Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

রোমিলা-চিঠি ফেরতের দাবি শিক্ষকদের

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইতিহাসবিদ রোমিল থাপার ১৯৯৩ সাল থেকেই জেএনইউয়ের এমেরিটা অধ্যাপক। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকদের জন্য এ’টি আজীবন একটি সাম্মানিক পদ।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:১৭
Share: Save:

রোমিলা থাপারকে বায়োডেটা জমা দিতে বলায় জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জেএনইউটিএ। রেজিস্টার যে চিঠিতে রোমিলাকে ওই নির্দেশ দিয়েছেন, সেটিও ফেরত নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। পাল্টা যুক্তিতে আজ জেএনইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কেবল রোমিলাই নন, যে সব এমেরিটাস (মহিলাদের ক্ষেত্রে এমেরিটা) অধ্যাপকের বয়স ৭৫ পেরিয়ে গিয়েছে, সবার কাছেই ওই চিঠি গিয়েছে। সূত্রের মতে, রোমিলাদেবী ছাড়া আরও অন্তত দু’জনকে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইতিহাসবিদ রোমিল থাপার ১৯৯৩ সাল থেকেই জেএনইউয়ের এমেরিটা অধ্যাপক। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকদের জন্য এ’টি আজীবন একটি সাম্মানিক পদ। কিন্তু জুলাইয়ে জেএনইউ-এর রেজিস্ট্রার রোমিলার কাছে চিঠি পাঠিয়ে তাঁকে বায়োডেটা জমা দিতে বলেন। বলা হয়, কমিটি খতিয়ে দেখবে তিনি কী কী কাজ করেছেন। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসতে প্রতিবাদে সরব হন শিক্ষাবিদদের একাংশ। অনেকেই মনে করছেন, রোমিলা বর্তমান মোদী সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করায় ওই পদক্ষেপ। জেএনইউয়ের বর্তমান উপাচার্য জগদেশ কুমার সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ। বরাবরই সঙ্ঘের নিশানায় রয়েছেন রোমিলা থাপার। সূত্রের খবর, তিনি ছাড়া এই চিঠি পান পদার্থবিজ্ঞানী আর রাজারামন ও সমাজবিজ্ঞানী টি কে উমেন।

শিক্ষক সংগঠনও মনে করছে রোমিলাকে ওই চিঠি পাঠানো অভিসন্ধিমূলক। আজ সংগঠনের পক্ষে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত তিন বছরে উপাচার্য ও তাঁর বাছাই করা এগজিকিউটিভ কাউন্সিল দলের লক্ষ্য হল কী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত গরিমা ও ভবিষ্যৎ-প্রতিশ্রুতিকে নষ্ট করা যায়। সেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থেকেই রোমিলাকে এ ভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক সংগঠনের সহ-সভাপতি চিরশ্রী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ওই কাজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেছে জেএনইউটিএ। প্রত্যাহার করতে হবে চিঠিও। আর কাকে কাকে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখার পরেই পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করবে সংগঠন।’’

সমালোচনার মুখে পড়ে আজ মুখ খোলে জেএনইউ কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তি, চলতি বছরের এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, যে সব এমেরিটাস অধ্যাপকের বয়স ৭৫ পেরিয়ে গিয়েছে, তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হবে তাঁরা ওই পদে থাকতে চান কি না। আগামী দিনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান কি না। ওই চিঠি পাঠানোর মানে এই নয় যে সেই ব্যক্তিকে এমেরিটাস পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্ব্বোচ্চ সাংবিধানিক কমিটি সেই ব্যক্তির কাজের পর্যালোচনা করে দেখবেন। এমন পর্যালোচনা এমআইটি বা প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও হয়ে থাকে। কিন্তু চিরশ্রীর অভিযোগ, ‘‘যে কমিটির সিদ্ধান্তের কথা বলা হচ্ছে, সেই এগজিকিউটিভ কাছের লোকেরাই রয়েছেন। ফলে কমিটির শিক্ষক সদস্যরা প্রতিবাদ জানালেও তা খারিজ হয়ে যায়।’’

শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ, রোমিলাদেবী এমেরিটা হওয়ার প্রায় ২৫ বছর পরে নতুন নিয়ম চালু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। পুরনোদের ওই আইনের আওতায় আনা অনৈতিক। পাল্টা যুক্তিতে কর্তৃপক্ষের দাবি, এক জন এমেরিটাসের অবদান নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে খতিয়ে দেখার অধিকার রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের। রয়েছে সেই নিয়োগ বাতিল করার অধিকারও।

অন্য বিষয়গুলি:

Romila Thapar JNU Jawaharlal Nehru University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy