চতুর্থ দিনেও শান্তি ফিরল না মণিপুরের চুরাচান্দপুর জেলায়। বৃহস্পতিবারও দিনভর অশান্তি বহাল রইল জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। বন্ধ রইল দোকানপাট, স্কুল-কলেজও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাত থেকে চুরাচান্দপুরে মার ও জ়োমি জনজাতির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ছোড়া হয় পাথর, ভাঙচুর চালানো হয় বহু যানবাহনেও। কোথাও কোথাও গোলাগুলিও চলে। এ সবের মাঝেই জ়োমিদের গুলিতে লালরোপুই পাখোয়াঙটে (৫১) নামে এক মার প্রৌঢ় নিহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। পাশাপাশি, ওই ঘটনায় দুই গোষ্ঠী মিলিয়ে বেশ কয়েক জন আহতও হন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এর প্রতিবাদে বুধবার নতুন করে বন্ধ ডাকেন মারেরা। বন্ধ সফল করতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় উত্তেজনা। বন্ধ করে দেওয়া হয় স্কুল-কলেজ। শেষমেশ বন্ধ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মাথায় জনগণের কাছে শান্তিরক্ষার আবেদন জানান বিধায়কেরা। একটি যৌথ বিবৃতিতে শান্তির আহ্বান জানায় চুরাচান্দপুর জেলার কুকি, জ়োমি এবং মার জনজাতির অন্তত ১২টি সংগঠন। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি যৌথ শান্তি কমিটিও গড়া হয়।
আরও পড়ুন:
অন্য দিকে, বুধবার রাতে জেলায় অশান্তি রোধ করতে পতাকা নিয়ে মিছিল করেছেন নিরাপত্তাকর্মীরাও। উল্লেখ্য, চুরাচান্দপুর মূলত জ়োমি সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। তবে কিছু এলাকায় মার এবং কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। তাই মার ও জ়োমিদের সংঘর্ষের আবহে জেলার বিভিন্ন ত্রাণশিবিরে থাকা কুকি সম্প্রদায়ের বেশ কয়েক জন বাস্তুচ্যুত মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মারদের এক নেতার উপর হামলাকে কেন্দ্র করে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই অশান্তি শুরু হয় চুরাচান্দপুরে। গত রবিবার রাতে জেনহাঙে মারদের সংগঠন ‘মার ইনপুই’-এর সাধারণ সম্পাদক রিচার্ড মারের উপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। সেই হামলার পর থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মারেরা। গোটা জেলায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সোমবার সকাল থেকে জেলা জুড়ে জারি হয় ১৬৩ ধারা।