লাদাখের কিছু অংশকে যে নতুন করে ‘চিনা ভূখণ্ড’ বলে দাবি করা হয়েছে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার অবগত। শুক্রবার লোকসভা এ কথা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ। সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভারত সরকার কখনও এই অঞ্চলে ভারতীয় ভূখণ্ডের অবৈধ চিনা দখলকে মেনে নেয়নি। ভবিষ্যতেও নেবে না।’’
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বিতর্কের সূত্রপাত গত ২৭ ডিসেম্বর। সে দিন চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, উত্তর-পশ্চিম চিনে দু’টি নতুন কাউন্টি তৈরি হয়েছে— হেয়ান এবং হেকাং। শিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর স্বশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন এই দু’টি নতুন কাউন্টি গড়ার কথা ঘোষণা করে। চিনা কমিউনিস্ট পার্টি এবং স্টেট কাউন্সিলও এই দু’টি নতুন কাউন্টি অনুমোদন দিয়েছে বলে দাবি করা হয় সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যমে। এই দু’টি কাউন্টি পরিচালনা করা হবে হোতান শহর থেকে। সাউথ ব্লকের একটি সূত্র জানাচ্ছে চিনের দাবি করা এই দু’টি কাউন্টির মধ্যে পড়ছে লাদাখের কিছু অংশও।
আরও পড়ুন:
চিনের নতুন মানচিত্রের কথা জানার পরেই সেই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়ে বেজিংকে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। লোকসভায় বিদেশ প্রতিমন্ত্রী সে কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘আমরা ইতিমধ্যেই চিনের সরকারের কাছে কূটনৈতিক পর্যায়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি।’’ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে এলএসি পেরিয়ে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছিল চিনা ফৌজের বিরুদ্ধে। উত্তেজনার আবহে ওই বছরের ১৫ জুন গালওয়ানে চিনা হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা।
কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে দীর্ঘ আলোচনার পরে গত বছরের ২১ অক্টোবর পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) টহলদারির বিষয়ে দু’দেশ একমত হয়েছে বলে দাবি করেছে সাউথ ব্লক। গত ২৫ অক্টোবর থেকে পূর্ব লাদাখের এলএসির বিভিন্ন জায়গায় ‘মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছোনো’ (ডিসএনগেজমেন্ট) এবং ‘সেনা সংখ্যা কমানো’ (ডিএসক্যালেশন)-র কাজ শুরু করে দু’দেশ। নভেম্বরে তা শেষ হয়েছে বলে দু’পক্ষের তরফেই জানানো হয়েছিল। কিন্তু তার দু’মাস পরেই নতুন চিনা কাউন্টি গড়ার ঘোষণার জেরে এলএসিতে অশান্তির আঁচ লেগেছে।