এখনও অবরুদ্ধ উপত্যকা। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ ছ’মাসের বেশি সময় ধরে গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন উপত্যকা। এ বার তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তারা জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে এখনও পর্যন্ত ইতিবাচক পদক্ষেপই করেছে ভারত সরকার। তবে এ বার বাদবাকি নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া উচিত।
গত বছর ৫ অগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকে উপত্যকার পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে ইইউ। সম্প্রতি দ্বিতীয় বারের জন্য উপত্যকা থেকে ঘুরে গিয়েছে তাদের প্রতিনিধি দল। তার পরেই শুক্রবার এমন মন্তব্য করল ইউ।
শুক্রবার ইউয়ের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘‘বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা যে সেখানে যেতে পারছেন, এতেই বোঝা যায়, কাশ্মীরের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে ইতিবাচক পদক্ষেপ করেছে ভারত সরকার। কিন্তু এখনও সেখানে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।’’
আরও পড়ুন: নির্ভয়া শুনানি চলাকালীন সংজ্ঞা হারালেন বিচারপতি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের আন্তর্জাতিক ও নিরাপত্তা নীতি দফতরের মুখপাত্র ভার্জিনি বাট্টু হেনরিকসনের তরফে ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘‘উপত্যকার অধিকাংশ জায়গাতেই ইন্টারনেট এবং মোবাইল পরিষেবা নেই। এখনও বন্দি রয়েছেন একাধিক রাজনীতিক। এর সঙ্গে নিরাপত্তাজনিত বিষয়টি জড়িয়ে রয়েছে, তা আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু এ বার ধীরে ধীরে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াটাও জরুরি।’’
একটি সংস্থার উদ্যোগে গত বছর গত বছর অক্টোবর মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি দল প্রথম বার কাশ্মীরে আসেন। সফর শেষে দিল্লিতে মোদী ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকও করেন তাঁরা। চলতি সপ্তাহের বুধবার ফের এক বার বিদেশি প্রতিনিধিদের একটি দল শ্রীনগরে পা রাখে, যার মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা ছাড়াও শামিল ছিলেন জার্মানি, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, পোল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, মেক্সিকো, আফগানিস্তান, অস্ট্রিয়া এবং উজবেকিস্তান থেকে আসা প্রতিনিধিরাও।
এ নিয়ে নতুন করে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে মোদী সরকারকে। প্রশ্ন উঠেছে, নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে এক দিকে বিরোধীদের যখন সেখানে পা রাখতেই দেওয়া হচ্ছে না, সেখানে বিদেশি প্রতিনিধিদের জন্য বার বার উপত্যকার দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে কেন? এর পাশাপাশি, উপত্যকার তিন মুখ্যমন্ত্রীকে বন্দি করে রাখা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে মোদী সরকারকে।
আরও পড়ুন: আক্রান্ত ১৭০০ স্বাস্থ্যকর্মী, চিনে করোনা সঙ্কট আরও ভয়াবহ
এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই মন্তব্যে মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়তে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ওই মহলের দাবি, দিন দশেকের মাথায় ভারত সফরে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগে মার্কিন সেনেটরদের একাংশ ইতিমধ্যেই কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিদেশি সাংবাদিকদের কেন সেখানে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, দীর্ঘ সময় ধরে কেন রাজনীতিকদের বন্দি করে রাখা হয়েছে, কেন বহির্জগৎ থেকে উপত্যকাকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই রাস্তায় হাঁটায় কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy