Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

লক-আউট উঠল চা বাগানে

কালীনগর চা বাগানের সমস্যা না-মিটলেও ভুবনভ্যালি বাগানে লক-আউট উঠছে। মঙ্গলবার থেকে বাগান খোলার ব্যাপারে সহমতে পৌঁছেছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ। ১৪ এপ্রিল থেকে কাছাড় জেলার ভুবনভ্যালি বাগানে লক আউট চলছে। সময়ের আগে কাজ ছেড়ে চলে আসায় ফিল্ড ম্যানেজার পাঁচ শ্রমিককে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে শতাধিক শ্রমিক তাঁকে মারধর করে কারখানায় বেঁধে রাখেন। মহকুমা পুলিশ অফিসার অঞ্জন পণ্ডিত গিয়ে উদ্ধার করেন তাঁকে। সে থেকেই বাগান বন্ধ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলচর শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০৭
Share: Save:

কালীনগর চা বাগানের সমস্যা না-মিটলেও ভুবনভ্যালি বাগানে লক-আউট উঠছে। মঙ্গলবার থেকে বাগান খোলার ব্যাপারে সহমতে পৌঁছেছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।

১৪ এপ্রিল থেকে কাছাড় জেলার ভুবনভ্যালি বাগানে লক আউট চলছে। সময়ের আগে কাজ ছেড়ে চলে আসায় ফিল্ড ম্যানেজার পাঁচ শ্রমিককে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে শতাধিক শ্রমিক তাঁকে মারধর করে কারখানায় বেঁধে রাখেন। মহকুমা পুলিশ অফিসার অঞ্জন পণ্ডিত গিয়ে উদ্ধার করেন তাঁকে। সে থেকেই বাগান বন্ধ।

বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়ন এ ব্যাপারে শ্রম বিভাগের হস্তক্ষেপ দাবি করে। সহকারী শ্রম কমিশনার দীপেন শর্মা আজ সবাইকে নিয়ে বৈঠক বসেন। মালিক পক্ষে নেতৃত্ব দেন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সুরমা ভ্যালি শাখার সচিব কল্যাণ মিত্র। অন্য দিকে, শ্রমিকদের পক্ষে ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক দীননাথ বারুই, সনাতন মিশ্র, পঙ্কজ ধর প্রতিনিধিত্ব করেন। কল্যাণবাবুরা বাগানের যে অংশে মারধরের ঘটনা ঘটেছে, সেটি বন্ধই রাখতে চেয়েছিলেন। শ্রমিক নেতারা মানেননি। শেষে পুরো বাগান খোলারই সিদ্ধান্ত হয়। উভয়পক্ষ বাগানে শান্তি বজায় রাখার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দেয়।

কালীনগর চা বাগান নিয়ে শ্রম দফতর শ্রমিক-মালিক উভয়কে নিয়ে গত কাল বৈঠকে বসেছিল। কিন্তু দু’পক্ষই নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকায় শেষ পর্যন্ত বৈঠক ভেস্তে যায়। সহকারী শ্রম কমিশনার দীপেন শর্মা দু’দিনের সময় দিয়ে আগামী কাল তাঁদের ফের আলোচনায় ডেকেছেন।

বাগানের ম্যানেজার অমলেন্দু দাশগুপ্তের বাংলোর সীমায় ঢুকে পড়েছিল এক শ্রমিকের গরু। তিনি ওই শ্রমিককে ডেকে পাঠান। অভিযোগ, তাঁর গাড়িচালক ওই শ্রমিককে মারধর করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকরা ম্যানেজারের বাংলোয় চড়াও হন। পালিয়ে প্রাণ বাঁচান তিনি। ১৩ এপ্রিলের ওই ঘটনার পরই মালিকপক্ষ বাগানে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

বরাক চা শ্রমিক ইউনিয়ন এ নিয়ে শ্রম দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরই জেরে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। মালিকপক্ষের নেতৃত্ব দেন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সুরমা ভ্যালি শাখার সচিব কল্যাণ মিত্র। ছিলেন অমলেন্দুবাবুও। অন্য পক্ষে ছিলেন শ্রমিক ইউনিয়নের সহকারী সম্পাদক দীননাথ বারুই, সনাতন মিশ্র, পঙ্কজ ধর।

ওই সভায় মালিকপক্ষ চারটি শর্ত দিয়েছিল। আলোচনায় ঠিক হয়, উভয়পক্ষই সে দিনের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করবে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা হবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেবে। দ্বিতীয়ত, বাগানের উন্নতির জন্য বাগান পঞ্চায়েতের সহমতের ভিত্তিতে মালিকপক্ষের যা ইচ্ছে তাই করার অধিকার থাকবে। কিন্তু শেষ দু’টি শর্তে শ্রমিকরা বেঁকে বসেন। মালিকপক্ষের দাবি ছিল, দোষী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবং বাংলোর যে ক্ষতি হয়েছে, সে জন্য শ্রমিকদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে। ইউনিয়ন নেতারা তা মানতে চাননি। তাঁরা লক আউটের দরুন শ্রমিকদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করে দেওয়ার দাবি তোলেন। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণেরও বিরোধী তাঁরা। কেউ কারও অবস্থান থেকে নড়তে রাজি না হওয়ায় সহকারী শ্রম কমিশনার শনিবার ফের বৈঠক ডাকেন। কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘শৃঙ্খলা না-থাকলে বাগান চালানো যাবে না। তাই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।’’ অন্য দিকে দীননাথবাবু বলেন, ‘‘শ্রমিকরা মার খাবেন, কিছু বলতে পারবেন না, এ কেমন কথা! কথায়-কথায় লক আউট। শ্রমিকদের এই কয়েক দিনের লোকসান পুষিয়ে দিতেই হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy