Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
National News

সাত অদম্য নারীর স্বপ্নউড়ান প্রধানমন্ত্রীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে

কী ভাবে তিলে তিলে অভাবী-অসহায় মানুষের জন্য খাদ্যভাণ্ডার গড়ে তুলেছেন এবং বিনা পয়সায় তাঁদের মধ্যে বিলি করছেন, সেই কাহিনী শেয়ার করেছন ভিডিয়ো বার্তায়।

প্রধানমন্ত্রীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্য়াকাউন্টে নিজেদের গল্প শুনিয়েছেন এঁরাই। ছবি: টুইটারের ভিডিয়ো থেকে নেওয়া

প্রধানমন্ত্রীর সোশ্যাল মিডিয়া অ্য়াকাউন্টে নিজেদের গল্প শুনিয়েছেন এঁরাই। ছবি: টুইটারের ভিডিয়ো থেকে নেওয়া

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ১৭:৪৬
Share: Save:

কেউ অর্ধাহারী-অনাহারীদের মুখে খাবার তুলে দিয়ে খাদ্য বিপ্লব ঘটিয়েছেন। কেউ বোমা বিস্ফোরণে হাত উড়ে যাওয়ার পরেও হতোদ্যম হননি। আবার কেউ মহিলাদের কর্মসংস্থানে দেখিয়েছেন নয়া দিশা। পরিবেশ রক্ষায় গোটা সমাজকে বদলে ফেলেছেন কোনও বৃদ্ধা। জীবন ও সমাজ পাল্টানোর যুদ্ধে নজির গড়া এমনই সাত মহিলাকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে কুর্নিশ জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট উৎসর্গ করলেন এই মহিলাদের লড়াই-সাফল্য-ব্যর্থতার কাহিনী তুলে ধরার জন্য।

প্রথম ঘোষণায় তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল সারা দেশে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে দিচ্ছেন, এমন টুইটে ছড়িয়েছিল বিপুল জল্পনা। বোঝা গেল পরের টুইটে। নারী দিবসে মহিলাদের জন্য নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ছেড়ে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। আজ রবিবার মোদীর ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামে সেই সাত নারীর গল্প। শিইন্সপায়ার্সআস হ্যাশট্যাগে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাকাউন্টে ভিডিয়োর মাধ্যমে শেয়ার করা হয়েছে, জীবনকে অন্য ভাবে দেখা সাত নারীর কথা।

‘হ্যালো, আই অ্যাম স্নেহা মোহাদস’— গরিবদের জন্য ‘ফুডব্যাঙ্ক ইন্ডিয়া’ গড়ে তোলা এই নারী শুরু করেছেন এ ভাবেই। তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ের স্মার্ট তরুণী স্নেহা। কেন এমন ভাবনা, কী ভাবে তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন অভাবী-অসহায় মানুষের জন্য খাদ্যভাণ্ডার এবং বিনা পয়সায় তাঁদের মধ্যে বিলি করছেন, সেই কাহিনী শেয়ার করেছন ভিডিয়ো বার্তায়। বলেছেন, ‘‘প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার রান্না করেন স্বেচ্ছাসেবকরা। সেই খাবার প্যাকেটবন্দি করে পৌঁছে দেন সহায়-সম্বলহীন মানুষের কাছে।’’ স্নেহা জানিয়েছেন, তাঁরা কোনও নগদ টাকা ডোনেশন নেন না। চাল, ডাল, তেল, নুন, সব্জি— যাঁর যা ইচ্ছা তাই দেন। তাই দিয়েই প্রতিদিন কয়েকশো মানুষের খাবারের সংস্থান করেন স্নেহা।

বয়স তখন মাত্র ১৩। সেই কিশোরী বয়সেই রাজস্থানের বিকানেরে বোমা বিস্ফোরণে নিজের দু’টো হাতেরই প্রায় কনুই পর্যন্ত খুইয়েছিলেন মালবিকা আইয়ার। পায়ে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন। চোখও অন্ধ হতে বসেছিল। তবে চিকিৎসকদের চেষ্টায় পা ও চোখের বড় ক্ষতি হয়নি। হাত দু’টো হারালেও হারাননি ইচ্ছাশক্তি। আর সেই অদম্য শক্তির জেরেই পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। তাক লাগানো ফল করে ডক্টরেট হয়েছেন। পেয়েছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারও। তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা জীবনটা পাল্টাতে পারি না। কিন্তু জীবনকে দেখার দৃষ্টিকোণ পাল্টাতে পারি। আর দিনের শেষে প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে কী ভাবে লড়াই করছি, সেটাই আসল।’’

আরও পডু়ন: রাজ্যসভার জন্য ৪ প্রার্থী ঘোষণা মমতার, বিদায়ীদের কেউই টিকিট পেলেন না

শ্রীনগরের আরিফার স্বপ্ন ছিল নারী ক্ষমতায়ন। আর সেটা করতে গেলে তাঁদের যে স্বনির্ভর করতে হবে, সেটা বুঝেছিলেন। পশম ও উল দিয়ে কার্পেট, শাল-সহ নানা সামগ্রী তৈরি করা শিখিয়েছেন স্থানীয় মহিলাদের। আরিফা বলেন, ‘‘মহিলা কারিগরদের দুর্দশা আমি দেখেছিলাম। সেটা থেকেই এই ভাবনা।’’

মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহারের কারণে ক্রমাগত কমেই চলেছে ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ। আগামী প্রজন্মের জন্য তাই অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠেছে জল সংরক্ষণ। সেই ক্ষেত্রেই নয়া দিশা দেখিয়েছেন হায়দরাবাদের আর্কিটেক্ট কল্পনা রমেশ। নিজের বাড়িতেই এমন ব্যবস্থা করেছেন, যাতে এক ফোঁটা বৃষ্টির জলও নষ্ট না হয়। সেই জল শুধু নিজে নয়, সরবরাহ করছেন আশপাশের বাড়িগুলিতেও।

মহারাষ্ট্রের এক প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা বিজয়া পওয়ার। বানজারা সম্প্রদায়ের এই মহিলাও মহিলাদের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। মা-ঠাকুমারা এই হস্তশিল্পের কাজ করতেন। তাঁদের সঙ্গে হাতে হাত লাগিয়েই শিখেছিলেন হস্তশিল্পের কাজ। ঘরোয়া সেই কুটিরশিল্পকেই হাতিয়ার করে এগিয়ে চলেছেন বিজয়া। গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিখিয়েছেন মহিলাদের। দেখিয়েছেন রোজগারের পথ।

আরও পড়ুন: ভারতের সব নিপীড়িত গোষ্ঠীকে সাহস জোগাচ্ছে শাহিনবাগ-পার্কসার্কাসের মেয়েমুখেরা

কয়েক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শুরু করেছিলেন ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’। কিন্তু তার অনেক আগে থেকেই এই যুদ্ধে শামিল হয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বৃদ্ধা কলাবতী দেবী। তাঁর কথায়, খোলা জায়গায় শৌচকর্ম করার খারাপ দিকগুলি বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝিয়েছেন তিনি। কিন্তু প্রথম দিকে কেউ তেমন গুরুত্ব দেননি। তবু হাল ছাড়েননি কলাবতী দেবী। দু’-আড়াই বছর ধরে একই ভাবে বুঝিয়ে গিয়েছেন পাড়া প্রতিবেশীদের। তার পর যখন তাঁরা বুঝেছেন, তখন সেই লোকগুলিই বৃদ্ধার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গড়ে তুলেছেন নির্মল এলাকা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy