আর ক্ষমা নয়। এক বার নিতিন গডকড়ী ক্ষমা করেছিলেন অরবিন্দ কেজরীবালকে। সে ‘ভুল’ আর করতে চাইছেন না অরুণ জেটলি।
এমন একটি পাকাপোক্ত সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর সচিবের বিরুদ্ধে সিবিআই হানা দিতেই কেজরীবাল অরুণ জেটলির বিরুদ্ধে দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার দুর্নীতি নিয়ে সরব হন। তার পরেই আদালতে কেজরীবালের বিরুদ্ধে দশ কোটি টাকার মানহানির মামলা ঠোকেন জেটলি। অপরাধ প্রমাণ হলে দু’বছর পর্যন্ত কারাবাসও হতে পারে। সেই লড়াই এখনও আদালতে চলছে। আদালত কী ফয়সালা করে, সেটি তো ভবিষ্যতের বিষয়। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে বিজেপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আইনি লড়াইয়ে জেটলির যদি জয় হয়, তা হলে আর কেজরীবালকে ‘ক্ষমা’ চাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। শাস্তি ভোগ করতেই হবে।
অতীতে নিতিন গডকড়ীর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিলেন কেজরীবাল। তখনও গডকড়ী একইভাবে মামলা করেন। শেষপর্যন্ত আদালত নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নিতে বলেন। গডকড়ী তখন বলেছিলেন, কেজরীবাল তাঁর বিরুদ্ধে কোনও যে অভিযোগ এনেছিলেন, তা প্রমাণ হয়নি। তিনি ক্ষমা চাওয়ায় সেটি মিটমাট হয়ে যায়। একই ভাবে কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারিও গডকড়ীর বিরুদ্ধে আদর্শ কেলেঙ্কারিতে দুর্নীতির অভিযোগ করার পর ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। গডকড়ী মাফও করে দেন। কিন্তু এ বারে যে ভাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করে যাচ্ছেন কেজরীবাল, আদালতে গিয়ে বলছেন, জেটলির ‘মান’ নেই- তাতে বেজায় রুষ্ট জেটলি। দলীয় সূত্রের খবর, এ বারে আর কেজরীবালকে মাফ করার কোনও সুযোগ দেওয়া হবে না। জেটলির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যদি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে আদালত যা শাস্তি দেবে, তাই ভোগ করতে হবে।
এরই মধ্যে আজ দিল্লি হাইকোর্ট থেকে ধাক্কা খেতে হয়েছে কেজরীবালকে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিব রাজেন্দ্র কুমারের দফতরে হানা দেওয়ার সময় বেশকিছু ফাইল সিবিআই বাজেয়াপ্ত করেছিল। সেই ফাইলগুলি কেজরীবালের সরকার ট্রায়াল কোর্টের কাছে ফেরত চেয়ে আবেদন করে। ট্রায়াল কোর্ট সেটি ফেরত দেওয়ার পক্ষেই রায়। কিন্তু সিবিআই সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে যায়। বলে, তদন্তের স্বার্থে এই ফাইলগুলি তাদের প্রয়োজন। হাইকোর্ট আজ সিবিআইয়ের আবেদন মঞ্জুর করে ট্রায়াল কোর্টের রায়কে খারিজ করে দিয়েছে।
বিজেপির সচিব শ্রীকান্ত শর্মার বক্তব্য, ‘‘কেজরীবাল একের পর এক ভুল করে গিয়েছেন। আর ধারাবাহিকভাবে ক্ষমা চেয়ে গিয়েছেন। নিতিন গডকড়ীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। দিল্লি পুলিশ সম্পর্কে অপশব্দ ব্যবহার করেও ক্ষমা চেয়েছিলেন। দিল্লিতে নিজের জনসভায় কৃষক আত্মহত্যার পরেও সভা থামাননি। পরে তার জন্যও ক্ষমা চেয়েছিলেন। বারবার ক্ষমা চেয়েছেন, এ বারে আর হবে না। শাস্তিভোগ করতেই হবে।’’ কেজরীবালের দলের নেতা দিলীপ পাণ্ডে অবশ্য বলেন, বিজেপি সরকার গোড়া থেকেই দিল্লিতে একটি অচলাবস্থা তৈরি করতে চাইছে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবকে হেনস্থা করে আসলে নিশানা করতে চাইছে অরবিন্দ কেজরীলাবকেই। অরুণাচলের মত দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করাই তাদের লক্ষ্য। আজ হাইকোর্টের যা রায় এসেছে, সেটিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চতর আদালতে যাওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy