শ্রী রাম ও তাঁর পরিবার।
লকডাউনের জেরে কাজ হারিয়েছিলেন। তামিলনাড়ু থেকে উত্তরপ্রদেশে নিজের বাড়িতে ফিরতে হয় বাধ্য হয়েই। কিন্তু সেখানেও উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত স্ত্রী-র গয়না বিক্রি করেই জীবনধারণ করতে বাধ্য হচ্ছিলেন উত্তরপ্রদেশের কনৌজের ফতেপুর যশোদার বাসিন্দা শ্রীরাম। খবর চাউর হতেই নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন। শ্রীরামকে কাজ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সরকারি আধিকারিকরা।
লখনউ থেকে প্রায় ১৫০ কিমি দূরে ফতেপুর যশোদা গ্রামে আদি বাড়ি শ্রীরামের। ৩০ বছর আগে, বিয়ের পর তিনি চলে গিয়েছিলেন তামিলনাড়ু। সেখানে কুলফি বিক্রি করতেন। কিন্তু লকডাউনের জেরে তাঁর ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় উপার্জনও। বাড়ি ভাড়া দিতে না পারায় শ্রীরাম ও তাঁর পরিবারকে তাড়িয়ে দেন বাড়িওয়ালা। এমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেই গত ১৯ মে তামিলনাড়ু থেকে সপরিবারে সউত্তরপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। ফিরে আসেন নিজের বাড়িতে। কিন্তু বিধি বাম সেখানেও। বাধ্য হয়েই শেষ সম্বল স্ত্রী-র গয়না মাত্র দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন শ্রীরাম। সেই টাকাতেই দু’বেলা খাওয়া জুটছিল তাঁদের।
শ্রীরামের দারিদ্রের এই ছবি উঠে এসেছিল স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে। এর পরই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। তাঁর পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন সরকারি আধিকারিকরা। গ্রামে না থাকার কারণে রেশন কার্ড বা জব কার্ড ছিল না শ্রীরামের। দ্রুত তাঁর হাতে ওই নথি তুলে দেয় প্রশাসন। তাঁকে একশো দিনের প্রকল্পের আওতায় কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে।
ফতেপুর যশোদা গ্রামে শ্রীরামের বাড়ি।
আরও পড়ুন: আমার বিশ্বাস, কলকাতা আবার দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
এমন বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে আচমকাই আশার আলো। ফেলে আসা সেই দিনগুলি নিয়ে শ্রীরামের মেয়ে রাজকুমারী বলছেন, ‘‘আমরা যখন তামিলনাড়ু থেকে ফিরলাম, তখন সরকার থেকে আমাদের ১০ কেজি চাল ও অন্যান্য শস্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমাদের পরিবার বড়। তাই ওই খাবার তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমার মা ও বোন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। আমার বাবা কাজের চেষ্টা করেছিল, কিন্তু দু’দিনের মধ্যে কাজ চলে যায়।’’ রাজকুমারী আরও বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত গয়না বিক্রি করা ছাড়া আমাদের কাছে আরও কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। তা বিক্রি করে আমরা কয়েক দিনের খাবার ও ওষুধ কিনতে পেরেছিলাম। আমরা রেশন কার্ডের জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু বলা হয় যে, এখনই নতুন করে তা তৈরি করা সম্ভব নয়।’’
আরও পড়ুন: ভ্যাপসা গরম থেকে রেহাই দিয়ে চলবে বৃষ্টি, ৪৮ ঘণ্টায় বঙ্গে বর্ষার ঢোকার সম্ভাবনা
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি উঠে আসার পর তা প্রশাসনের নজরে আসে। ব্যবস্থা নেন কনৌজের জেলাশাসক। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (বিডিও) এবং সাপ্লাই ইন্সপেক্টরকে নির্দেশ দেন তিনি। জেলাশাসক রাকেশ মিশ্র বলছেন, ‘‘এখন ওই পরিবারটির আরও কোনও সমস্যা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy