গ্রাফিক— সনৎ সিংহ।
ক্রমে আরও উত্তপ্ত মহারাষ্ট্র তথা মুম্বই। বলিউডের শহরে যেন অভিনীত হচ্ছে হাই ভোল্টেজ পঞ্চাঙ্ক নাটক। যে নাটকের চিত্রনাট্য লেখা হচ্ছে সুদূর পূর্ব প্রান্তের অঙ্গরাজ্য অসমের বিলাসবহুল হোটেলে। আর রঙ্গমঞ্চে মুহুর্মুহু আকাশকাঁপানো ‘জয় মহারাষ্ট্র’ স্লোগানে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বইয়ে রবিবারের ছুটির প্রহর কাটছে রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায়। রাজনীতির এমন উত্তুঙ্গ দড়ি টানাটানি শেষ কবে প্রত্যক্ষ করেছেন মুম্বইকররা?
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুয়াহাটির হোটেল থেকে নজর ছিটকে সরে আসছে মুম্বইয়ের মাতোশ্রীতে। আপাতদৃষ্টিতে সংখ্যা নিজের দিকে না থাকলেও, পাল্টা ভাঙনের হুমকি দিয়ে নাটকে উত্তেজনার পারদ আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছেন বালাসাহেব-পুত্র উদ্ধব। তাঁর দাবি, গুয়াহাটির হোটেলে আশ্রয় নেওয়া অন্তত ২০ জন ‘বিদ্রোহী’ বিধায়কের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, শিন্ডে শিবিরের উপর চাপ আরও বাড়াতে তাঁদের কয়েক জনের প্রশাসনিক পদ কেড়ে নেওয়া হতে পারে বলেও শোনা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্র সরকারের প্রবীণ মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে, গুলাবরাও পাটিল, দাদা ভুসে মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন। আব্দুল সাত্তার ও শম্ভুরাজে দেশাইয়ের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। কিন্তু এত করেও কি শেষরক্ষা হবে? পাটিগণিতের হিসেবে তাকে এখনও কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও শোনা যাচ্ছে, বিদ্রোহীদের মধ্যে বিজেপিতে মিশে যাওয়ার প্রস্তাব নিয়ে দ্বিমত আছে। অনেক বিধায়কই বিজেপির সঙ্গে মিশে যেতে চান না। এই মতবিরোধের ফায়দা তুলতে পারবে উদ্ধব শিবির? প্রশ্ন এখন সেটাই।
এ দিকে অসমের হোটেলের বর্তমান আবাসিক ১৫ জন বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়কের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা আরও বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা হয়েছে। তা নিয়ে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারকে এক হাত নিয়েছেন উদ্ধবপুত্র আদিত্য। সান্তাক্রুজের দলীয় সমাবেশে বিদ্রোহী বিধায়কদের দেশদ্রোহী তকমা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দেশদ্রোহীদের সিআরপিএফ নিরাপত্তা না বাড়িয়ে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দিকে নজর দিন।’’ পাশাপাশি তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘যাঁরা পালিয়ে গিয়ে ভাবলেন বেঁচে গেলেন, তাঁদের মনে করিয়ে দিতে চাই, মুম্বইতেই ফিরতে হবে। এবং বিমানবন্দর থেকে বিধান ভবনে যাওয়ার রাস্তাটা কিন্তু ওরলি হয়েই যায়।’’ শিবসেনার সাংসদ সঞ্জয় রাউত হিন্দিতে টুইট করেছেন, ‘গুয়াহাটিতে আর কত দিন লুকিয়ে থাকবে, চৌপথিতে তো আসতেই হবে!’
कब तक छीपोगे गोहातीमे..
— Sanjay Raut (@rautsanjay61) June 26, 2022
आना हि पडेगा.. चौपाटीमे.. pic.twitter.com/tu4HcBySSO
এ মত পরিস্থিতিতে মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রে আইনশৃঙ্খলা নিয়েও প্রশাসনের মাথাব্যথা বাড়ছে। গত প্রায় দু’দিন ধরে বিক্ষিপ্ত ভাবে বিদ্রোহী বিধায়কদের অফিস ও বাড়িতে শিবসৈনিকদের গোলমালের পর রবিবার থেকে পুলিশি নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখতে চাইছে না মুম্বই পুলিশ। এ দিকে পরিস্থিতি আঁচ করে একনাথ শিন্ডে শিবিরের বিধায়কদের জন্য যথাযথ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে বলে মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার ও ডিজিপিকে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল ভগত সিংহ কোশিয়ারি। রবিবারও শহরের বিভিন্ন জায়গায় একনাথের কুশপুত্তলিকা জ্বালিয়ে, পোস্টারে কালি লেপে প্রতিবাদ চলেছে। বেরিয়েছে বিশাল বিশাল বাইক মিছিল।
পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না চলে যায়, সে জন্য এক সঙ্গে পাঁচ জনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ হয়েছে মুম্বইয়ে। নিরাপত্তার কড়া চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে রাজ্যের সমস্ত মন্ত্রীর বাসভবন এবং দলীয় দফতর।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy