বিহারের সমস্তীপুরে মহাজোটের সভায় রাহুল গাঁধী। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা ভোটের প্রচারে অবশেষে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে একই মঞ্চে এলেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য জনতাকে আর্জিও জানালেন। আজ বিহারের সমস্তীপুরে মহাজোটের সভায় রাহুল-তেজস্বী ছাড়াও জোটের অন্য দুই শরিক নেতা উপেন্দ্র কুশওয়াহা এবং মুকেশ সহানিও হাজির ছিলেন।
তিন দফা ভোট হয়ে যাওয়ার পরে মহাজোটের নেতাদের এই প্রথম এক মঞ্চে দেখা গেল। আর সেই মঞ্চ থেকে লালুপ্রসাদ-পুত্র বললেন, ‘‘দয়া করে রাহুলজিকে প্রধানমন্ত্রী করুন। শুধু এই জন্য নয় যে, তিনি গরিবদের কথা বলেন। গরিবদের সঙ্গে দেখা করতেও রাহুলজির কোনও সমস্যা নেই। তিনি আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মতো নন— যিনি প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার রিসেপশনে যান, কিন্তু গরিবের বাড়িতে যাওয়ার সময় পান না।’’
বিহারের সভায় রাহুল তাঁর ‘ন্যূনতম আয় যোজনা’ বা ‘ন্যায়’-কেই হাতিয়ার করেন। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘‘দেশের গরিবির বিরুদ্ধে এই ‘ন্যায়’-ও সার্জিকাল স্ট্রাইক। বেতনভোগী শ্রেণির অনেকে ভাবছেন, এই প্রকল্পের টাকা তাঁদের পকেট থেকে যাবে। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, আপনাদের পকেট থেকে একটি বাড়তি পয়সাও যাবে না। চৌকিদারের সাহায্যে যে টাকা কতিপয় ব্যক্তি লুট করছে, তা বন্ধ করেই ন্যায় যোজনার টাকা তোলা হবে।’’ ন্যায় প্রকল্প অর্থনৈতিক দিক থেকে অসম্ভব বলে ইতিমধ্যেই বিজেপি ও তাদের ঘনিষ্ঠ মহল দাবি করছে। রাহুল এ দিন আবার বলেন, ‘‘এই প্রকল্প সম্ভব। এটি জনমোহিনী প্রকল্প নয়, এর ভিত্তিই অর্থনীতি।’’ ‘ন্যায়’ প্রকল্পের জন্য রাহুলকে ধন্যবাদ দিয়ে তেজস্বী বলেন, ‘‘এতে বিহারের অনেকে উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রীর কথায়-কাজে ফারাক আছে। কিন্তু রাহুলজি বলা আর করার মাঝখানে সময় নষ্ট করেন না। তিন রাজ্যে (ক্ষমতায় এসেই) কৃষিঋণ মকুব করেছে কংগ্রেস।’’ আজ ওড়িশার বালেশ্বরের সভায় রাহুল বলেন, ক্ষমতায় এলে আলাদা ‘কৃষক বাজেট’ চালু করবেন তিনি। ঋণ শোধে ব্যর্থ চাষিদের জেলে যাওয়া আটকাতেও নতুন আইন আনবেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিহারের সভায় আজ হঠাৎই এক যুবকের উদ্দেশে রাহুল প্রশ্ন ছোড়েন, ‘‘কী নাম?’’ জবাব আসে, ‘‘রাহুল’’। সমনামীকে দেখে দৃশ্যতই খুশি রাহল তাঁকে মঞ্চে ডেকে নেন। মঞ্চের নেতাদের সঙ্গে সেই রাহুলের আলাপ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘মোদী জমানায় হাজার হাজার মানুষ কর্মচ্যুত হচ্ছেন। ২২ লক্ষ পদ খালি পড়ে রয়েছে। আমি সেই চাকরি রাহুলদের দিতে চাই।’’ মহারাষ্ট্রের সভাতেও কৃষি, বেকারত্ব থেকে জিএসটি নিয়ে মোদীকে আক্রমণ করেছেন রাহুল।
বেশ কিছু দিন ধরেই তেজস্বীর প্রচারের ধরন নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। রাহুলের মঞ্চে কেন তিনি থাকছেন না, তা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়। বিহারে ইতিমধ্যে চার বার প্রচারে এসেছেন রাহুল। কিন্তু হাজির হবেন বলেও তেজস্বী শেষ মুহূর্তে অনুপস্থিত থেকেছেন। অসুস্থ বলে গয়ায় রাহুলের সভার দিন বাড়িতেই কাটান তিনি। পূর্ণিয়ায় কংগ্রেস সভাপতির সভাতেও দেখা যায়নি বিহারের বিরোধী দলনেতাকে। এ দিনের সভার পরে আপাতত জল্পনার অবসান হল বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
আজ রাহুল বলেছেন, ‘‘তেজস্বীকে লালুজির সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। লালুজি ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে যে অন্যায় হচ্ছে, বিহারের মানুষ তার জবাব দেবেই।’’ তেজস্বীও কংগ্রেসের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে টেনে এনেছেন ইন্দিরা গাঁধীর প্রসঙ্গ। বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জিতেছিলেন ইন্দিরাজি। দেশভক্তি আমরা তাঁর কাছ থেকেই শিখব। অন্য কারও কাছে নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy