Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

অবিশ্বাস আর আতঙ্কে কমছে বৃদ্ধি: মনমোহন

জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। মনমোহন আজ জানিয়েছেন, এই বৃদ্ধির হার মেনে নেওয়া যায় না।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৮
Share: Save:

গভীর অবিশ্বাস, ছড়িয়ে পড়া আতঙ্ক ও হতাশার বোধ—সমাজে এই তিনের ‘বিষাক্ত মিশ্রণ’ আর্থিক কর্মকাণ্ডের গতি রোধ করছে এবং তার ফলে বৃদ্ধির হারও কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।

জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। মনমোহন আজ জানিয়েছেন, এই বৃদ্ধির হার মেনে নেওয়া যায় না। কারণ, নাগরিকেরা চান, বৃদ্ধির হার ৮ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে থাকবে। অর্থনীতির অবস্থা ‘গভীর চিন্তার বিষয়’ বলে মন্তব্য করে আজ তাঁর যুক্তি, সমাজের অবস্থা আরও বেশি উদ্বেগের এবং সেটাই অর্থনীতির বেহাল দশার মূল কারণ। তাঁর মতে, ‘‘সমাজকে আতঙ্ক থেকে আস্থার দিকে নিয়ে যেতে হবে, যাতে অর্থনীতি ৮ শতাংশ হারে বাড়তে পারে।’’

এই আতঙ্ক কীসের? আজ দিল্লিতে অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে এক সম্মেলনে মনমোহনের যুক্তি, শিল্পপতিরা তাঁকে সরকারের হাতে হেনস্থার ভয়ের কথা জানিয়েছেন। ব্যাঙ্ক-কর্তাদের মধ্যে শাস্তির ভয়ে ঋণ দিতে ভয়, উদ্যোগপতিদের নতুন লগ্নি ব্যর্থ হলে কুমতলবের অভিযোগ ওঠার ভয়, স্টার্ট-আপ সংস্থাগুলির নজরদারি আর সন্দেহের ভয়, সরকারের নীতিনির্ধারকদের সত্য বলার ভয় তৈরি হয়েছে। বিচারব্যবস্থা, সংবাদমাধ্যম, নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা, তদন্ত সংস্থার উপরে মানুষের আস্থা কমেছে। সমাজের এই ছবিই প্রতিফলিত হচ্ছে অর্থনীতিতে।

আরও পড়ুন: নাগরিকত্বের জল মাপতে উত্তর-পূর্বকে ডেকে বৈঠকে শাহ

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন দু’দিন আগেই সংসদে বলেছিলেন, বৃদ্ধির হার কমলেও মন্দা দেখা দেয়নি। মনমোহন-জমানার সঙ্গে নানা মাপকাঠিতে তুলনা করে তিনি দেখিয়েছিলেন, অর্থনীতির হাল ভালই। মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ‘চূড়ান্ত বিরক্তিকর’ আখ্যা দিয়েছেন বাজপেয়ী সরকারের অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। জিডিপি মাপার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘এখনও সরকার অর্থনীতির বেহাল দশা অস্বীকার করছে। রোগ না মানলে সমস্যার সমাধানও করা যাবে না।’’

এই সমালোচনার মুখেও প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্র আজ দাবি করেছেন, সরকার ২০২৪-এর মধ্যে অর্থনীতির বহরকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। অর্থনীতির ঝিমুনি কাটাতেও পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির লক্ষ্য উচ্চাকাঙ্ক্ষী হলেও ঠিক পথেই এগোচ্ছি।’’

কিন্তু যশবন্তের যুক্তি, সরকারের রাজকোষের হাল খুবই খারাপ। একের পর এক সংস্থা নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে ব্যবসা গোটাচ্ছে। সরকার নিজেই বলছে, এয়ার ইন্ডিয়া বেচতে না পারলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে হাজার হাজার কর্মী চাকরি হারাবেন। মনমোহনের মন্তব্য, ভারতের অর্থনীতি এত ছোট নয় যে ইচ্ছেমতো দিশা ঘোরানো যায়। রঙচঙে হেডলাইন দিয়ে, সংবাদমাধ্যমে নানা বিবৃতি দিয়ে তা ঢাকা যায় না। অর্থনীতির খারাপ খবর দিলেই মুখ বন্ধ করে দেওয়া বা সরকারি পরিসংখ্যান ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া বালখিল্যপনা। তা বিশ্ব অর্থনীতিতে উদীয়মান আর্থিক শক্তিকে মানায় না।

অন্য বিষয়গুলি:

Manmohan Singh GDP Economy Economic Growth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy