ছবি: সংগৃহীত।
বছরের শুরুটায় একই সঙ্গে আশা আর আশঙ্কার সুর মিশছে মন্দিরনগরীতে। তবে জগন্নাথধামে আশার পাল্লাই ভারী। আজ, রবিবার থেকেই পুরোপুরি ছন্দে ফিরতে চলেছে বাঙালির প্রিয় তীর্থ জগন্নাথ মন্দিরও। এই দিনই পুরীর বাইরের সাধারণ ভক্তেরাও মন্দিরে ঢুকতে পারবেন।
ওড়িশার মুখ্যসচিব সুরেশ মহাপাত্র বলেন, ‘‘প্রথম দিকে দর্শনের কিছু কড়াকড়ি থাকছে। জগন্নাথ দর্শনে আসার আগে চার দিনের মধ্যে কোভিড পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ রিপোর্টের শংসাপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। সেই নথি দেখেই মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হবে।’’ বর্ষবরণের রাত থেকে বছরের প্রথম দু’টি দিন অবশ্য সতর্কতার মেজাজে ১৪৪ ধারার বিধিনিষেধে মুড়ে ফেলা হয় মন্দির তল্লাট। স্থানীয় প্রশাসন তথা মন্দিরের সেবায়েতকুলের বরাবরের অভিজ্ঞতা, মন্দিরে বছরের শেষ দিন কিংবা পয়লা জানুয়ারি হেসেখেলে লক্ষাধিক ভক্তের ভিড় হয়। এ যাত্রা, গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে ধাপে ধাপে মন্দিরের নির্দিষ্ট সংখ্যক সেবায়েতের বাইরে অন্য ভক্তদের প্রবেশের ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে। প্রথমে শুধু সেবায়েতদের পরিজনকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল। এর পরে ২৬ ডিসেম্বর থেকে পুরীর বাসিন্দারাও বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে পর্যায়ক্রমে দর্শনের সুযোগ পান।
কিন্তু রবিবার থেকে পুরীর বাইরের সাধারণ দর্শকেরাও মন্দিরে গিয়ে দর্শন সারতে পারবেন। ওড়িশা সরকার নিযুক্ত মন্দিরের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য তথা প্রবীণ দয়িতাপতি রামচন্দ্র দয়িতাপতি বলছিলেন,
‘‘মন্দিরে সাধারণ ভক্তদের দর্শন শুরুর আগে ভাল খবর,
স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কোভিড সংক্রমণ একেবারে কম। পয়লা জানুয়ারির কোভিড পরীক্ষায় পুরীতে মাত্র জনা বারো রোগীর কোভিড হয়েছে। তাঁরা ঝাড়খণ্ড বা বিহারের বাসিন্দা। তবে ৩ জানুয়ারি থেকে যেহেতু পুরীর বাইরের লোকও মন্দিরে ঢুকবে, এই খবরে কিছুটা আশঙ্কারও কারণ রয়েছে।’’
পুরী প্রশাসন ও মন্দির সূত্রের খবর, গোড়ায় পুরীর সাধারণ বাসিন্দারা মন্দিরে ঢুকতে শুরু করার সময়ে রোজ ৫০০০ লোককে দর্শনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পারস্পরিক দূরত্ব মেনে চলেও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পরে আরও কয়েক জনকে অনুমতি দেয় প্রশাসন। গত ২৯ ডিসেম্বর সব মিলিয়ে ১৭ হাজার ভক্ত দর্শনে গিয়েছিলেন।
রামচন্দ্র দয়িতাপতির পর্ষবেক্ষণ, ‘‘স্বাভাবিক ভাবেই সংখ্যাটা আরও বাড়বে রবিবার থেকে।’’ মন্দিরের এক জন পুরনো সেবায়েত রঘুনাথ গোচিকরও বলেন, ‘‘আপাতত মন্দিরের বাইরে সাতটি কাউন্টার করা হয়েছে। সেই কাউন্টারে নিজের পরিচয় দেখিয়ে ভক্তেরা ঢুকছেন। পুরীর বাসিন্দাদেরও আধার কার্ড মিলিয়েই মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।’’ তবে মন্দির কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, পুরীর বাইরের ভক্তদের কোভিড নেগেটিভ শংসাপত্র দেখতে চাওয়ার নিয়মটি প্রধানত মন্দিরে আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলার সময়কার ভিড়ের কথা ভেবে। এই সময়ে অনেক ভক্ত, সাধু-সন্ন্যাসী পুরীতেও ভিড় করেন। ২০ জানুয়ারির পরে মন্দিরে এই কড়াকড়ি তুলে নেওয়া হতে পারে।
গত মার্চে কোভিড-আবহে দেশের বেশির ভাগ ধর্মস্থানের আগেই দর্শন বন্ধ করে জগন্নাথ মন্দির। গত বছর স্নানযাত্রা, রথযাত্রা থেকে কার্তিক পূর্ণিমার ব্রতের মাসখানেক কোনও ভক্তকে মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু জগন্নাথদেবের সব আচার-অনুষ্ঠান শৃঙ্খলার সঙ্গেই সম্পন্ন হতে দিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ। পুরীর বাসিন্দারাও এই পর্বে তাদের সর্বতো ভাবে সাহায্য করেছে বলে স্থানীয় প্রশাসনের দাবি। পুরীতে বাইরে থেকে ভক্ত সমাগম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে মন্দির-নগরীতে কোভিড-বিধি মেনে চলায়ও জোর দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy