অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সি এস কারনানকে বুধবার কলকাতায় আনা হয়। —নিজস্ব চিত্র।
খারিজ হয়ে গেল কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সি এস কারনানের অন্তবর্তীকালীন জামিনের আবেদন। সুপ্রিম কোর্টে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। সে আবেদন সর্বোচ্চ আদালত আজ খারিজ করে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ বিচারপতি কারনানকে ছ’মাসের জন্য জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল আগেই। সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতেই তিনি মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার হন। কারাদণ্ডের নির্দেশ বাতিল হবে না বলেও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি এস কে কলের অবসরকালীন বেঞ্চ আজ তা জানিয়ে দিয়েছে।
শীর্ষ আদালতকে অবমাননার দায়ে গত ৯ মে প্রাক্তন বিচারপতি সি এস কারনানকে ছ’মাসের কারাদণ্ড হয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের বেঞ্চ সেই সাজা ঘোষণা করেছিল। কোনও কর্মরত বিচারপতির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা বা কারাদণ্ডের নির্দেশ দেশে সেই প্রথম। তবে কারনানকে সে সময় গ্রেফতার করা যায়নি। সুপ্রিম কোর্ট তাঁর ৬ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকেই বেপাত্তা হয়ে যান বিচারপতি কারনান। গত সপ্তাহে অবসর নেন তিনি। সে সময়ও ফেরার ছিলেন বলে অভিযোগ। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে গ্রেফতার করতে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের ডিজি (হোমগার্ড) রাজ কানোজিয়ার নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়। সেই দল প্রথমে চেন্নাইয়ে যায়। সেখানে তাঁর খোঁজ না মেলায় পুলিশ কোয়ম্বত্তূরে যায়। মঙ্গলবার রাতে সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার দুপুরে তাঁকে কলকাতায় আনা হয়। বিধাননগর হাসপাতালে তাঁর শারীরিক পরীক্ষার করানো হয়। এর পর অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাতে তাঁকে এসএসকেএমের কার্ডিওলজি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
আরও পড়ুন
বৃষ্টিতে ভিজেই লখনউ-এর যোগ দিবসে যোগ মোদীর
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের পথে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কারনান। —নিজস্ব চিত্র।
বিতর্কিত কার্যকলাপের কারণে অনেক বারই শিরোনামে এসেছেন বিচারপতি কারনান। মাদ্রাজ হাইকোর্ট থেকে কলকাতা হাইকোর্টে যখন তাঁকে বদলি করা হয়েছিল, তখন নিজের বদলির নির্দেশের উপর তিনি নিজেই স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন। চলতি বছরের গোড়ায় বিচার বিভাগের দুর্নীতি নিয়েও সরব হন তিনি। একাধিক বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন। ওই বিচারপতিদের বিরুদ্ধে তিনি তদন্তের দাবি তোলেন।
প্রথা ভেঙে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে বিচার বিভাগের নিন্দা করার জেরেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা হয়। সেই মামলার শুনানিতে তলব করা হলেও কারনান হাজিরা দেননি। সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে তিনি পাল্টা পদক্ষেপ করেন। দেশের প্রধান বিচারপতি-সহ সুপ্রিম কোর্টের মোট আট বিচারপতিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন বিচারপতি কারনান। বার বার শীর্ষ আদালতকে অগ্রাহ্য করার দায়ে কারনানকে দোষী সাব্যস্ত করে সুপ্রিম কোর্ট। তাঁকে ছ’মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy