ওয়েনাড়ে ভূমিধস পরবর্তী পরিস্থিতি। ছবি: পিটিআই।
ভূমিধসে ছারখার হয়ে গিয়েছে কেরলের ওয়েনাড়। একাধিক গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। গত তিন দিন ধরে সেখানে উদ্ধারকাজ চলছে। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন জানিয়ে দিলেন, ওয়েনাড়ের ধ্বংসস্তূপে আর কেউ জীবিত নেই। জীবিত অবস্থায় আরও কাউকে উদ্ধার করা বাকি নেই। এখন বাকি আছে কেবল দেহ উদ্ধার।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই অসমর্থিত সূত্র উল্লেখ করে জানিয়েছে, ওয়েনাড়ে মৃতের সংখ্যা ২৭৬। তবে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা অনেক কম। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ওয়েনাড়ের ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ১৭৭। তাঁদের মধ্যে ২৫ শিশু এবং ৭০ জন মহিলা রয়েছেন। এ ছাড়া অন্তত ২০০ জনের খোঁজ মিলছে না সরকারি খাতায়। বৃহস্পতিবার বিজয়ন বলেছেন, ‘‘মুণ্ডাক্কাই, চূড়ামালা এবং আট্টামালা গ্রামে এখন আর কেউ জীবিত অবস্থায় আটকে নেই। কেউ কোথাও একা পড়ে আছেন কি না, উদ্ধারকারীরা তা দেখছেন। এখন শুধু দেহ উদ্ধারের কাজ বাকি।’’ অর্থাৎ, মৃতের সংখ্যা যে আরও বাড়বে, মেনে নিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী।
পিটিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ওয়েনাড়ের বিপর্যয়ে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের অনেকের সম্পূর্ণ দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। উদ্ধার হয়েছে দেহাংশ। চালিয়ার নদী থেকে একের পর এক দেহাংশ উদ্ধার করা হচ্ছে। এখনও অবধি ৯২টি দেহাংশ উদ্ধারের খবর মিলেছে। দেহাংশগুলিও মৃতদেহের মতোই পাঠানো হচ্ছে ময়নাতদন্তের জন্য। পরিসংখ্যান বলছে, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত দেহাংশ এবং মৃতদেহ মিলিয়ে ২৫৬টি ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের পর ১৫৪ জনের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
ভূমিধসে ওয়েনাড়ে অন্তত ৩৫০টি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর। গত তিন দিন ধরে বার বার উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয়েছে। বিরূপ আবহাওয়াই উদ্ধারকাজে মূল প্রতিবন্ধক। কারণ এখনও বৃষ্টি চলছে ওয়েনাড় এবং সংলগ্ন এলাকায়। তা ছাড়া, ধ্বংসস্তূপের কাছে প্রতিকূল পরিস্থিতি পেরিয়ে ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে পৌঁছতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশে গত তিন দিন ধরে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানেরাও। ওয়েনাড়ে বর্তমানে ১৬০০-র বেশি উদ্ধারকারী কাজ করছেন।
বৃহস্পতিবার ওয়েনাড়ে গিয়েছিলেন প্রাক্তন সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী এবং তাঁর বোন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। তাঁরা দুর্ঘটনাগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছেন। সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন। রাহুল বলেছেন, ওয়েনাড়ের পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে তাঁর বাবার মৃত্যুর সময়ের অনুভূতির কথা মনে পড়ে গিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘বহু মানুষ নিজের পরিজন এবং ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। দেখে খুব কষ্ট হচ্ছে। আমরা সাহায্যের চেষ্টা করছি। যাঁরা জীবিত, তাঁরা যাতে বঞ্চিত না হন, সে দিকে নজর রাখছি। বাবা (রাজীব গান্ধী) যখন মারা গিয়েছিলেন, তখন যে কষ্ট পেয়েছিলাম, আজ সে রকম লাগছে। এখানকার বহু মানুষজন শুধু বাবাকে নয়, গোটা পরিবারকে হারিয়েছেন। তাঁদের শ্রদ্ধা জানাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy