Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
COVID-19

অতিমারি শেষের সরকারি ঘোষণা চান চিকিৎসকেরা

গত এক বছরে দেশে ২৯৪টি ওমিক্রনের প্রজাতি ধরা পড়েছে এবং তারা সংক্রমণও ছড়িয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এদের কোনওটিই তীব্র ভাবে এ দেশে সংক্রম‌ণ ছড়াতে পারেনি।

যাদের এক বার সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও জানাচ্ছেন আইপিএইচএ-র সেক্রেটারি জেনারেল সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ।

যাদের এক বার সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও জানাচ্ছেন আইপিএইচএ-র সেক্রেটারি জেনারেল সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ। প্রতীকী ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:০১
Share: Save:

ওমিক্রন প্রজাতি থেকে দেশে অন্তত এ যাত্রায় বড় মাপের করোনা সংক্রমণের ঢেউ আসার সম্ভাবনা কার্যত নেই বলে চলতি সপ্তাহে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। এ বার এক ধাপ এগিয়ে করোনাকে ‘এনডেমিক’ বা জ্বর, সর্দি-কাশির মতো স্থানীয় পর্যায়ের রোগ হিসাবে ঘোষণার দাবি জানালেন চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান পাবলিক হেল্থ অ্যাসোসিয়েশন (আইপিএইচএ) এবং ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিন (আইএপিএসএম)। দুই সংস্থার পক্ষ থেকে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতে নতুন করে করোনার ঢেউ আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। সরকারের তাই উচিত, অবিলম্বে দেশে কোভিড অতিমারি শেষ হয়ে যাওয়ার ঘোষণা করা, যাতে কোভিড নিয়ে মানুষের আতঙ্ক কাটতে পারে। ঘুরে দাঁড়াতে পারে অর্থনীতি। পাশাপাশি ওষুধ এবং প্রতিষেধক সংস্থাগুলি যে ভাবে করোনাকে কেন্দ্র করে ব্যবসা ফেঁদেছিল তা-ও আগামী দিনে রোখার উপরে জোর দিয়েছে দুই সংগঠন।

যাদের এক বার সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে তাদের ক্ষেত্রে বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও জানাচ্ছেন আইপিএইচএ-র সেক্রেটারি জেনারেল সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ। দুই সংগঠনের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংক্রমণের ফলে শরীরে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, তা প্রতিষেধকের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। তাই যাদের করোনা হয়ে গিয়েছে তাদের বুস্টার ডোজ নেওয়ারও প্রয়োজন নেই। সংগঠনের মতে, “অহেতুক বুস্টার ডোজের নামে দেশের সম্পদ নষ্ট করা অর্থহীন। বরং সেই সম্পদ ভবিষ্যত কোনও রোগের মোকাবিলার জন্য তুলে রাখা হোক।” অনেক ক্ষেত্রে এখনও প্রতিষেধক শংসাপত্র যে বাধ্যতামূলক করে রাখা রয়েছে, তা-ও প্রত্যাহার করে নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। একই সঙ্গে করোনার কারণে গত তিন বছরে যে সব চিকিৎসার (অনিয়ন্ত্রিত মধুমেহ ও ব্লাড প্রেশার, শিশুদের টিকাকরণ, যক্ষ্মা দূরীকরণ) দিকে নজর কম দেওয়া হয়েছিল সেগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়ার উপরে জোর দিয়েছেন চিকিৎসকদের ওই দুই সংগঠন।

গত এক বছরে দেশে ২৯৪টি ওমিক্রনের প্রজাতি ধরা পড়েছে এবং তারা সংক্রমণও ছড়িয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এদের কোনওটিই তীব্র ভাবে এ দেশে সংক্রম‌ণ ছড়াতে পারেনি। যার প্রধান কারণ হল এ দেশের মানুষের শরীরে তৈরি হওয়া স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এ দেশে গোড়ার কিছু মাস বাদ দিলে, পরবর্তী সময়ে লকডাউন নীতি প্রত্যাহার করে সব খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। যার পরিণতিতে সেরো সমীক্ষা অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকের কাছাকাছি মানুষ কোনও না কোনও সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর ফলে মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে। আইপিএইচএ-র সেক্রেটারি জেনারেল সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ বলেন, “ঘরে ঘরে করোনা হওয়ায় এ দেশে তা প্যানডেমিক বা অতিমারি থেকে এনডেমিক বা জনগোষ্ঠীর রোগে পরিণত হয়েছে। ফলে জ্বর, সর্দি-কাশি বা ডেঙ্গির মতোই ভবিষ্যতে ওই সংক্রমণ ঘুরে ঘুরে আসবে। তবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। সরকারের উচিত করোনাকে এ বার এনডেমিক ঘোষণা করে কোভিড নিয়ে আতঙ্ক দূর করা।” এমনকি সুস্থ ব্যক্তিদের মাস্ক পরার মতো করোনা সতর্কবিধি মেনে চলারও আর দরকার নেই বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের বড় অংশ। সংক্রমণ ছড়ানোর প্রশ্নে এ দেশে ওমিক্রন প্রজাতি বিশেষ কিছু প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে দাবি করেছেন জাতীয় টিকাকরণ সংক্রান্ত গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এন কে আরোঢ়া। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রক বর্জ্য ও নর্দমার জলের নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছে। তাতেও আশঙ্কার কিছু মেলেনি। নতুন কোনও নমুনার সন্ধানও পাওয়া যায়নি।”

অন্য বিষয়গুলি:

COVID-19 Health Doctors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy