—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
কেরলে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। গত দু’দিনে রাজ্যে কোনও নিপা আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলেনি। তেমনটাই জানিয়েছেন, কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। তবে রাজ্যবাসীকে সতর্ক থাকার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
গত কয়েক দিন ধরে কেরলের কোঝিকোড়ে বেশ কয়েক জন নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এমনকি, দু’জনের মৃত্যুও হয়েছে এই সংক্রমণের কারণে। তার পর থেকেই তৎপর হয় কেরল প্রশাসন। সংক্রমণ ঠেকাতে বেশ কয়েকটি এলাকাকে কনটেনমেন্ট জ়োন হিসাবে ঘোষণা করে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও চিহ্নিত করে আলাদা করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
শনিবার এবং রবিবার পর পর দু’দিন কেরলে নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া কোনও রোগীর সন্ধান মেলেনি। যাঁরা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁরাও ক্রমে সুস্থ হয়ে উঠছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপাতত পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।’’ তিনি জানান, রাজ্যের পক্ষে এই সংবাদ স্বস্তিদায়ক। এই মুহূর্তে নিপার সংক্রমণ নিয়ে চার জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ওই রোগীদের মধ্যে এক ন’বছর বয়সি শিশুও আছে। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখতে হয়েছিল। তবে সকলেই ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
নিপা আক্রান্ত রোগীদের খবর প্রকাশ্যে আসতেই কোঝিকোড়ে স্কুল, কলেজ-সহ যাবতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছে। আগামী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কোঝিকোড়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধই থাকবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ৩৬টি বাদুড়ের নমুনা সংগ্রহ করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি (এনআইভি)-তে পাঠানো হয়েছে। তাদের শরীরে নিপা ভাইরাস রয়েছে কি না, যাচাই করে দেখা হবে।
কোঝিকোড়ে নতুন করে সংক্রমণের খোঁজ না মিললে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তবে শেষ যে দিনের পরীক্ষায় নিপার নমুনা মিলেছে, তার পর থেকে ৪২ দিন পর্যন্ত বিধিনিষেধ থাকবে।
নিপা ভাইরাসের সংক্রমণের হার কম হলেও মৃত্যুর হার তুলনায় অনেক বেশি। কেন্দ্রীয় চিকিৎসা গবেষণা সংস্থা ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) শুক্রবার জানিয়েছে, নিপা ভাইরাসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ৪০-৭০ শতাংশ। কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর হার তুলনায় অনেকটাই কম। মাত্র ২-৩ শতাংশ।
কোঝিকোড়ে এর আগে ২০১৮ এবং ২০২১ সালে দু’বার নিপা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। ২০১৮ সালে এই ভাইরাসে আক্রান্ত অন্তত ২৩ জনের খোঁজ মিলেছিল। মারা গিয়েছিলেন ১৭ জন।
নিপা আক্রান্ত রোগীদের প্রাথমিক উপসর্গ জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট। তবে কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই রোগ উপসর্গবিহীনও হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মূলত পশুদের শরীর থেকে নিপা ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। তবে পচা, বাসি খাবার থেকেও এই ভাইরাস ছড়ায়। নিপার সংক্রমণ হতে পারে মানুষ থেকে মানুষের শরীরেও। এই ভাইরাসে শূকর জাতীয় প্রাণীদের মধ্যেও মড়ক লাগতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy