রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সই না-করে ঝুলিয়ে রাখার বিতর্কে পঞ্জাব এবং তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ শুক্রবার বলেছে, ‘‘অনুগ্রহ করে যথাযথ ভাবে নির্বাচিত আইনসভায় পাশ করা বিলের গতিপথকে এড়িয়ে যাবেন না। এটা খুবই গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।’’
পঞ্জাবে আম আদমি পার্টি (আপ)-র মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল তথা প্রাক্তন বিজেপি নেতা বানোয়ারীলাল পুরোহিতের সংঘাত তীব্র। রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে নালিশ করে, বিধানসভায় পাশ হওয়া বেশ কয়েকটি বিল সিদ্ধান্ত না নিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছেন। শুক্রবার পঞ্জাবের রাজ্যপালের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপনি আগুন নিয়ে খেলছেন। এক জন রাজ্যপাল কী ভাবে এমন করতে পারেন? পঞ্জাবে যা হচ্ছে তাতে আমরা খুশি নই। আমরা কি সংসদীয় গণতন্ত্র বজায় রাখব?’’
আরও পড়ুন:
গত ৭ নভেম্বর মামলাটি ওঠার পরে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানিয়েছিলেন, একই অভিযোগে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কেরল এবং তামিলনাড়ুর সরকারও। সেখানেও রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চরমে উঠেছে। সরকারের পাশ করা বিল ঝুলিয়ে রেখেছেন রাজ্যপালেরা। বস্তুত মামলার প্রথম শুনানির দিনই প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যপালদের সামান্য একটু আত্মানুসন্ধান করা জরুরি। তাঁদের মনে রাখতে হবে, রাজ্যপাল নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। বিধানসভা কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তাকে গুরুত্ব দেওয়াটা জরুরি।’’
আরও পড়ুন:
রাজ্যপালদের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছিলেন, মানের সরকার মোট ২৭টি বিল বিধানসভায় পাশ করিয়েছে। তার মধ্যে ২২টিতে রাজ্যপাল বানোয়ারীলাল ছাড়পত্র দিলেও পাঁচটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখেছেন। শুক্রবার সওয়াল-পর্বে মান সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, ‘‘ওই সাতটি বিল গত জুলাই এবং তার আরও আগে রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখনও তিনি কোনও সিদ্ধান্ত নেননি।’’
আরও পড়ুন:
তামিলনাড়ুতেও রাজ্যপাল আরএস রবির সঙ্গে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে নেতা স্ট্যালিনের সংঘাত তীব্র হয়েছে। রাজ্যপাল একাধিক বিলে সই না করায় প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবসে চেন্নাইয়ের রাজভবনে আয়োজিত চা চক্রের অনুষ্ঠান বয়কট করেছিলেন স্ট্যালিন এবং তাঁর মন্ত্রীরা।
আরও পড়ুন:
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেরলের বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও গত কয়েক বছরে একাধিক বার রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সই না করে ফেলে রাখার অভিযোগ তুলেছেন। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার শীর্ষ আদালতের মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে বিজেপি বিরোধী নেতাদের একাংশ মনে করছেন।