তখন সুহৃদ। রাহুল গান্ধীর সঙ্গে মিলিন্দ দেওড়া (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দল ছাড়ার ঠিক এক দিন আগে এক কংগ্রেস নেতাকে ফোন করেছিলেন মিলিন্দ দেওরা। একটি মেসেজ পাঠিয়ে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন তাঁকে। পাল্টা সেই নেতা মিলিন্দকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘‘তুমি কি তা হলে দল বদলাতে চাও?’’ সূত্রের খবর, এটিই ছিল দল ছাড়ার আগে মিলিন্দের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের শেষ বার্তালাপ।
রবিবার, রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা শুরুর দিনেই কংগ্রেস ছেড়েছেন দলে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত মিলিন্দ। মহারাষ্ট্রের এই কংগ্রেস নেতা সকালে এক্স হ্যান্ডলে কংগ্রেস ছাড়ার ঘোষণা করে বিকেলেই যোগ দেন শিবসেনার একনাথ শিন্ডে গোষ্ঠীতে। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ জানালেন, দল ছাড়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে শুক্রবার সকালে তাঁকে একটি টেলিফোনিক বার্তা পাঠান মিলিন্দ। পরে ফোনও করেন। ফোনে বার বার কংগ্রেস নেতা রাহুলের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন মিলিন্দ।
মহারাষ্ট্রের প্রভাবশালী কংগ্রেস নেতা প্রয়াত মুরলী দেওরার পুত্র মিলিন্দ। রাহুলের ‘পুরনো বন্ধু’। কংগ্রেস যখন রাহুলের নেতৃত্বে নতুন করে ল়ড়াইয়ে নামার কথা ভাবছে, তখন এই মিলিন্দ ছিলেন রাহুলের ঘনিষ্ঠ বলয়ের অন্যতম সদস্য। সেই বলয়ের দু’জন— জ্যোতিরাদিত্য শিন্ডে এবং জিতিন প্রসাদ ইতিমধ্যেই রাহুলের বলয় ভেঙে গেরুয়া শিবিরে পা রেখেছেন। সচিন পাইলটও বিদ্রোহ করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে ফিরিয়ে এনেছে কংগ্রেস। মিলিন্দকে অবশ্য আটকানো যায়নি।
কংগ্রেস নেতা জয়রাম জানিয়েছেন, গত শুক্রবার সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে তাঁর কাছে মেসেজ আসে মিলিন্দের। তিনি যা লিখেছিলেন, তার জবাবে রমেশ পাল্টা লেখেন, ‘‘তবে কি তুমি দল পাল্টাতে চাও?’’ দুপুর ২টো বেজে ৪৭ মিনিটে ওই উত্তর দিয়েছিলেন রমেশ। এক মিনিট পরেই আসে মিলিন্দের ফিরতি মেসেজ। একটি প্রশ্ন— ‘‘তোমার সঙ্গে কি কথা বলা একেবারেই সম্ভব নয়?’’ জয়রাম এর জবাবে জানান তিনি ফোন করবেন এবং দুপুর ৩টে বেজে ৪০ মিনিটে তাঁর সঙ্গে মিলিন্দের কথা হয়। ফোনে নিজের অসন্তোষের কথা জয়রামকে জানান মিলিন্দ।
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটে মিলিন্দ যে আসনটি থেকে লড়েন দক্ষিণ মুম্বইয়ের সেই আসনটি শিবসেনাকে দিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার আসন ভাগাভাগি সংক্রান্ত আলোচনায়। খবরটি মিলিন্দের কানে পৌঁছয় এবং তিনি তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। শুক্রবারও এই বিষয়েই জয়রামকে বলেন মিলিন্দ। রাহুলের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে দেখা করে এ নিয়ে কথা বলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। জয়রামকেও বলেন রাহুলের সঙ্গে কথা বলতে। যদিও জয়রাম জানিয়েছেন, এ সবই ছিল আসলে ‘নাটক’। কারণ ততদিনে দল বদলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন তিনি।
মিলিন্দের বিরোধী শিবিরে যোগ দেওয়ার দিন-ক্ষণ সবই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পরিকল্পনা করা বলেও মন্তব্য করেছে কংগ্রেস। দলের প্রবীণ নেতা জয়রাম বলেন, রাহুলের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরুর দিনেই এই ঘটনাটি ঘটিয়ে আসলে খবরের শিরোনাম ছিনিয়ে নিতে চাইলেন মোদী। কারণ তিনি জানেন খবরে কী ভাবে থাকতে হয়। কিন্তু কংগ্রেস বা রাহুলের ন্যায় যাত্রার উপর এর কোনও প্রভাব পড়বে না। কারণ রমেশের কথায়, ‘‘এমন একটা মিলিন্দের যাওয়া নিয়ে তাঁরা চিন্তিত নন। তাঁরা সেই সব মিলিন্দকে নিয়ে ভাববেন যাঁরা শেষ দিন পর্যন্ত কংগ্রেসের নীতি আদর্শের প্রতি সৎ থাকবেন’’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy