সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত
কাশ্মীরে সেনার জিপে বেঁধে যুবককে ঘোরানোর ঘটনাকে সেনাপ্রধানের ক্লিনচিট দেওয়া নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ দানা বাঁধছে। তাকে প্রতিহত করতে পাল্টা আরও আক্রমণাত্মক হচ্ছে বিজেপি।
লোকসভা উপ-নির্বাচনের সময়ে শ্রীনগরে বিক্ষোভকারীদের পাথর ছোড়া বন্ধ করতে স্থানীয় যুবক ফারুক আহমেদ দারকে জিপে বেঁধে ঘোরান মেজর নিতিন লিতুল গগৈ। এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হলেও সম্প্রতি মেজর গগৈকে সম্মানিত করেছে সেনা। বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে ভোটকর্মী ও পুলিশকে বাঁচাতে মেজর গগৈ ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত। যে দেশের সেনাবাহিনীকে মানুষ ভয় পায় না সে দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলেও মন্তব্য করেন সেনাপ্রধান। তার পরেই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক
আরও বেড়েছে।
কাশ্মীর সামলাতে মোদী সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ বলে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মন্তব্য করেছেন সনিয়া গাঁধী। স্থানীয় মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে বিভাজনের রাজনীতির ফলে কাশ্মীর আরও অশান্ত হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এর মধ্যেই ফারুক আহমেদকে ‘মানব-বর্ম’ হিসেবে ব্যবহার করার তীব্র সমালোচনা করেছেন সিপিএম নেতা প্রকাশ কারাট। বিপিন রাওয়তের মন্তব্যেরও বিরোধিতা করেছেন তিনি। দলের মুখপত্রে কারাট লিখেছেন, ‘‘সেনার পেশাদারি মনোভাবের মান কমলো। সেনার ভাবমূর্তিতে আঘাত এটি, কাশ্মীরের মানুষকেও
দমানোর নামান্তর।’’
আরও পড়ুন: গো-রক্ষায় জাতীয় নিরাপত্তা আইন!
সমাজবিজ্ঞানী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগেই সেনাপ্রধানের মনোভাবের সমালোচনা করে তাঁর সঙ্গে জেনারেল ডায়ারের তুলনা করে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। তা নিয়েও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আজ পার্থবাবু জানান, তিনি তাঁর মতে অনড় রয়েছেন। কিন্তু চারদিকে এই সমালোচনার মোকাবিলা করতে আজ পাল্টা আক্রমণাত্মক মনোভাব নেয় বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডু বলেন, ‘‘এঁরা কাশ্মীরে হিংসায় পাকিস্তানের মদত দেখতে পান না। ভারতীয় সেনা দেশরক্ষার কাজ চমৎকার ভাবে করছে। আর এঁরা সেই সেনার খুঁত ধরে বেড়াচ্ছেন।’’ নায়ডুর মতে, ‘‘ভোটকর্মী ও পুলিশের প্রাণ বাঁচাতে মেজর গগৈ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ দলের মুখপাত্র সম্বিত পাত্র জানান, কোনও ভাবেই দেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে জেনারেল ডায়ারের তুলনা টানা চলে না। ডায়ার জালিওয়ানাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতীক। বামেরা বরাবরই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পক্ষে সওয়াল করে এসেছে। এই ধরনের মন্তব্যে সেনার মনোবলই ভাঙবে।
সরকারের তিন বছর উপলক্ষে ‘মোদী-উৎসব’-এর সময় কাশ্মীরের অশান্ত পরিস্থিতি নরেন্দ্র মোদীর গলার কাঁটা হয়ে রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনা অভিযানেই বেশি ভরসা রাখছে মোদী সরকার। কিন্তু কাশ্মীরের পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ার পিছনে যে আসলে মোদীই দায়ী, সে কথা ক’দিন আগেই বলেছেন রাহুল গাঁধী। আজ সনিয়াও বলেন, ‘‘ইউপিএ জমানায় কাশ্মীর তুলনামূলক ভাবে শান্তই ছিল। এখন সেখানে সংঘর্ষ, উত্তেজনা ও ভয়ের পরিবেশ।’’ বিরোধীদের এই সম্মিলিত আক্রমণের মুখেই এখন আরও আক্রমণাত্মক বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy