শিনজো আবে
ডোকলাম-কাণ্ডের পরে সীমান্ত-সহ সব রকম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে মজবুত করার লক্ষ্যে জাপানের হাত ধরছে ভারত। আগামী ১৩ তারিখ তিন দিনের সফরে গুজরাতে আসছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। এই সফর সফল করতে জোরকদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিদেশ মন্ত্রক। মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, আবে-র আসন্ন সফরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং যৌথ উৎপাদন-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে এক ধাপে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একাধিক চুক্তিপত্র সই হতে চলেছে। পাশাপাশি অসামরিক পরমাণু ক্ষেত্রে জাপানি সহযোগিতাও গুরুত্ব পেতে চলেছে শিনজো আবে-র সফরে।
এশিয়ার শক্তি সমীকরণের প্রশ্নে চিনের ক্ষমতা খর্ব করতে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে জোট তৈরি করে চলেছে জাপান। আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টোকিও-র বোঝাপড়া রয়েছেই। ভারত জাপান অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকা — এই চর্তুদেশীয় নৌ-মহড়ার বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে বারবার হুঙ্কার দিয়েছে বেজিং। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে নৌ মহড়ার পাশাপাশি বাণিজ্য যোগাযোগের বিষয়টিকেও সমান অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে
জাপান ও ভারত।
আরও পড়ুন: নোটবন্দি সফল, যুক্তি অমিতের
ডোকলাম নিয়ে আড়াই মাসব্যাপী ভারত–চিন পাঞ্জা কষার পর শিনজো আবের এই সফরের দিকে তাই উৎসুক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে এশিয়ার সংশ্লিষ্ট সব দেশই। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ভারতে পা দেওয়ার আগেই সাউথ ব্লক যে ভাবে স্বর তুলছে, তাতে চাপ বাড়ছে বেজিং-এর। বিদেশসচিব জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘আমাদের সঙ্গে জাপানের সম্পর্কের ভবিষ্যত লুকিয়ে রয়েছে সামরিক সহযোগিতা এবং পরমাণু সমঝোতা— এই দু’টি বিষয়ের উপর। ভারতকে সামরিক প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রশ্নে জাপানের খোলামেলা মনোভাবই প্রমাণ করে দু’দেশের মধ্যে কতটা আস্থা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি জাপানের যোগদানে আমাদের পরমাণু শিল্পের অনেকটাই অগ্রগতি ঘটা সম্ভব।’’
বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, সামরিক এবং পরমাণু ক্ষেত্রে সহযোগিতার একটি বিরাট অর্থনৈতিক লাভের দিক তো রয়েছেই। কিন্তু প্রতিদিন জটিল হয়ে উঠছে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি। এমন সময়ে জাপানের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধাটা কেবল মাত্র নিরাপত্তার কারণেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি জাপান ঘুরে এসেছেন সদ্য প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি। নির্মলা সীতারামনের হাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার আগে সেটাই ছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে জেটলির শেষ সফর। জাপানে নৌ-সেনা ঘাঁটি পরিদর্শন করেছেন জেটলি। স্থির হয়েছে, জাপানি নৌসেনার সর্বাধুনিক পি-১ অ্যান্টি সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার এয়ারক্রাফট পরিচালনার প্রশিক্ষণ নেবে ভারতীয় নৌ-সেনা। যাতে জলপথে যে কোনও বিদেশি শত্রুকে শুধু রুখে দেওয়া নয়, ধ্বংসও করতে পারে নৌবাহিনী। পরিকল্পনা রয়েছে, দুই দেশই এক সঙ্গে অ্যান্টি-সাবমেরিন ও অ্যান্টি-মিনি ওয়ারফেয়ারের মহড়া নেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy