Advertisement
E-Paper

জাতভিত্তিক সংরক্ষণ ৫০ থেকে বেড়ে ৬৫ শতাংশ হবে, সর্বসম্মতিতে বিল পাশ বিহার বিধানসভায়

নীতীশ কুমার সরকারের বিলে বিহারে অনগ্রসর (ওবিসি) এবং অতি অনগ্রসরদের (ইবিসি) জন্য সংরক্ষণ ২৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৩ শতাংশ করা হয়েছে। তফসিলি জাতির (এসসি) সংরক্ষণ ২০ শতাংশ করার প্রস্তাবও রয়েছে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০৩
Share
Save

বিহারে সরকারি চাকরি এবং শিক্ষাক্ষেত্রে সংরক্ষণ বৃদ্ধির প্রস্তাব সংক্রান্ত বিল পাশ হল সে রাজ্যের বিধানসভায়। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকারের বিলটি বৃহস্পতিবার পেশের পরে সর্বসম্মত ভাবে পাশ হয়ে যায়। ওই বিলে জাতভিত্তিক সংরক্ষণ ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৬৫ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়াদের জন্য ১০ শতাংশ পৃথক সংরক্ষণের কথাও বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার বিহার বিধানসভায় জাতসমীক্ষার দ্বিতীয় রিপোর্ট পেশের পরেই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে সংরক্ষণ বাড়ানোর বিল পেশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ বিধানসভার অধিবেশনে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বলেন, ‘‘পিছিয়ে পড়াদের অধিকার দিতে আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর।’’

নীতীশ সরকারের বিলে বিহারে অনগ্রসর (ওবিসি) এবং অতি অনগ্রসরদের (ইবিসি) জন্য সংরক্ষণ ২৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৩ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি, তফসিলি জাতির (এসসি) সংরক্ষণ ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারি প্রতিষ্ঠানে তফসিলি জনজাতিভুক্তদের জন্য সাত শতাংশ সংরক্ষণ থাকলেও তা দুই শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখতে চায় বিহারের জেডিইউ-আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের জোট সরকার।

ওবিসি এবং ইবিসি-দের জন্য ২৭ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকলেও বিহারের জনসংখ্যায় তাঁদের হার বেশি। আসল সংখ্যা প্রকাশ্যে এলে ওবিসি কোটায় আরও সংরক্ষণের দাবি উঠবে বলে আগেই মনে করা হয়েছিল। কার্যক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে গত ২ অক্টোবর জাতসমীক্ষার প্রথম রিপোর্ট প্রকাশের পরে। এর ফলে তথাকথিত উচ্চবর্ণ বা জেনারেল ক্যাটেগরি (অসংরক্ষিত)-র উপর আঁচ আসবে বলে জাতসমীক্ষার বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁদের দাবি, এই ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতির ফলে বঞ্চিত হবে ‘মেধা’। বস্তুত, ভোট-রাজনীতির ছক মেনেই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের প্রচারে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ‘জিতনি আবাদি, উতনা হক’ (যে জনগোষ্ঠীর যত সংখ্যা, সংরক্ষণে তার তত অধিকার) স্লোগান দিয়েছেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।

সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্র পাওয়ার পরে মঙ্গলবার বিহার বিধানসভায় জাতসমীক্ষার দ্বিতীয় রিপোর্ট প্রকাশ করে নীতীশ সরকার। সেই রিপোর্টে বিহারের বাসিন্দাদের জাতভিত্তিক আর্থিক অবস্থার তুলনামূলক পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সে রাজ্যের ৩৩ শতাংশ অনগ্রসর (ওবিসি) এবং অতি অনগ্রসরের (ইবিসি) অর্থনৈতিক অবস্থান দারিদ্রসীমার নীচে। অন্য দিকে, তফসিলি জাতির (এসসি) মধ্যে গরিব ৪২ শতাংশেরও বেশি।

ওই রিপোর্টে বিহারের তথাকথিত উচ্চবর্ণ অর্থাৎ অসংরক্ষিত (জেনারেল) শ্রেণির আর্থিক হালও উঠে এসেছে। জানানো হয়েছে, দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী ‘জেনারেল কাস্ট’-এর মানুষের সংখ্যা প্রায় ২৬ শতাংশ। চার জনের পরিবারের মাসিক আয় ৬,০০০ টাকার কম হলে সেই পরিবারকে ‘দরিদ্র’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। গত ২ অক্টোবর জাতভিত্তিক সমীক্ষা সংক্রান্ত প্রথম রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল বিহার সরকার। এর পরে সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী রিপোর্ট প্রকাশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন জানানো হলেও গত ৬ অক্টোবর শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে দিয়েছিল।

বস্তুত, ২০২২ সালের নভেম্বরে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট সিলমোহর দেওয়ার পরেই দেশ জুড়ে জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি তুলেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ। বিহারে ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার দ্রুত শুরু করে জাতগণনা। গত ৬ জুন নীতীশ সরকার জাতগণনার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। এর পর বিহার সরকারের সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল পটনা হাই কোর্টে।

বিহারে জাতগণনার প্রথম পর্ব ৭ থেকে ২১ জানুয়ারি হয়েছিল। ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্ব ১৫ মে পর্যন্ত চলার কথা ছিল৷ কিন্তু তার আগেই গত ৪ মে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল পটনা হাই কোর্ট। কিন্তু গত ১ অগস্ট জাতসমীক্ষার বিরুদ্ধে পটনা হাই কোর্টে যে জনস্বার্থ মামলাগুলি দায়ের হয়েছিল, তা খারিজ করে দেয় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন এবং বিচারপতি পার্থসারথির বেঞ্চ। এর পরেই শুরু হয় জাতগণনার দ্বিতীয় পর্ব। গত ২ অক্টোবর তার প্রথম দফার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল।

সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, বিহারে ওবিসি জনগোষ্ঠী মোট ৬৩ শতাংশ। তার মধ্যে ৩৬ শতাংশ অতি অনগ্রসর (ইবিসি) এবং ২৭ শতাংশের সামান্য বেশি সাধারণ অনগ্রসর গোষ্ঠীর। এ ছাড়া বিহারে প্রায় সাড়ে ১৯ শতাংশ তফসিলি জাতি এবং ১.৬৮ শতাংশ তফসিলি জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ রয়েছেন বলে ওই রিপোর্ট জানাচ্ছে। অসংরক্ষিত (জেনারেল) শ্রেণির বাসিন্দা সাড়ে ১৫ শতাংশের সামান্য বেশি। লোকসভা ভোটে বিষয়টি বিহারের মহাগঠবন্ধনের প্রচারের অন্যতম বিষয় হয়ে উঠতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা।

quota Reservation OBC OBC Reservation Dalit Quota Bihar Nitish Kumar bihar cm

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।