প্রতীকী ছবি।
আনাজের দাম আগুন তো ছিলই। গৃহস্থের হেঁশেলে সেই আগুনের আঁচ আরও তীব্র হল রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম এক লাফে বেশ অনেকটাই বেড়ে যাওয়ায়।
মাত্র দু’দিন আগে তেল সংস্থাগুলি জানিয়েছিল, ১৯ কেজির বাণিজ্যিক সিলিন্ডারের দাম ডিসেম্বরে বাড়লেও অপরিবর্তিত থাকছে ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দাম। কিন্তু বুধবার থেকে ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দামও বাড়ল। কলকাতায় তা বাড়ল ৫০ টাকা। সিলিন্ডারের নতুন দাম হল ৬৭০.৫০ টাকা। মঙ্গলবার মাঝরাতে তেল সংস্থাগুলি ডিস্ট্রিবিউটরদের এই বার্তা পাঠায়। প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ এত দ্রুত সিদ্ধান্ত বদল কেন এবং সেই বার্তা দিতে মাঝরাত পর্যন্ত কেন দেরি হল? বিহার ও কাশ্মীরের ভোটের সঙ্গে এর কোনও যোগ রয়েছে কি না, চর্চা চলছে তা নিয়েও। আবার অন্য দিকে পেট্রল-ডিজ়েলের দর ফের ঊর্ধ্বমুখী। সব মিলিয়ে করোনা সঙ্কটের মধ্যেই বছরের শেষটায় আমজনতার দুর্ভোগের পারদ চড়ছে।
প্রচলিত নিয়ম হল, কেন্দ্রের অনুমোদন সাপেক্ষে মাসের শেষ দিনেই তেল সংস্থাগুলি ডিস্ট্রিবিউটরদের জানিয়ে দেয়, পরের মাসে রান্নার গ্যাসের দাম কোথায় কত হবে। এ বারেও সেই অনুযায়ী সোমবার জানানো হয়, মঙ্গলবার থেকে গোটা ডিসেম্বর ১৯ কেজির সিলিন্ডারের দাম ৫৫.৫০ টাকা বাড়ছে। কিন্তু একই থাকছে ১৪ কেজির সিলিন্ডারের দর। আচমকাই মঙ্গলবার মাঝরাতে ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে ই-মেল পাঠিয়ে জানানো হয়, বুধবার থেকে সেটির দামও বাড়ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, শীতে এলপিজি-র চাহিদা বাড়ায় বিশ্ব বাজারে রান্নার গ্যাসের দামও চড়ছে বেশ কিছু দিন ধরেই। আগে ভারতেও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব উঠলেও তা করা হয়নি। কারও কারও মতে, বিহার ও কাশ্মীরের ভোটের সময়ে দাম বাড়লে বিরূপ প্রভাব পড়ার শঙ্কায় তাতে সায় দেয়নি কেন্দ্র। এ বারেও সেই প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিতে কিছুটা দেরি হওয়ার জন্যই এক দিন পরে তা বাড়ল। তবে দাম বাড়লেও প্রয়োজনের চেয়ে তা কম বেড়েছে বলে বিভিন্ন তেল সংস্থা সূত্রের দাবি।
কেন্দ্র বা তেল সংস্থা যা-ই যুক্তি দিক না কেন, বেহাল আর্থিক দশার মধ্যে গ্রাহক তার দুর্ভোগ বৃদ্ধি নিয়েই চিন্তিত। কারণ বছর দেড়েক ধরে ভর্তুকিযোগ্য ১৪.২ কেজির সিলিন্ডারের দাম ধাপে ধাপে কেন্দ্র এতটাই বাড়িয়েছে যে, অধিকাংশ জায়গায় আর ভর্তুকি
মিলছেই না। যেখানে মিলছে, সেখানেও তা নগণ্যই। খোদ তেল মন্ত্রকের তথ্যই জানিয়েছে, গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় এ বছরের জুলাইয়ে ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের দাম ৪৯৪.৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫৯৪ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোয় সরকারের প্রায় ২২ হাজার কোটি সাশ্রয় হবে। গত অর্থবর্ষে রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ছিল ২২,৬৩৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম তিন মাসে মাত্র ১,৯০৫ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে।
লকডাউনের পরে মোদী সরকার আট কোটি গরিব পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় বিনামূল্যে সিলিন্ডারের ঘোষণা করেছিল। কিন্তু এখন প্রায় ১৮ কোটি পরিবার রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি থেকে বঞ্চিত। সরকার ভর্তুকি বাড়িয়ে কেন সাধারণ মানুষের জন্য সুরাহার বন্দোবস্ত করছে না, সে প্রশ্ন বার বার তুলেছিলেন বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy