Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Landslide in Kerala

ওয়েনাড়ে এখনও পর্যন্ত মৃত ১০৬, ধ্বংসস্তূপে আটকে বহু, দুর্যোগের মধ্যেই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনা

রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় বহু এলাকায় পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। ভারী বৃষ্টির কারণে আকাশপথেও উদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে, মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের।

ধসে বিধ্বস্ত কেরলের ওয়েনাড়।

ধসে বিধ্বস্ত কেরলের ওয়েনাড়। ছবি: রয়টার্স

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৪ ১৭:২১
Share: Save:

কেরলের ওয়েনাড়ে মঙ্গলবার ভোরে ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১০৬ জনের। চার ঘণ্টায় পর পর তিন বার ধস নামে এই পাহাড়ি এলাকায়। তার জেরে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিস্তৃত এলাকা। সেখানে এখনও ধসে চাপা পড়ে রয়েছেন শতাধিক মানুষ। এ দিকে রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় বহু এলাকায় পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। ভারী বৃষ্টির কারণে আকাশপথেও উদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না। সে কারণে, মৃতের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এখনই ভারী বৃষ্টি থামছে না কেরলে। তাদের পূর্বাভাস, ১ অগস্ট, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির হতে পারে রাজ্যে। প্রশাসনের উদ্বেগ, এই ভারী বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হতে পারে উদ্ধারকাজ।

ওয়েনাড়ের মেপ্পাড়ির কাছে পাহাড়ি এলাকায় স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন-সহ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে উদ্ধারে নেমেছে সেনাবাহিনী। ভারতীয় সেনা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, ২২৫ জন জওয়ান উদ্ধারকাজে নেমেছেন। তিরুঅনন্তপুরমে ১৪০ জন জওয়ান প্রস্তুত রয়েছেন। প্রয়োজনে তাঁদের আকাশপথে ওয়েনাড়ে নিয়ে আসা হবে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছে, নৌসেনাবাহিনীও উদ্ধারকাজে নেমেছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ২৫০ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। আপাতত অস্থায়ী শিবিরে রয়েছেন তাঁরা। কেরলের মুন্ডাক্কাই, ছুরালমালা, আট্টামালা, নুলপুঝা এলাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু রাস্তা ধসে গিয়েছে। একটি সেতুও ভেঙে পড়েছে। সে কারণে, বহু জায়গায় এখনও পৌঁছতেই পারেনি উদ্ধারকারীরা। আবহাওয়া খারাপ থাকায় আকাশপথেও উদ্ধার সম্ভব হয়নি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা এএনআইকে বলেছেন, ‘‘দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হেলিকপ্টার আনা হয়েছে। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে তাতে চেপে উদ্ধারকাজ সম্ভব হচ্ছে না।’’ তিনি জানিয়েছেন, ৭০ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। ঘটনার বিভিন্ন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, সুদৃশ্য উপত্যকা, চা-বাগান ছারখার হয়ে গিয়েছে। একের পর এক গাছ উপড়ে কাদাজলে ভেসে চলেছে। খেলনার মতো ভেঙে পড়ছে বাড়ি। বোল্ডারে আটকে রয়েছে গাড়ি। কোনও কোনও রাস্তায় বোল্ডার পড়ে থাকায় গাড়িতে চেপে উদ্ধারকাজে যেতে পারছে না পুলিশ-প্রশাসন।

কেন এই বিপর্যয়? প্রশাসন বলছে, এই এলাকায় লাগাতার ভারী বৃষ্টির কারণেই এই ধস নেমেছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় কেরলে ৩৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। মৌসম ভবনের পরিসংখ্যান বলছে, কোনও জায়গায় প্রতি ঘণ্টায় ১৬ থেকে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ধরা হয়, সেখানে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় কেরলে ঘণ্টায় গড়ে ১৫.৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসন মনে করছে, এই কারণেই ভোরবেলায় ধস নেমেছে কেরলের ওয়েনাড় জেলার পাহাড়ি এলাকায়।

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বিজেপি কর্মীরা যাতে এই পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন, তা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাকে নিশ্চিত করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফে মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

বিজেপি সভাপতি নড্ডা জানিয়েছেন, আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে দেহ বার করে আনাই এখন লক্ষ্য সরকারের। নড্ডার কথায়, ‘‘কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সাহায্যও সেখানে পৌঁছে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেই কাজ চলছে। প্রাথমিক লক্ষ্য হল, দেহ উদ্ধার এবং যাঁরা জীবিত রয়েছেন, তাঁদের প্রাণরক্ষা।’’ কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, উদ্ধার এবং ত্রাণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Kerala Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy