ব্রিজ নিয়েই ব্যস্ত। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে শুধু পোজ দিয়ে চলেছেন। এখনও পর্যন্ত শক্তিশালী পাম্প জোগাড় করে উঠতে পারল না ওঁর সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি, দয়া করে ওই শ্রমিকদের বাঁচান।’’
খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ মেঘালয়ে এমনিতে খননকার্য নিষিদ্ধ। খননকার্যের জেরে পানীয় জল দূষিত হচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ তুলছিলেন স্থানীয় মানুষ। তার জেরে ২০১৪ সালে এই নির্দেশ দেয় জাতীয় পরিবেশ আদালত (এনজিটি)। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেআইনি খননকার্য বন্ধ করা যায়নি। কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর উদ্যোগে বিভিন্ন জায়গায় সুড়ঙ্গ খুঁড়ে কয়লা বের করে আনার কাজ জারি রয়েছে আজও।
15 miners have been struggling for air in a flooded coal mine for two weeks.
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) December 26, 2018
Meanwhile, PM struts about on Bogibeel Bridge posing for cameras.
His government refuses to organise high pressure pumps for the rescue.
PM please save the miners. https://t.co/STZS62vTp4
রাহুল গাঁধীর টুইট।
আরও পড়ুন: আইএস মাথাচাড়া দিচ্ছে ভারতে! দিল্লি- উত্তরপ্রদেশে ব্যাপক তল্লশি এনআইএ-র
গত ১৩ ডিসেম্বর পূর্ব জয়ন্তিয়া পার্বত্য জেলার তেমনই এক বেআইনি খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করতে নেমেছিলেন জনা কুড়ি শ্রমিক। ৩৭০ ফুট গভীর সঙ্কীর্ণ গুহা বেয়ে একে একে নেমে যান তাঁরা। কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু করেন। কিন্তু বিপত্তি বাধে কিছু ক্ষণ পর, যখন শ্রমিকদের মধ্যে একজন ভুল করে গুহার দেওয়ালে গর্ত খুঁড়ে ফেলেন। তার জেরে পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীর জল তীব্র বেগে ঢুকে পড়ে গুহার মধ্যে। বিপদ বুঝে তড়িঘড়ি গুহার মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন ৫ শ্রমিক। কিন্তু বাকিরা জলস্তর পেরিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারেননি।
বেআইনি ওই খনির মালিকের ভয়ে তটস্থ স্থানীয় মানুষ। তাই সব জেনেও খবর চাউর হতে দেননি তাঁরা। তবে গোপন সূত্রে শেষ পর্যন্ত খবর গিয়ে পৌঁছয় পুলিশের কাছে। তার পরই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছয় জেলা প্রশাসন। হাজির হয় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি দলও। গুহার মধ্যে তখন জলস্তর ৭০ ফুট পর্যন্ত উঠে এসেছে। ২৫ হর্সপাওয়ারের দু’টি পাম্পের সাহায্যে জল বের করে আনার চেষ্টা চালান তাঁরা।
#Meghalaya: Rescue operations to save 13 miners trapped in coal mine near Lyteiñ River in East Jaintia Hills district is still on.#AIRVideo: Samir pic.twitter.com/xfYLxjvaoh
— All India Radio News (@airnewsalerts) December 16, 2018
১৬ ডিসেম্বর উদ্ধারকাজের এই ভিডিয়ো সামনে আনে আকাশবাণী।
আরও পড়ুন: ‘অখিলেশ জিন্দাবাদ’ বলায় প্রতিবন্ধীর মুখে লাঠি ঢোকালেন বিজেপি নেতা!
কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। জলস্তর নীচে নামেনি একচুলও। পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায়, রাজ্য সরকারের কাছে ১০০ হর্সপাওয়ার যুক্ত শক্তিশালী পাম্প চেয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কিন্তু মাঝে তিনদিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত সেই পাম্প সরবরাহ করে উঠতে পারেনি কনরাড সাংমার সরকার। তাই উদ্ধারকার্য বন্ধ রাখতে হয়েছে সাময়িকভাবে।রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এই নিয়ে সরব হলেও এখনও পর্যন্ত ঘটনাস্থলে যাওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেননি রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী। পরিস্থিতি দেখতে যাননি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy