—ফাইল চিত্র।
রেল পরিচালন ব্যবস্থাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার প্রশ্নে আজ নীতিগত সিদ্ধান্ত নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ রেল মন্ত্রকে দিনভর বৈঠকের পরে প্রাথমিক ভাবে ৫০টি রুটকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যে লাইনে ট্রেন চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে বেসরকারি সংস্থাকে। রেল মন্ত্রক সূত্রের দাবি, মন্ত্রকের ইতিহাসে এটি দৃষ্টান্তমূলক নীতি পরিবর্তন। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে তথা যাত্রীদের আধুনিক পরিষেবা দিতে আংশিক বেসরকারিকরণের ওই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে রেল।
যদিও ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে রেলের ইউনিয়নগুলি। তাদের বক্তব্য, বেসরকারি সংস্থার হাতে গেলে ভাড়া তো বাড়বেই, সঙ্গে ওই সব ট্রেনে ছাড় পাবেন না রেলের কর্মী, প্রবীণ কিংবা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত যাত্রীরা।
রেল মন্ত্রকের ব্যাখ্যা, গোটা পরিকল্পনা সম্পূর্ণ ভাবে রূপায়ণ করতে বেশ কয়েক বছর লাগবে। এখন অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ লাইনে ক্ষমতার চেয়ে গড়ে অন্তত দেড়গুণ বেশি ট্রেন চলছে। ফলে এই মুহূর্তে নতুন ট্রেন নামানো কঠিন। রেলের এক কর্তার কথায়, ‘‘২০২০-২১ সাল থেকে পূর্ব ও পশ্চিমের পণ্যবাহী করিডর চালু হবে। মালগাড়িগুলি ওই করিডরে যেতে শুরু করলেই মূল লাইনের ব্যবহার অনেক কমবে। একই সঙ্গে ইলাহাবাদে থার্ড লাইন নির্মাণ চলছে। যা চালু হলে দিল্লি-হাওড়া রুটের ট্রেনজট অনেকটাই কমবে। বাড়বে নতুন ট্রেন চালানোর সুযোগ।’’
কোন পরিকল্পনা মেনে এগোলে বেসরকারি সংস্থাগুলি আগ্রহ দেখাবে তা ঠিক করতে উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ-পূর্ব, উত্তর-মধ্য, দক্ষিণ-মধ্য ও দক্ষিণ রেলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মন্ত্রকে বৈঠকে বসেন রেল বোর্ডের সদস্য (ট্র্যাফিক)। প্রাথমিক ভাবে ৫০টি রুটকে চিহ্নিত করা হয়, যে রুটগুলির ট্রেনকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে। ওই রুটের তালিকায় রয়েছে হাওড়া-দিল্লি, হাওড়া-মুম্বই, হাওড়া-চেন্নাই, দিল্লি-মুম্বই, দিল্লি-চেন্নাই ছাড়াও একাধিক স্বল্প দৈর্ঘ্যের আন্তঃশহর রুট। বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে কলকাতা-মুম্বই লোকাল ট্রেন পরিষেবার একাংশও।
রেলের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, উপযুক্ত পরিষেবা পেলে যাত্রীরা পয়সা খরচে পিছপা নন। বৈঠকে রেল কর্তারা মূলত জোর দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মানের পরিকাঠামো গড়ে তোলায়। তাঁদের বক্তব্য, একমাত্র তবেই বেসরকারি সংস্থাগুলি ট্রেন চালাতে আগ্রহ দেখাবে। রেল কর্তারা সওয়াল করেন, বর্তমানে তেজস বা হামসফরের মতো ট্রেনগুলি উন্নত পরিষেবাযুক্ত। তাই প্রাথমিক ভাবে বেসরকারি সংস্থার হাতে ওই ট্রেনগুলি তুলে দেওয়া হোক। তবেই আগ্রহ দেখাবে সংস্থাগুলি। একই সঙ্গে কোনও বেসরকারি সংস্থা যদি বাইরে থেকে অত্যাধুনিক ট্রেন এনে চালাতে চায়, সে ক্ষেত্রেও রেলের নীতিগত আপত্তি যাতে না থাকে সে বিষয়টি ভাবনাচিন্তায় রয়েছে।
যাত্রিভাড়ায় প্রতি বছর যে ত্রিশ হাজার কোটি টাকা রেলের ক্ষতি হয়, নতুন ব্যবস্থায় তা কমাতে চাইছে রেল। বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে চালানো ট্রেনের ভাড়া ওই রুটের অন্য ট্রেনের চেয়ে বেশি হবে। কোনও ক্ষেত্রে তা রাজধানী-শতাব্দীর থেকেও বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রেলের ব্যাখ্যা, কোনও একটি রুটে যখন দরপত্র ডাকা হবে তখন যে সংস্থা বেশি অর্থ রেলকে দেবে তার হাতেই ওই রুটে নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট দিনে ট্রেন চালানোর অধিকার তুলে দেওয়া হবে। বিনিময়ে রেলকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেবে ওই সংস্থা। ট্রেন, লাইন, রেলের পরিকাঠামো ব্যবহার করতে দেওয়া হবে সেই সংস্থাকে। একই সঙ্গে লভ্যাংশ ভাগাভাগি করার নীতি নেওয়া হবে বলে স্থির করেছে রেল। যার অর্থ কোনও একটি রুটে ট্রেন চালিয়ে ওই সংস্থা যে লাভ করবে, তার একটি অংশ রেলকে দেবে বেসরকারি সংস্থাটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy