ফেরা: স্বজনদের মাঝখানে সুনীল দাস।—নিজস্ব চিত্র।
খোঁজ নেই ২৮ বছর ধরে। সন্তানেরা তাই বাবার শ্রাদ্ধ করার জন্য দিন ঠিক করে ফেলেছিলেন। এমন সময় তাঁরা খবর পেলেন নিখোঁজ বাবাকে দেখা গিয়েছে রাজ্যের অন্য জেলায়!
ত্রিপুরার সিপাহিজলা জেলার সোনামুড়া মহকুমার নিদয়াতে পরিবার নিয়ে থাকতেন সুনীল দাস। ১৯৯১ সালে এক প্রতিবেশীর সাথে ঝগড়া বাধে। তখন তাঁকে টর্চ দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল বলে জানান বড় ছেলে গোপাল। সুনীলবাবুকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ও পরে আগরতলা জিবি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। চিকিৎসায় সুস্থ হলে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু মাঝপথে গাড়ি থেকে নেমে উধাও হয়ে যান তিনি। স্ত্রী খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ফিরে আসেন বাড়িতে। স্থানীয় থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করা হয়। কিন্তু খোঁজ মেলেনি সুনীলবাবুর।
সংসার চলত সুনীলবাবুর দিনমজুরির টাকায়। ফলে পাঁচ সন্তানকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েন স্ত্রী। তবু একা হাতে সংসার আগলে সকলকে বড় করেছেন তিনি। গত বছর মারা গিয়েছেন সুনীলবাবুর স্ত্রী। বড় ছেলে গোপাল দাস বললেন, ‘‘পুলিশ কোনও খোঁজ দিতে পারেনি। বাবাকে আমরা বাংলাদেশে গিয়েও খুজেছি।
আরও পড়ুন: বালিগঞ্জে বিয়ের ১৪ বছরে ধর্ষণের অভিযোগে রহস্যের গন্ধ
পুলিশের তরফেও কিছু জানানো হয়নি। আগামী ১৭ই মাঘ মায়ের বাৎসরিক শ্রাদ্ধ করার কথা রয়েছে। তাই সব ভাই বোন মিলে পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করা হয়েছিল একই সঙ্গে বাবারও শ্রাদ্ধ করে নেওয়া হবে।’’
এই সময়ে ধলাই জেলার কমলপুর মহকুমার বাসিন্দা রঞ্জিত মালাকার নিদয়াতে এসেছিলেন তাঁর এক আত্মীয়ের বাড়িতে। বিষয়টি শুনে ও ছবি দেখে তিনি জানান, এমনই এক জন কমলপুরে মোটরস্ট্যান্ডে থাকেন। পরিবারের লোকজন গিয়ে দেখেন তিনি সত্যিই সুনীল দাস। শারীরিক ও মানসিক ভাবে অসুস্থ। এ বার আর তাঁকে হারিয়ে যেতে দেননি গোপালরা। বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। ২৮ বছর পর বাবাকে পেয়ে অপার আনন্দে ছেলেমেয়েরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy