শরদ পওয়ার (বাঁ দিকে) সনিয়া গাঁধী এবং উদ্ধব ঠাকরে। —ফাইল চিত্র
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শরদ পওয়ারের বৈঠকের পরেই তৎপর হল কংগ্রেস। বিজেপির সঙ্গে জোটে যেতে পারে এনসিপি, এই জল্পনা শুরু হতেই শিবসেনার সঙ্গে সমঝোতায় সুবজ সঙ্কেত দিলেন সনিয়া গাঁধী। ফলে মহারাষ্ট্রে শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোটের সরকার গঠন প্রায় চূড়ান্ত। বুধবার দিল্লিতে এনসিপি এবং শিবসেনা নেতাদের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বের আলাদা বৈঠকের পরে তিন দলের একাধিক সূত্রে তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে। এমনকি, শিবসেনা-এনসিপি আড়াই বছর করে মুখ্যমন্ত্রীর ফর্মুলায় সরকার হবে বলেও একটি প্রাথমিক রূপরেখা ভাসছে রাজনৈতিক মহলে।
শিবসেনা, এনসিপি কংগ্রেস— তিন দলের মধ্যে স্বল্প সময়ে বোঝাপড়া না হওয়ায় মহারাষ্ট্রে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে ৬ মাসের জন্য। তবে সরকার গঠনের রাস্তা খুলে রাখা হয়েছে। ফলে কখনও শিবসেনা, কখনও বা কংগ্রেস-এনসিপি নেতৃত্ব প্রায় প্রতি দিনই বৈঠক করেছেন এবং সরকার গঠনের ফর্মুলা বার করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কিছুতেই সমাধান সূত্র বেরোচ্ছিল না। এর মধ্যেই বুধবার শরদ পওয়ারের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জল্পনা শুরু হয়, বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন পওয়ার। আর তার পরেই সক্রিয় হয় কংগ্রেস।
আগে থেকেই বুধবার এনসিপির সঙ্গে কংগ্রেসের বৈঠক নির্ধারিত ছিল। কিন্তু পওয়ার-মোদীর বৈঠক এবং তার পরে জল্পনা ছড়ানোয় এ দিন সেই বৈঠক অন্য মাত্রা পায়। শরদ পওয়ারের বাড়িতে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বৈঠকে বসেন এনসিপি নেতাদের নিয়ে। সেখানেই কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়, আদর্শগত ভাবে প্রায় পুরোপুরি ভিন্নধর্মী দল হলেও শিবসেনার সঙ্গে জোট করতে ‘সদর্থক’ বার্তা দিয়েছেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সনিয়া গাঁধী। এর পরেই বল গড়ায়। আলাদা করে শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউতের সঙ্গে বৈঠক করেন কংগ্রেসের অন্য শীর্ষ নেতারাও। আর এই দুই বৈঠকের পরেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, তিন দলের জোটের সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত।
কিন্তু ফর্মুলা কী হবে? তিন দলের বিভিন্ন সূত্রে খবর, সেই আড়াই বছর পালাবদল করে মুখ্যমন্ত্রীর ফর্মুলাতেই রফা হয়েছে। প্রথম আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রিত্ব পাবে শিবসেনা। সেই দায়িত্ব পালন করবেন উদ্ধব ঠাকরে। বাকি আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রী থাকবে এনসিপি-র। তবে এনসিপির তরফে কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন, সেটা এখনও ঠিক হয়নি। দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রী থাকবেন মন্ত্রিসভায়। তার একটি পাবে কংগ্রেস। অন্যটি আড়াই বছর করে শিবসেনা এবং এনসিপির। এ ছাড়া তিন দলের মধ্যে মতবিরোধ মেটানো এবং যৌথ সিদ্ধান্তের জন্য একটি কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠন করা হবে।
কিন্তু আদর্শগত ভাবে সম্পূর্ণ বিপরীত উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল শিবসেনার সঙ্গে সনিয়া গাঁধী সরকার গঠনে রাজি হলেন কেন? সূত্রের খবর, প্রথমত বিজেপি বর্জিত সরকার গঠনের জন্য শিবসেনার সঙ্গে সরকারে যেতে রাজি হয়েছেন সনিয়া। দ্বিতীয়ত, শিবসেনাকে প্রস্তাব দেওয়া হবে, উগ্র হিন্দুত্ববাদের অবস্থান অনেকটা নরম করতে।
এই জোড়া বৈঠকের আগে এ দিন অবশ্য সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সঞ্জয় রাউত। তিনি বলেন, ‘‘১০-১৫ দিনের মধ্যে সব সঙ্কট কেটে যাবে। আগামিকালের মধ্যেই আপনারা সব জানতে পারবেন।’’ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই শিবসেনার নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রে সরকার দেখতে পাবেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন সঞ্জয়। তার পরে মোদী-পওয়ার এবং দু’দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কংগ্রেসের বৈঠকের পর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোটের সরকার গঠন কার্যত নিশ্চিত মহারাষ্ট্রে।
আরও পড়ুন: সারা দেশে এনআরসি হবে, ঘোষণা অমিতের, বাংলায় হতে দেব না, পাল্টা মমতার
আরও পডু়ন: কালো পতাকা, ‘গো ব্যাক’ স্লোগান, ডোমকলে ঢুকতেই বিক্ষোভ রাজ্যপালের কনভয় ঘিরে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy