স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে ভাঙন এবং বিবাহবিচ্ছেদের জটিলতার আশঙ্কাতেই আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী মানব শর্মা। একটি সাক্ষাৎকারে শনিবার এমনটাই দাবি করলেন তাঁর বোন আকাঙ্ক্ষা শর্মা। তাঁর দাবি, বিবাহবিচ্ছেদের পথ বেছে নিলে তা নিয়ে মানবকে ভুগতে হবে, এমনটাই বলেছিলেন তাঁর স্ত্রী নিকিতা। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরেই এমন পদক্ষেপ।
আকাঙ্ক্ষা তাঁর সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, গত বছর জানুয়ারিতে বিয়ে করেছিলেন মানব এবং নিকিতা। তবে বিয়ের পর থেকেই তাঁদের সম্পর্কে নানা সমস্যা লেগে থাকত। আকাঙ্ক্ষার দাবি, এ বছর জানুয়ারিতে মানব জানতে পারেন, নিকিতা অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। এর পরেই দু’জনে বিবাহবিচ্ছেদের পথ বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি বিবাহবিচ্ছেদের আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল দম্পতির।
তবে এ সবের মাঝে নিকিতা এক দিন মানবকে হুমকি দিয়ে বলেন, বিবাহবিচ্ছেদের আইন মেয়েদের পক্ষেই যায়। তাই, যদি মানব তাঁকে ডিভোর্স দেন, তা হলে আগামী দিনে মানব ও তাঁর মা-বাবাকে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হবে। এর পর থেকই প্রচণ্ড মানসিক চাপে ছিলেন মানব। এক দিন প্রিয়া নামে এক মহিলা মানবকে এ-ও জানিয়েছিলেন, নিকিতা ও তাঁর দুই বোন বিবাহিত পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে তাঁদের ‘জীবন ধ্বংস’ করেন। এই কথাও ওই যুবকের মনে ভীষণ রকমের চাপ ফেলেছিল। ২৪ ফেব্রুয়ারি আগরায় আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার কথা হলেও সে দিনই উদ্ধার হয় যুবকের ঝুলন্ত দেহ।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার বছর ছত্রিশের মানবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হওয়া এবং সম্প্রতি তাঁর শেষ বার্তার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে চর্চা চলছে নানা মহলে। ভিডিয়োটিতে মানবকে বলতে শোনা গিয়েছে, স্ত্রীর অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছেন তিনি। সঙ্গে রয়েছে বিবাহবিচ্ছেদের জটিল প্রক্রিয়াও। এই সব কিছু নিয়েই তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত বলে দাবি করে মানব ভিডিয়োয় কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আত্মহত্যাই তাঁর একমাত্র পথ। প্রশাসনকে পুরুষদের দিকে ‘নজর দিতে’ও আর্জি জানিয়েছেন তিনি। মানবের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পাল্টা একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেন তাঁর স্ত্রী নিকিতাও। সেখানে তাঁর দাবি, মানব মদ-মাদকে আসক্ত ছিলেন। প্রায়ই তাঁকে মারধর করতেন। যদিও এই প্রসঙ্গে মানবের বোনের দাবি, যে মানব আঁকা, গিটার নিয়েই ব্যস্ত থাকতে ভালবাসতেন, তাঁর পক্ষে কি কখনও স্ত্রীর উপরে এমন অত্যাচার করা সম্ভব?
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)