কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। —ফাইল চিত্র।
ওয়েনাড়ে ভূমিধসকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানকার কোনও তথ্য বাইরে প্রকাশ করতে নিষেধ করে রাজ্যের বিভিন্ন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানে নির্দেশিকা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। বিতর্কের মাঝে সেই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করেছে কেরল সরকার।
কেরলের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তরফে ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। অভিযোগ, সেখানে রাজ্যের সমস্ত বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানকে ওয়েনাড় নিয়ে তথ্য প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়েছিল। ওয়েনাড়ে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেও বারণ করা হয়েছিল আধিকারিকদের। এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে রাজ্যের বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদদের একাংশ সরব হন। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সে সময়েই জানিয়েছিলেন, সরকারের নির্দেশিকার ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, তিনি মুখ্যসচিবকে নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ওয়েনাড়ের মেপ্পাডি পঞ্চায়েত এলাকায় যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই অংশই ভূমিধসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন নির্দেশিকা সম্বন্ধে বলেছিলেন, ‘‘নির্দেশিকার ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে। কেরল সরকারের গোপনীয়তার কোনও নীতি নেই। যে নোটিসের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে, তা তুলে নিতে বলেছি। এ বিষয়ে মুখ্যসচিবকে হস্তক্ষেপ করতে বলেছি আমি।’’
কী কারণে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটল, মূলত তা খতিয়ে দেখতেই বিজ্ঞানী এবং প্রযুক্তিবিদেরা অনেকে ওয়েনাড়ে যেতে ইচ্ছুক। সরকারি নির্দেশিকা পাওয়ায় তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। এই ধরনের নির্দেশিকার প্রতিবাদ জানান তাঁরা। তার পর শুক্রবার নির্দেশিকা তুলে নেওয়া হল।
গত মঙ্গলবার সকালে কেরলের ওয়েনাড়ে একাধিক ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। যাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে চূড়ালমালা, আত্তামালা, নুলপুঝা এবং মুন্ডাক্কাই গ্রাম। এখনও উদ্ধারকাজ চলছে। জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। ওয়েনাড়ে এখন চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে ধ্বংসস্তূপ। কাদামাটিতে এখনও বহু দেহ আটকে আছে বলে আশঙ্কা। মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে দেহ উদ্ধারের কাজ চলছে। মাটি সরতেই বেরিয়ে আসছে দেহ কিংবা দেহাংশ। জিপিএস ব্যবহার করে ড্রোনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করছেন উদ্ধারকারীরা।
কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ শুক্রবার জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ওয়েনাড়ে মৃতের সংখ্যা ৩০৮। তার মধ্যে ১৯৫টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও ১১৩টি দেহাংশ পেয়েছেন উদ্ধারকারীরা। সেগুলিরও ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। যদিও সরকারি খাতায় এখনও পর্যন্ত ১৯০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ১৯০, নিখোঁজ ২০০-র বেশি মানুষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy