রমেশ জারকিহোলি এবং বি এস ইয়েদুরাপ্পা।
ছিল সহবাসের ভিডিয়ো টেপ। হয়ে গেল গোপন রাজনৈতিক তথ্যের উৎস। কারণ ভিডিয়োয় এক তরুণীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে কথাবার্তায় কর্নাটকের অধুনা প্রাক্তন মন্ত্রী ফাঁস করে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার ‘দুর্নীতিবাজ’ হওয়ার গোপন কথা। এমনকি আগামিদিনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, সেই তথ্যও। বুধবার ওই ভিডিয়ো নিয়েই দিনভর উত্তাল রইল কর্নাটকের রাজনীতি।
বুধবার সকাল পর্যন্ত অভিযোগের কেন্দ্রে ছিলেন কর্নাটকের প্রাক্তন মন্ত্রী রমেশ জারকিহোলিই। তাঁর বিরুদ্ধেই সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক তরুণীর সঙ্গে সহবাসের অভিযোগ ছিল। তবে বেলা বাড়তে যতই ভিডিয়োর রহস্য খুলতে শুরু করল ততই সামনে আসতে শুরু করল কর্নাটকের রাজনীতি সংক্রান্ত একের পর এক গোপন তথ্য। দেখা গেল ঘনিষ্ঠমুহূর্তে ওই তরুণীর কাছে তিনি ফাঁস করে ফেলেছেন কর্নাটকের রাজনীতির অনেক গোপন কথাই। মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা যে দুর্নীতিগ্রস্ত, তাঁর পূর্বসূরী কংগ্রেসের সিদ্দারামাইয়া যে ভাল মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এমনকী আগামী দিনে প্রহ্লাদ যোশী কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হবেন— সে কথাও দুর্বল মুহূর্তে তরুণীকে বলে ফেলেছেন তিনি। আর সেই সবকথাই রেকর্ড হয়েছে বিতর্কিত ভিডিয়োটেপে। ফলে সহবাসের ভিডিয়োটেপ পরিণত হয়েছে কর্নাটকের রাজনৈতিক তথ্যের গুপ্ত চাবিকাঠিতে। বুধবার এই ঘটনায় নীতিগত কারণ দেখিয়ে কর্নাটকের মন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন রমেশ। মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা তাঁর ইস্তফাপত্রটি গ্রহণও করেছেন।
কী শোনা গিয়েছে ওই ভিডিয়োটেপে?
তরুণীকে প্রশ্ন করতে শোনা যায় : বেলগাঁওয়ে মরাঠি আর কন্নড়ভাষী মানুষ নিজেদের মধ্যে সব সময় লড়াই ঝগড়া করে তাই না?
রমেশ : মারাঠিরা ভাল লোক। কন্নড় লোকজনেরই কাজ নেই। তাই ঝগড়া করে।
রমেশ (ফের বলেন) : সিদ্দারামাইয়াই মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভাল ছিলেন। ইয়েদুরাপ্পা বড্ড দুর্নীতিবাজ।
তরুণী: আপনি তো বার বার দিল্লি যান। আপনি কি এরপর মুখ্যমন্ত্রী হবেন?
রমেশ : আমি না, প্রহ্লাদ যোশী মুখ্যমন্ত্রী হবেন।
ভিডিয়োর এই সংলাপ সামনে আসতেই কর্নাটকের রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। কর্নাটকের প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ডিকে শিবকুমার দাবি করেছেন, ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে তাঁরই মন্ত্রিসভার প্রাক্তনমন্ত্রী দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন। এই অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে হবে ইয়েদুরাপ্পাকেই।
ইয়েদুরাপ্পার মন্ত্রিসভায় জল সম্পদ মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিলেন রমেশ। কর্নাটকের প্রভাবশালী রাজনীতিক তিনি। দু’বছর আগেই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। বুধবার দুপুরে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার কাছে যে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন রমেশ তাতে তিনি লিখেছেন, ‘যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা অসত্য। সত্য ঘটনার সঙ্গে এর কোনও সম্পর্কই নেই। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই বিষয়টি প্রমাণ হয়ে যাবে। তবে আপাতত নৈতিক কারণে আমি মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে চাই। আমার ইস্তফা গ্রহণ করুন’। রমেশের সহবাস-কাণ্ডে এমনিতেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিল বিজেপি। তার উপর ভিডিয়োয় ইয়েদুরাপ্পাকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে তাঁর মন্তব্যের পর রমেশের ইস্তফা গ্রহণ করতে এক মুহূর্ত দেরি করেননি মুখ্যমন্ত্রী।
মঙ্গলবার রমেশের ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ে নেট মাধ্যমে। বিতর্কিত ভিডিয়োটি সামনে এনেছিলেন সমাজকর্মী দীনেশ কালাহল্লি। তিনি জানিয়েছিলেন বিদ্যুৎ দফতরে চাকরি লোভ দেখিয়ে ওই তরুণীকে ফুঁসলিয়ে সহবাসে বাধ্য করেছিলেন রমেশ। পরে ওই তরুণীর পরিবার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy