ফাইল চিত্র।
করোনার প্রকোপ আক্ষরিক অর্থেই তাদের কোণঠাসা স্তূপে পরিণত করে দিয়েছিল। এখন, অতিমারি প্রশমিত হতে থাকলেও করোনা সুরক্ষার তাগিদেই সেই স্তূপ ঘেঁটে ট্রেনে ব্যবহার্য পর্দা-কম্বল-বালিশ-চাদর খুঁজে বার করে সাফসুতরো করতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে বিপুল সংখ্যায় ওই সব শয্যসামগ্রী কিনতেও হচ্ছে। তাই সিদ্ধান্ত হয়ে গেলেও ট্রেনে শয্যা পরিষেবা দিতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান রেলকর্তারা। রেল সূত্রের খবর, প্রথম ধাপে এপ্রিলের মাঝামাঝি রাজধানী, দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো প্রথম সারির ট্রেনে কম্বল, বালিশ ফিরতে পারে। অন্য ট্রেনে শয্যাসামগ্রী দিতে আরও বেশি সময় লাগবে।
দূরপাল্লার ট্রেনের বাতানুকূল কামরায় পর্দা, কম্বল, বালিশ ফিরিয়ে আনার সরকারি নির্দেশ জারির পরে দু’সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এখনও দেখা নেই কম্বল-বালিশের। প্রায় দু’বছর ওই পরিষেবা বন্ধ ছিল। এখন সেই পরিষেবা ফেরাতে তাদের কার্যত চাদর, কম্বল, বালিশের পাহাড় ঠেলতে হচ্ছে বলে রেল সূত্রের খবর।
এক রেল আধিকারিক বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশের ভিত্তিতে খাতায়-কলমে কম্বল-বালিশ ফিরলেও বাস্তবে তাদের ফেরানোর উপযোগী করতে ব্যাপক ঘাম ঝরাতে হচ্ছে রেলকে।’’ অনেক যাত্রীর প্রশ্ন, আগেভাগে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়া শয্যাসামগ্রী ফেরানোর নির্দেশ জারি করা হল কেন? কোনও সদুত্তর নেই রেলের কাছে।
শুধু পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনেই রাজধানী, দুরন্ত, গৌড় এক্সপ্রেস, সম্পর্কক্রান্তি ও হামসফর এক্সপ্রেস, দার্জিলিং মেলের মতো ছ’টি ট্রেনে ওই পরিষেবা স্বাভাবিক করতে কমবেশি ১৩ হাজার বালিশ কিনতে হবে। কাচতে পাঠাতে হবে প্রায় ১৪ হাজার কম্বল এবং এক লক্ষ ২০ হাজার চাদর। জম্মু-তাওয়াই, যোগবাণী, মিথিলাঞ্চল, সীতামারি, অকাল তখ্তের মতো কিছু ট্রেনের জন্য কিনতে হবে অন্তত ৪২০০ বালিশ। কাচতে পাঠাতে হবে ৬০০০ কম্বল এবং ৩২,০০০ চাদর।
রেল সূত্রের খবর, চাদর, বালিশের ওয়াড়, তোয়ালের মতো উপকরণ যাত্রীরা এক বার ব্যাবহার করার পরে ফের ধুয়ে পরিচ্ছন্ন করে ব্যবহারের উপযোগী করতে অনেকটা সময় লাগে। সেই সময় হিসেব করেই বিপুল সংখ্যায় ওই সব সামগ্রীর জোগাড় করে রাখতে হয়। অতিমারি আবহে গত দু’বছর ধরে ওই সব সামগ্রী বস্তাবন্দি হয়ে পড়ে ছিল। ফলে তার কতটা ব্যবহারের উপযোগী রয়েছে, তার হিসেবও কষতে হচ্ছে রেলকে।
প্রাক্-অতিমারি পর্বে টিকিয়াপাড়া, আসানসোল, মালদহ, শিয়ালদহে পর্দা, বালিশের ওয়াড়, চাদরের মতো নানান উপকরণ ধোয়া হত যন্ত্রচালিত ধোপাখানায়। তার বাইরেও বিপুল পরিমাণ চাদর, পর্দা, তোয়ালে ধোয়ার জন্য বিভিন্ন ধোপাখানার সাহায্য নিতে হত। পুরুষ ও মহিলাদের একাংশ ওই কাজ করতেন। অতিমারিতে দু’বছর রেলে কম্বল, বালিশ, চাদর ব্যবহার বন্ধ থাকায় অসংগঠিত কর্মীদের ওই কর্মশৃঙ্খল অনেকাংশে ভেঙে পড়েছে বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা। তার উপরে রেলে চাদর, বালিশ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার আর্থিক অবস্থার আকস্মিক অবনতিও সমস্যা বাড়িয়েছে। ফলে ১০ মার্চ সরকারি নির্দেশ জারি হলেও দেশের কোথাও দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনে শয্যা পরিষেবা শুরু করা যায়নি। পরিস্থিতি সামলে রাজধানী, দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনে এই পরিষেবা দিতে মাঝ-এপ্রিল হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে রেল।
হাওড়া ডিভিশনের লালকুয়াঁ, ভোপাল, দুন, বিভূতি, বাঘ এক্সপ্রেস, কালকা মেল, মুম্বই মেল, যোধপুর এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনেও পুরনো পরিষেবা ফেরাতে খোলনলচে বদলে সব কিছুর আয়োজন করতে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy