—প্রতীকী ছবি।
ভোটের আগেই তারা আশাবাদী ছিল এ বার। ভোট-পর্ব মিটে যাওয়ার পরে সেই আশা আরও জোরালো হল বামেদের। পাঁচ বছর অন্তর সরকার বদলের চাকা থামিয়ে এ বার কেরলে ক্ষমতায় ফিরছে এলডিএফ, এমনই বলছে সিপিএমের দলীয় হিসেব। জেলা থেকে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে কেরল সিপিএমের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা বলছে, অন্তত ৮০টি আসন জিতে সরকার ধরে রাখতে পারবেন পিনারাই বিজয়ন।
মোট ১৪০ আসনের কেরল বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ন্যূনতম ৭১টি আসন। সে রাজ্যে ২০১১ সালে নামমাত্র ব্যবধানে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফের কাছে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা হারিয়েছিল বামেরা। তার পরে ২০১৬ সালে এলডিএফ সরকার গড়েছিল ৯১টি আসনে জিতে। এ বার ১৪টি জেলা থেকে ৮০-র কমে আসন বামেদের হবে না, এমনই বলা হয়েছে সিপিএমের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে। জেলা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি ওই রিপোর্ট দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে আনুষ্ঠানিক ভাবে আলোচনার পরে পাঠানো হবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও।
গত কয়েক বছরে কেরলে প্রধান দুই ফ্রন্ট এলডিএফ এবং ইউডিএফের মধ্যে শরিক অদল-বদল হয়েছে। জোস কে মানির নেতৃত্বাধীন কেরল কংগ্রেস এলডিএফে যোগ দেওয়ার পরে খ্রিস্টান অধ্যুষিত কোট্টয়ম জেলায় তাদের আসন-সংখ্যা বাড়বে বলে বামেদের দাবি। তাদের হিসেব বলছে, তিরুঅনন্তপুরম জেলায় ১০টি আসন তারা জিতবে। প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার পালে বাতাস হাল্কা করতে টানা দু’বার বা তার বেশি দিন বিধায়ক আছেন, এমন নেতা-নেত্রীদের এ বার প্রার্থী করেনি সিপিএম। পাঁচ মন্ত্রী-সহ সিপিএমের ২৩ জন বিধায়ক এই নিয়মে টিকিট পাননি। তার পরেও ভোট পরবর্তী দলীয় হিসেব বলছে, গত বারের জেতা বেশ কয়েকটি আসন এ বার তাদের হারাতে হতে পারে। কিন্তু অন্য জায়গা থেকে আরও কিছু আসনের জোরে সংখ্যাগরিষ্ঠতার রেখা তাঁরা পার করে যাবেন বলেই মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তাঁদের বিশ্লেষণ বলছে, শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশাধিকার ঘিরে যে ভাবাবেগ তৈরি করা হয়েছিল এবং লোকসভা ভোটে যার জেরে আসন হারাতে হয়েছিল বামেদের, এই বিধানসভা ভোটে সেই অঙ্ক আর কাজ করবে না।
বিধানসভা ভোটের সঙ্গেই অনুষ্ঠিত মলপ্পুরম লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে ব্যবধান কমিয়ে আনার আশা করলেও জয়ের স্বপ্ন অবশ্য দেখছে না সিপিএম। দু’বছর আগের নির্বাচনের মতো এ বার উপনির্বাচনেও ওই আসনে এলডিএফের প্রার্থী এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সভাপতি ভি পি সানু।
সিপিএমের পলিটবুরোর এক সদস্যের মতে, ‘‘সিবিআই, ইডি-সহ নানা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় সরকার কেরলের রাজ্য সরকারের গায়ে যে কলঙ্কের দাগ লাগাতে চেয়েছিল, সেই চক্রান্ত মানুষ ধরে ফেলেছেন বলেই আমরা মনে করি। বিজেপির ভোটপ্রাপ্তির হার এ বার বাড়তে পারে তবে আসন-সংখ্যার নিরিখে তারা কেরলে দাগ কাটতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।’’ তবে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ আগের চেয়ে বেশি আসনে ইউডিএফ-কে টপকে দ্বিতীয় স্থানে আসতে পারে বলে সিপিএম ধরে রাখছে। বামেদের প্রধান প্রতিপক্ষ ইউডিএফ-ও অবশ্য আশাবাদী যে, তারা ৭৬ থেকে ৮০টি আসন পেয়ে রাজ্যে আবার পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
বাংলা ও কেরলের বিধানসভা নির্বাচনের জন্যই ২৩তম পার্টি কংগ্রেস পিছিয়ে দিয়েছে সিপিএম। কেরলের দলীয় নেতৃত্ব প্রাথমিক আলোচনা সেরে রেখেছেন, বিজয়নের সরকার ক্ষমতায় ফিরলে আসন্ন পার্টি কংগ্রেস তাঁদের রাজ্যে আয়োজন করার চেষ্টা করবেন। এই বছরের শেষে বা ২০২২ সালের গোড়ার দিকে ওই পার্টি কংগ্রেস হবে। এর আগে ২০১২ সালে সিপিএমের ২১তম পার্টি কংগ্রেস হয়েছিল কেরলেরই কোঝিকোড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy