মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। ছবি: সংগৃহীত।
মাদকচক্রের পাণ্ডা, মণিপুরের চান্ডেল জেলার স্বশাসিত পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান এল ঝৌকে গ্রেফতার করে গত বছর দেশের ১৭ জন সেরা পুলিশ অফিসারের এক জন হিসেবে পুরস্কৃত হন মণিপুরের মাদক-বিরোধী শাখার প্রথম মহিলা এএসপি বৃন্দা থৌনাওজাম। সাহসিকতার জন্য খোদ মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহের হাত থেকেও নিয়েছিলেন পুরস্কার। কিন্তু সেই মুখ্যমন্ত্রীই পরে মাদকচক্রের পাণ্ডাকে মুক্ত করার জন্য তাঁর উপরে চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ আনলেন বৃন্দা।
ঝৌকে জামিন দেওয়ায় এনডিপিএস আদালতের বিচারককে অশ্লীল কথা বলা ও অশোভন ইঙ্গিত করার অভিযোগে বৃন্দার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে হাইকোর্টে। সেই মামলায় মণিপুর হাইকোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় বৃন্দা বিশদে লিখেছেন, কতটা হতাশা থেকে তিনি এমনটা করেছেন। তাঁর মতে, মুখ্যমন্ত্রীর চাপের সামনেও অনড় থাকাটাই তাঁর আসল সাহসিকতা।
মণিপুর রাজপরিবারের পুত্রবধূ বৃন্দার অভিযোগ, ২০১৮ সালে অভিযান চলার সময়ই ফোন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু প্রায় পাঁচ কেজি হেরোইন, লাখ তিনেক মাদক ট্যাবলেটসহ হাতেনাতে ধরা পড়ায় ঝৌয়ের গ্রেফতারি আটকাতে পারেননি বীরেন। পরে বৃন্দাকে বলা হয়, ঝৌ বীরেনের স্ত্রী ওলিসের ডান হাত। ঝৌকে ছাড়তেই হবে। সেই থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হুমকি, চাপ শুরু হয়।
বৃন্দা হলফনামায় ডিজিপিকেও কাঠগড়ায় তুলে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর চাপে ডিজিপি ঝৌয়ের নামে থাকা চার্জশিট আদালতে পাঠাতে মানা করেছিলেন। বৃন্দা তা করেননি।গত বছর ডিজিপির নির্দেশে চার্জশিট থেকে ঝৌয়ের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হলেও তা হতে দেননি বৃন্দা। হলফনামায় বৃন্দার দাবি, মুখ্যমন্ত্রী নিজের বাংলোয় ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে বলেন, “তোমায় কি এই জন্যে সাহসিকতার পুরস্কার দিয়েছি?”
শেষ পর্যন্ত গত মে মাসে ঝৌকে জামিন দেওয়ায় ফেসবুকে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন বৃন্দা। অশালীন ইঙ্গিতও করেন। সেই প্রসঙ্গে বৃন্দা বলেন, ন্যায়ের পথে না-চলে চেয়ারের অসম্মান করেন বিচারক। তাই তাঁর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, চেয়ারের প্রতি নয়।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড লিগ্যাল স্টাডিজের প্রাক্তনী বৃন্দা হতাশ হয়ে বলেন, “সরকার, পুলিশ, বিচার ব্যবস্থা আমার মতো এক জন তুচ্ছ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত। কারণ আমি জনস্বার্থের হয়ে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছি।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য জানার চেষ্টা হলেও বীরেন মুখ খোলেননি। মণিপুর পুলিশ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, বৃন্দার উল্লেখ করা মামলায় অভিযুক্তদের ধরতে ও শাস্তি দিতে আইনানুযায়ী যথাসাধ্য করেছে পুলিশ। বৃন্দার আনা অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy