অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ফাইল চিত্র।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গত বছর বাজেট পেশের পরে আরএসএসের আর্থিক সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ সমালোচনা করে বলেছিল, বাজেটে আর্থিক বৃদ্ধির দিকে নজর রয়েছে বটে। কিন্তু চাকরি বা কর্মসংস্থান তৈরিতে তেমন জোর দেওয়া হয়নি। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে মোদী সরকার আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কর্মসংস্থানকে পাখির চোখ করতে চাইছে। রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রায় যখন বেকারত্বকে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অন্যতম হাতিয়ার করা হয়েছে, তার জবাবেও বাজেটে কর্মসংস্থানের কথা বলা হবে বলে অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর।
নরেন্দ্র মোদী বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু মোদী সরকারের আট বছরের কেন্দ্রীয় সরকারে মাত্র ৭.২২ লক্ষ চাকরি হয়েছে। ক্ষোভ প্রশমিত করতে প্রধানমন্ত্রী লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারে ১০ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে রোজগার মেলা করে চাকরি বিলি করছেন। কিন্তু বেকারত্বের হার এখনও যথেষ্ট চড়া। সিএমআইই (সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি)-র হিসেবে ডিসেম্বরে দেশে
বেকারত্বের হার ছিল ৮.৩০ শতাংশ। শহর এলাকায় বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের বেশি। এই পরিস্থিতিতে মোদী সরকার তথা বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, ভোটের কথা মাথায় রেখে বাজেটে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সদর্থক বার্তা দেওয়া দরকার। তা না হলে তরুণ প্রজন্মের ভোটব্যাঙ্কে ধস নামতে পারে। তাই বাজেটের বিভিন্ন ঘোষণায় যে চাকরির সুযোগ তৈরি হবে, তা বাজেট বক্তৃতাতেও বার বার মনে করানো দরকার।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে বাজেটে বেশ কিছু নতুন ক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য উৎসাহ ভাতা দেওয়ার প্রকল্প বা ‘প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ স্কিম’ চালু করা হতে পারে। এর মধ্যে বাইসাইকেল, খেলনা, চামড়া, চটি-জুতোর মতো শ্রমনিবিড় ক্ষেত্র থাকতে পারে, যেখানে যথেষ্ট সংখ্যায় কর্মী-শ্রমিক প্রয়োজন হয়। ইতিমধ্যেই ১৪টি ক্ষেত্রে এই উৎসাহভাতা দিতে মোদী সরকার ২ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। সরকারি রিপোর্ট অনুযায়ী, এর ফলে মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য তৈরির জন্য সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার বেশি লগ্নি এসেছে। তাল মিলিয়ে বাড়ছে কর্মসংস্থান। নীতি আয়োগের প্রাক্তন সিইও অমিতাভ কান্তের মতে, ‘‘দেশে মোবাইল ফোন তৈরিতে উৎসাহ ভাতা দেওয়ার ফলে যে সাফল্য এসেছে, তা অন্যান্য ক্ষেত্রের জন্য শিক্ষণীয়। সরকারের অন্যান্য মন্ত্রকের উচিত এ দিকে জোর দেওয়া।’’
বিরোধীদের অভিযোগ, মোদী সরকারের নোট বাতিল এবং জিএসটি ছোট-মাঝারি শিল্পের কোমর ভেঙে দিয়েছে। বড় শিল্পের বদলে ছোট-মাঝারি শিল্পেই কর্মসংস্থান তৈরি হয়। বণিকসভা পিএইচডি চেম্বার অব কমার্সের মতে, ছোট-মাঝারি শিল্প স্বল্প সুদে ঋণের মতো নানা সমস্যায় ভুগছে। কর্মসংস্থান তৈরি করতে হলে বাজেটে সে দিকে নজর দিতে হবে।
একইসঙ্গে তরুণ-তরুণীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির যোগ্য করে তোলাটাও দরকার বলে শিল্পমহলের মত। কারণ, বণিকসভা সিআইআই, এআইসিটিই, সিআইআই-এর ‘ইন্ডিয়া স্কিলস রিপোর্ট ২০২২’-অনুযায়ী, তরুণ প্রজন্মের মাত্র ৪৯ শতাংশের কাছে চাকরি করার দক্ষতা রয়েছে। বণিকসভার এক কর্তা বলেন, ‘‘মোদী সরকার মেক ইন ইন্ডিয়া, আত্মনির্ভর ভারত ইত্যাদির কথা বলছে। কিন্তু কর্মসংস্থানের সমস্যা থেকেই গিয়েছে। তাই অর্থনীতির সমস্ত ক্ষেত্রে নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি করাটা জরুরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy