আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ছবি: পিটিআই।
পটনায় যখন বিরোধীরা ঐক্যের বার্তা দিচ্ছেন তখন লালু প্রসাদ যাদবকে দেখা গেল এক অন্য ‘জোট’ নিয়ে চিন্তা করতে। যদিও এ জোটের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এই জোট জুটি বাঁধার। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে আরজেডি প্রধান পরামর্শ দিয়েছেন বিয়ে করার। শুধু তা-ই নয় গোটা দেশের বিরোধী নেতাদের সামনে বিয়ের জন্য রাহুলকে কিছুটা চাপ দিতেই দেখা গিয়েছে প্রবীণ নেতাকে। এমনকি, এ কথাও বলতে শোনা গিয়েছে যে, ‘‘দাড়িটা এ বার একটু ছেঁটেই ফেলুন।’’
শুক্রবার পটনায় বসেছিল দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির বৈঠক। সেই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে উপস্থিত ছিলেন কাশ্মীরের মেহবুবা মুফতি, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্তালিন-সহ এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়্গে, রাহুল গান্ধী, এমনকি, বাম নেতারাও। আর ছিলেন বিহারের জেডিইউ মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, আরজেডি নেতা তথা উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং আরজেডি প্রধান লালুও। বিরোধী নেতা নেত্রীদের মধ্যে বৈঠকের ফাঁকেই হঠাৎ রাহুলকে বিয়ের কথা বলতে শোনা যায় লালুকে।
মাস কয়েক আগেই শেষ হয়েছে রাহুলের ভারত জোড়ো যাত্রা। যা রাজনৈতিক ভাবে সফল বলেই মন্তব্য করেছেন রাজনীতির কারবারিরা। রাহুলকে তাঁর যাত্রার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে লালু বলেন, ‘‘গোটা দেশ জুড়ে এই যাত্রা করে খুব ভাল করেছেন। কিন্তু রহুলজি এ বার বিয়েটা করেই ফেলুন। এখনও বিয়ের বয়স খুব বেশি পেরোয়নি। আমার কথা শুনুন। বিয়েটা করে নিন।’’
রাহুল এখন ৫৩ এবং অকৃতদার। এই বয়সেও তাঁকে দেশের অন্যতম যোগ্য সুপাত্র বলেই মনে করা হয়। দেশের প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী রাজীব গান্ধীর পুত্র, দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পৌত্র আবার দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর প্রপৌত্র। যে কংগ্রেস দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে সেই পরিবারের শেষ প্রজন্ম তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই সুযোগ পেলেই তাঁর বিয়ের কথা ওঠে। ভারত জোরো যাত্রার সময়ও উঠেছিল। এই জানুয়ারিতেই বিয়ে নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছিলেন রাহুল। বলেছিলেন, যোগ্য মেয়ে পেলে নিশ্চয়ই বিয়ে করবেন। তবে যোগ্যতার কোনও মাপকাঠি ঠিক করেননি তিনি। শুধু এটুকুই বলতে পেরেছিলেন, ভালবাসা আর মেধা এ দুটিই তাঁর প্রাথমিক চাওয়া। বিয়ে প্রসঙ্গে এর পর আর কিছু বলতে শোনা যায়নি রাহুলকে। যদিও শুক্রবার তিনি বললেন।
প্রবীণ আরজেডি নেতা রাহুলকে বলছিলেন, “আপনার মা আমাকে বলেছিলেন, আপনি তাঁর কথা শোনেন না। বিয়ের জন্য উনি আমাকেই রাজি করাতে বলেছিলেন আপনাকে।” লালু বরাবরই কংগ্রেসের কাছের মানুষ। সেই ঘনিষ্ঠতার কথা রাহুলকে মনে করিয়ে দিয়ে কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীর কথা টেনে আনেন লালু। রাহুলকে কিছুটা স্নেহের সুরেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আপনি বিয়ে করলে আমরা বরযাত্রী হয়ে যাবো।” এর পরেই লালুর কথার জবাবে রাহুল বলেন, “আপনি যখন বলে দিয়েছেন, তখন বিয়েও হয়েই যাবে।”
যদিও রাহুলকে বিয়ের জন্য জোরাজুরি করা লালুর নিজের পুত্রের ঘর ভেঙেছে সম্প্রতি। আরজেডি প্রধানের জ্যেষ্ঠ পুত্র তেজ প্রতাপ যাদবের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দূর্গাপ্রসাদ রাইয়ের নাতনি এবং নীতিশের দলের নেতা চন্দ্রিকা রাইয়ের কন্যা ঐশ্বর্য রাইয়ের। ২০১৮ সালে সেই বিয়ের ছয় মাসের মাথায় বিচ্ছেদের আবেদন করেছিলেন ঐশ্বর্য। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের জুনে বিবাহ বিচ্ছিন্ন হন দু’জনে। অবশ্য লালুর নিজের ঘরে যাই হোক কংগ্রেস নেতার ঘর সংসার নিয়ে যে তিনি উদ্বিগ্ন সে কথা বিরোধী ঐক্যের বৈঠকের ফাঁকেও বুঝিয়ে দিয়েছেন লালু। এমনকি, রাহুলের হঠাৎ দাড়ি রাখা নিয়েও মতামত দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে।
শুক্রবার লালু যখন রাহুলের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকেও যোগ দিতে দেখা যায় সেই আড্ডায়। নীতীশ বলেন, “রাহুলজি তাঁর যাত্রার সময় দাড়ি রাখতে শুরু করেছেন দেখেছেন কি?” জবাবে লালু বলেন, “এ বার দড়িটা ছেঁটে ফেলুন। নীতীশজি ও চান আপনি হালকা দাড়ি রাখুন।” অবশ্য রাহুলকে দাড়ি নিয়ে উপদেশ দিতে গিয়ে আরও এক জনের দাড়ির প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন লালু। বিরোধী ঐক্যের বৈঠকের ফাঁকে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “দাড়িটা বড় করবেন না। আমি ঠিক বুঝতে পারি না নরেন্দ্র মোদীও কখনও নিজের দাড়ি কাটেন না কেন !”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy