Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Corona virus

গায়ত্রী ও প্রাণায়ামে নিরাময়! এমসে কোভিড-গবেষণা

কুড়ি জন কোভিড রোগীকে বেছে নিয়েছে এমস হৃষীকেশ। দশ জনের দু’টি দলে ভাগ করা হয়েছে তাঁদের।

— ছবি সংগৃহীত

— ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২১ ০৭:৪৫
Share: Save:

গোমূত্র, গোবর, ‘ভাবিজি’ পাঁপড়ের পরে ‘‘ওঁ ভূর্ভুবঃ স্বঃ...’’ ইত্যাদি! বিজেপি-শাসিত ভারতে করোনা সারানোর নবতম নিদান— গায়ত্রী মন্ত্র এবং প্রাণায়াম।
টাকা দিচ্ছে দেশের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ স্তরের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম এমসের হৃষীকেশ শাখায়। গবেষণার বিষয় হল, কোভিড রোগীদের প্রাণায়াম করালে এবং গায়ত্রী মন্ত্র জপ করালে তাঁরা কি প্রথাগত চিকিৎসার চেয়ে তাড়াতাড়ি সেরে উঠছেন?


কুড়ি জন কোভিড রোগীকে বেছে নিয়েছে এমস হৃষীকেশ। দশ জনের দু’টি দলে ভাগ করা হয়েছে তাঁদের। একটি দলের শুধুই প্রথাগত চিকিৎসা চলবে। অন্য দলটিকে সেই চিকিৎসার পাশাপাশি সকাল-সন্ধে গায়ত্রী মন্ত্র জপ করানো হবে। সঙ্গে এক ঘণ্টা করে প্রাণায়ামের সেশন। ১৪ দিন ধরে দু’দল রোগীকে পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা। তার পরে তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা হবে, গায়ত্রী-প্রাণায়ামের দলটি কোনও বিশেষ ভাবে উপকৃত হয়েছে কি না। যে-হেতু এটিও ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’, তাই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর-এ নথিভুক্তও হয়েছে এই গবেষণা।


এমসের কর্তারা এ নিয়ে ভেঙে বলেননি। তবে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির আরও এক বার প্রশ্ন তুলেছে, বিজ্ঞান নিয়ে এই ‘ছেলেখেলা’ নরেন্দ্র মোদীর জমানায় আর কত দিন? গোমূত্র এবং গোবর করোনা সারাতে পারে বলে গত বছর এক অনুষ্ঠানে দাবি করেছিলেন হিন্দু মহাসভার সভাপতি স্বামী চক্রপাণি মহারাজ। তাঁর বক্তব্য ছিল, যিনি ‘ওঁম নমঃ শিবায়’ বলবেন ও গোবর গায়ে মাখবেন, তিনি কোভিড থেকে রক্ষা পাবেন! এমনকি ‘গোমূত্র পার্টি’-র আয়োজন করে ফেলেছিল হিন্দু মহাসভা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল রীতিমতো ভিডিয়ো-বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, রাজস্থানে তৈরি ‘ভাবিজি’ ব্র্যান্ডের পাঁপড় খেলে শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। পরে মেঘওয়াল নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। উপরন্তু কয়েক দিন আগে প্রতিষেধক নেওয়ার পরে নেট-নাগরিকদের রসিকতার মুখেও
পড়েছেন তিনি।


চিকিৎসা ক্ষেত্রেও এমন মন্ত্র-তন্ত্রের সাধনা মোদী জমানায় এই প্রথম নয়। দিল্লির রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে ২০১৯ সালে ডাক পড়েছিল লালবাহাদুর শাস্ত্রী রাষ্ট্রীয় সংস্কৃত বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের! মস্তিষ্কে আঘাত পেয়ে কোমায় চলে-যাওয়া রোগীদের কানে সাত দিনে সওয়া লক্ষ বার ‘মহামৃত্যুঞ্জয়’ মন্ত্র শোনাতেন তাঁরা। এই গবেষণার নেপথ্যে ছিলেন নিউরোসার্জারি বিভাগের গবেষক অশোক কুমার। তার জন্য আইসিএমআর-এর ভাতা পেয়েছেন তিনি। এমসের নয়া ‘গবেষণা’ সম্পর্কে কলকাতার এক ভাইরোলজিস্ট বলেন, ‘‘ভাববাদ দিয়ে বিজ্ঞান চলে না! চলে যুক্তিবাদের উপরে। গবেষণার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি থাকাটা প্রয়োজন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

AIIMS Dehradun Corona virus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy