Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
K K SHAILAJA

শিক্ষিকা থেকে মন্ত্রী, করোনাকে হারিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পেলেন ‘রকস্টার’ শৈলজা

প্রয়োজনে অসুস্থ অবস্থাতেও কাজ করতে দ্বিধা করেন না শৈলজা। দরকার হলে, মাঝরাতেও তিনি হাজির মন্ত্রকের কাজ পরিচালনা করতে। স্বামী কে ভাস্করন এবং দুই ছেলের পাশাপাশি প্রত্যেক কেরলবাসীকে নিয়ে তাঁর বৃহত্তর সংসার।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ১৩:০৫
Share: Save:
০১ ১৫
পেশাগত সাফল্যে আড়ালে চলে গিয়েছিল পোশাকি পরিচয়। কে কে শৈলজা থেকে তিনি হয়ে গিয়েছিলেন ‘শৈলজা টিচার’। করোনা অতিমারির সময়ে তাঁকে নতুন ভূমিকায় পেল কেরল। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিচয় ছাপিয়ে তিনি আক্ষরিক অর্থেই করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধ করলেন দশভুজা হয়ে।

পেশাগত সাফল্যে আড়ালে চলে গিয়েছিল পোশাকি পরিচয়। কে কে শৈলজা থেকে তিনি হয়ে গিয়েছিলেন ‘শৈলজা টিচার’। করোনা অতিমারির সময়ে তাঁকে নতুন ভূমিকায় পেল কেরল। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিচয় ছাপিয়ে তিনি আক্ষরিক অর্থেই করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধ করলেন দশভুজা হয়ে।

০২ ১৫
আদতে কান্নুর জেলার বাসিন্দা শৈলজা বর্তমানে পিনারাই বিজয়নের মন্ত্রিসভায় দু’জন মহিলা বিধায়কের এক জন। জন্ম ১৯৫৬ সালের ২০ নভেম্বর। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল শিক্ষিকা হওয়ার। বিজ্ঞানে স্নাতক শৈলজা এর পর শিক্ষাবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন বিশ্বেশ্বরায়া কলেজ থেকে।

আদতে কান্নুর জেলার বাসিন্দা শৈলজা বর্তমানে পিনারাই বিজয়নের মন্ত্রিসভায় দু’জন মহিলা বিধায়কের এক জন। জন্ম ১৯৫৬ সালের ২০ নভেম্বর। ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল শিক্ষিকা হওয়ার। বিজ্ঞানে স্নাতক শৈলজা এর পর শিক্ষাবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেন বিশ্বেশ্বরায়া কলেজ থেকে।

০৩ ১৫
শিবপুরমের একটি হাইস্কুলে তিনি শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন ১৯৯৭ সালে। পূর্ণসময়ের রাজনীতিক হবেন বলে সাত বছর পরে সেই স্কুলের প্রিন্সিপালের পদ থেকে ইস্তফা দেন।

শিবপুরমের একটি হাইস্কুলে তিনি শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন ১৯৯৭ সালে। পূর্ণসময়ের রাজনীতিক হবেন বলে সাত বছর পরে সেই স্কুলের প্রিন্সিপালের পদ থেকে ইস্তফা দেন।

০৪ ১৫
১৯৯৬ সালে প্রথম বার বিধায়ক নির্বাচিত হন নিজের জন্মস্থান কান্নুর জেলার কুথুপরম্ব কেন্দ্র থেকে। বর্তমানে তিনি সেই কেন্দ্রেরই বিধায়ক তথা কেরলের স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী। কঠোর পরিশ্রমী হিসেবেই নিজের কাজের জায়গায় পরিচিত সিপিএম নেত্রী শৈলজা।

১৯৯৬ সালে প্রথম বার বিধায়ক নির্বাচিত হন নিজের জন্মস্থান কান্নুর জেলার কুথুপরম্ব কেন্দ্র থেকে। বর্তমানে তিনি সেই কেন্দ্রেরই বিধায়ক তথা কেরলের স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী। কঠোর পরিশ্রমী হিসেবেই নিজের কাজের জায়গায় পরিচিত সিপিএম নেত্রী শৈলজা।

০৫ ১৫
নিজেও যেমন কাজ করেন, ঠিক সে রকমই স্বাস্থ্য মন্ত্রকেও কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত করেন না। সহকর্মীদের কথায়, প্রয়োজনে অসুস্থ অবস্থাতেও কাজ করতে দ্বিধা করেন না শৈলজা। দরকার হলে, মাঝরাতেও তিনি হাজির মন্ত্রকের কাজ পরিচালনা করতে। স্বামী কে ভাস্করন এবং দুই ছেলের পাশাপাশি প্রত্যেক কেরলবাসীকে নিয়ে তাঁর বৃহত্তর সংসার।

নিজেও যেমন কাজ করেন, ঠিক সে রকমই স্বাস্থ্য মন্ত্রকেও কোনও ঢিলেমি বরদাস্ত করেন না। সহকর্মীদের কথায়, প্রয়োজনে অসুস্থ অবস্থাতেও কাজ করতে দ্বিধা করেন না শৈলজা। দরকার হলে, মাঝরাতেও তিনি হাজির মন্ত্রকের কাজ পরিচালনা করতে। স্বামী কে ভাস্করন এবং দুই ছেলের পাশাপাশি প্রত্যেক কেরলবাসীকে নিয়ে তাঁর বৃহত্তর সংসার।

০৬ ১৫
করোনার আগে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন শৈলজা।  নিপা সংক্রমণ নিয়ে মালয়ালম ছবি ‘ভাইরাস’-এ শৈলজার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রেবতী।

করোনার আগে নিপা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন শৈলজা। নিপা সংক্রমণ নিয়ে মালয়ালম ছবি ‘ভাইরাস’-এ শৈলজার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন রেবতী।

০৭ ১৫
বিদেশে করোনা সংক্রমণের কথা শৈলজা প্রথম জানতে পারেন জানুয়ারি মাসে। তার পরেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় তাঁর মন্ত্রকে। ভারতে বা তাঁর নিজের রাজ্য কেরলে এই রোগ হানা দিলে কী পদক্ষেপ করা হবে, তার পরিকল্পনা তখন থেকেই শুরু করে দিয়েছিলেন শৈলজা।

বিদেশে করোনা সংক্রমণের কথা শৈলজা প্রথম জানতে পারেন জানুয়ারি মাসে। তার পরেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় তাঁর মন্ত্রকে। ভারতে বা তাঁর নিজের রাজ্য কেরলে এই রোগ হানা দিলে কী পদক্ষেপ করা হবে, তার পরিকল্পনা তখন থেকেই শুরু করে দিয়েছিলেন শৈলজা।

০৮ ১৫
সতর্ক করা হয় কেরলের ১৪টি জেলাকে। প্রত্যেক জেলায় খোলা হয় কন্ট্রোল রুম। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে প্রথম কেরলে কোভিড সংক্রমিতের সন্ধান পাওয়া যায়। তিনি চিনের উহান থেকে দেশে ফিরেছিলেন।

সতর্ক করা হয় কেরলের ১৪টি জেলাকে। প্রত্যেক জেলায় খোলা হয় কন্ট্রোল রুম। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে প্রথম কেরলে কোভিড সংক্রমিতের সন্ধান পাওয়া যায়। তিনি চিনের উহান থেকে দেশে ফিরেছিলেন।

০৯ ১৫
তত দিনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর নির্দেশ রপ্ত করে ফেলেছে কেরল। প্রথম থেকেই করোনা দমনে কে কে শৈলজার নীতি ছিল হু-এর নির্দেশ— ‘টেস্ট, ট্রেস, আইসোলেট, সাপোর্ট’। অর্থাৎ সংক্রমণের পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ, বিচ্ছিন্নকরণ এবং বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রোগীকে সব রকম সাহায্য করা।

তত দিনে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর নির্দেশ রপ্ত করে ফেলেছে কেরল। প্রথম থেকেই করোনা দমনে কে কে শৈলজার নীতি ছিল হু-এর নির্দেশ— ‘টেস্ট, ট্রেস, আইসোলেট, সাপোর্ট’। অর্থাৎ সংক্রমণের পরীক্ষা, চিহ্নিতকরণ, বিচ্ছিন্নকরণ এবং বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রোগীকে সব রকম সাহায্য করা।

১০ ১৫
তার পরেও দ্রুত হারে করোনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে কেরলে। কারণ তখন সারা পৃথিবী থেকে কেরলের মানুষ ঘরে ফিরছিলেন। সংক্রমণের শীর্ষ সময়ে কেরলে ১ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ কোয়রান্টিনে ছিলেন। সে রাজ্যে আটকে পড়েছিলেন দেড় লক্ষ পরিযায়ী কর্মী। তাঁদের দেড় মাস ধরে রোজ তিন বার করে খাবার দিয়েছে কেরল সরকার। তার পর তাঁরা বিশেষ ট্রেনে নিজেদের বাড়িতে ফিরেছেন।

তার পরেও দ্রুত হারে করোনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে কেরলে। কারণ তখন সারা পৃথিবী থেকে কেরলের মানুষ ঘরে ফিরছিলেন। সংক্রমণের শীর্ষ সময়ে কেরলে ১ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষ কোয়রান্টিনে ছিলেন। সে রাজ্যে আটকে পড়েছিলেন দেড় লক্ষ পরিযায়ী কর্মী। তাঁদের দেড় মাস ধরে রোজ তিন বার করে খাবার দিয়েছে কেরল সরকার। তার পর তাঁরা বিশেষ ট্রেনে নিজেদের বাড়িতে ফিরেছেন।

১১ ১৫
প্রথম থেকেই পরীক্ষার উপর জোর দিয়েছেন শৈলজা। রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজে ৫০০ করে শয্যা তিনি আলাদা রাখতে বলেছিলেন কোভিড সংক্রমিত রোগীদের জন্য। পরীক্ষার ফল যাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাওয়া যায়, সে দিকেও কড়া নজর ছিল শৈলজার।

প্রথম থেকেই পরীক্ষার উপর জোর দিয়েছেন শৈলজা। রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজে ৫০০ করে শয্যা তিনি আলাদা রাখতে বলেছিলেন কোভিড সংক্রমিত রোগীদের জন্য। পরীক্ষার ফল যাতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পাওয়া যায়, সে দিকেও কড়া নজর ছিল শৈলজার।

১২ ১৫
রাষ্ট্রপুঞ্জ স্বীকৃতি দিল শৈলজার প্রয়াসকে। ২৩ জুন, মঙ্গলবার ছিল পাবলিক সার্ভিস ডে বা জনসেবা দিবস। সেখানে ভারত থেকে একমাত্র শৈলজাই আমন্ত্রিত ছিলেন বক্তব্য রাখার জন্য।

রাষ্ট্রপুঞ্জ স্বীকৃতি দিল শৈলজার প্রয়াসকে। ২৩ জুন, মঙ্গলবার ছিল পাবলিক সার্ভিস ডে বা জনসেবা দিবস। সেখানে ভারত থেকে একমাত্র শৈলজাই আমন্ত্রিত ছিলেন বক্তব্য রাখার জন্য।

১৩ ১৫
রাষ্ট্রপুঞ্জের ওয়েব টিভি-তে আয়োজিত ওয়েবিনারে নিজের অভিজ্ঞতা জানান শৈলজা। ভার্চুয়াল এই সমাবেশে তিনি বলেন, কী ভাবে নিজের রাজ্যে করোনার মোকাবিলা করেছেন তিনি।

রাষ্ট্রপুঞ্জের ওয়েব টিভি-তে আয়োজিত ওয়েবিনারে নিজের অভিজ্ঞতা জানান শৈলজা। ভার্চুয়াল এই সমাবেশে তিনি বলেন, কী ভাবে নিজের রাজ্যে করোনার মোকাবিলা করেছেন তিনি।

১৪ ১৫
শৈলজা বলেন, তাঁর মতে প্রথম থেকেই করোনা প্রতিরোধের উপায় হওয়া উচিত ট্রেস, কোয়ারান্টিন, টেস্ট, আইসোলেট অ্যান্ড ট্রিট। অর্থাৎ চিহ্নিতকরণ, নিভৃতবাস, পরীক্ষা, তার ফল পজিটিভ হলে রোগীকে বিচ্ছিন্ন করে চিকিৎসা এবং তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে সব রকম সাহায্য করা।

শৈলজা বলেন, তাঁর মতে প্রথম থেকেই করোনা প্রতিরোধের উপায় হওয়া উচিত ট্রেস, কোয়ারান্টিন, টেস্ট, আইসোলেট অ্যান্ড ট্রিট। অর্থাৎ চিহ্নিতকরণ, নিভৃতবাস, পরীক্ষা, তার ফল পজিটিভ হলে রোগীকে বিচ্ছিন্ন করে চিকিৎসা এবং তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে সব রকম সাহায্য করা।

১৫ ১৫
সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে করোনা দমনের স্বীকৃতি স্বরূপ শৈলজাকে বলা হচ্ছে ‘রকস্টার’। কোথাও আবার ষাটোর্ধ্ব মন্ত্রীর পরিচয় ‘দ্য করোনাভাইরাস স্লেয়ার’। করোনা প্রতিরোধকারী শৈলজা জানাচ্ছেন, নিপা ভাইরাস দমন করার ফলে তাঁর যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেটা করোনা অতিমারিতে খুবই কার্যকর হয়েছে। ‘ঈশ্বরের নিজের দেশ’-কে এ ভাবেই তিনি সব সময় রক্ষা করে যেতে চান পরবর্তী দিনেও।

সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে করোনা দমনের স্বীকৃতি স্বরূপ শৈলজাকে বলা হচ্ছে ‘রকস্টার’। কোথাও আবার ষাটোর্ধ্ব মন্ত্রীর পরিচয় ‘দ্য করোনাভাইরাস স্লেয়ার’। করোনা প্রতিরোধকারী শৈলজা জানাচ্ছেন, নিপা ভাইরাস দমন করার ফলে তাঁর যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেটা করোনা অতিমারিতে খুবই কার্যকর হয়েছে। ‘ঈশ্বরের নিজের দেশ’-কে এ ভাবেই তিনি সব সময় রক্ষা করে যেতে চান পরবর্তী দিনেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy