কেন্দ্র সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প’-এর নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠল মধ্যপ্রদেশের এক চিকিৎসক দম্পতির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আড়ালে ব্যবসা ফেঁদে বসেছিলেন তাঁরা। হাসপাতালে নয়, একটি হোটেলের ঘরে রাখা হচ্ছিল ‘ভুয়ো’ রোগীদের। তাঁদের উপসর্গের সঙ্গে চিকিৎসা পদ্ধতির কোনও সামঞ্জস্যই ছিল না বলে দাবি অভিযোগকারীদের।
‘আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প’-এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভাবে পিছিয়ে পড়া নাগরিকরা চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে থাকেন। বছরে পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা এই প্রকল্পে পাওয়া যায়। অভিযোগ, মধ্যপ্রদেশের ওই চিকিৎসক দম্পতি কিছু মানুষকে রোগী সাজিয়ে নামমাত্র পরিষেবার পরিবর্তে সরকারের কাছে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করছিলেন। এ ভাবেই চলছিল ব্যবসা।
অভিযুক্তরা হলেন, অশ্বিনী পাঠক এবং দুহিতা পাঠক। জবলপুরের সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া কিডনি হাসপাতালের মালিক তাঁরা। অভিযোগ, তাঁরা হাসপাতালের পাশেই একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া হোটেলে অন্তত ৭০ জন ‘রোগী’কে রেখেছিলেন। তাঁদের প্রত্যেকেরই ‘আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্যবিমা’-র কার্ড রয়েছে। হাসপাতালের নথিতে তাঁদের যে রোগের উল্লেখ রয়েছে, তার সঙ্গে শারীরিক উপসর্গের কোনও মিল নেই বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই চিকিৎসক দম্পতির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা রুজু করা হয়েছে। অশ্বিনী পাঠককে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
জবলপুরের মুখ্য পুলিশ আধিকারিক সিদ্ধার্থ বহুগুণা জানিয়েছেন, ভেগা হোটেলে কয়েক জন ‘আয়ুষ্মান ভারত স্বাস্থ্যবিমা’-র গ্রাহক ভর্তি রয়েছেন বলে পুলিশের কাছে খবর এসেছিল। তাঁদের কারও অসুস্থতাই গুরুতর নয় বলে জানা গিয়েছে। এই খবর পাওয়ার পরেই হোটেলটিতে হানা দেয় পুলিশ। ৭০ জন ‘রোগী’কে সেখানে দেখে তাঁরা। কয়েক জনকে একই বেডে রাখা হয়েছিল বলেও দাবি পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, রোগীরা সকলেই ভুয়ো এবং অন্য জেলার বাসিন্দা। হোটেলটি অভিযুক্ত চিকিৎসক দম্পতির ছেলের মালিকানাধীন। কোভিড অতিমারির পর থেকেই হোটেলটি বন্ধ ছিল। আপাতত সেটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ।
Around 70 Ayushman Bharat scheme beneficiaries being treated not in a hospital but in a non-operational hotel without proper facilities in Jabalpur. In many rooms, two patients were being treated on one bed. The hotel cum hospital was sealed on Sunday @ndtv @ndtvindia pic.twitter.com/uvJ1pP4eQ8
— Anurag Dwary (@Anurag_Dwary) August 29, 2022
অভিযুক্ত অশ্বিনী পাঠক অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, জেলা হাসপাতালের অনুমতি নিয়েই ওই বন্ধ হোটেলে ১০০ বেডের চিকিৎসা পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রোগীদের কাছ থেকে এক পয়সাও নেওয়া হচ্ছে না। সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক। তিনি বলেছেন, ‘‘ওই হাসপাতালে ভুয়ো রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছিল। হোটেল সিল করলেও সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য আমরা সেখানে চলতে থাকা অন্যান্য চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিষেবাগুলি বন্ধ হতে দিইনি।’’