Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Inda

১১ বছরে সর্বনিম্ন! চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার নামল ৪.২ শতাংশে

২০১৯-২০ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকের ডিডিপি বৃদ্ধির হার ৩.১ শতাংশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ১৯:৪৩
Share: Save:

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং লকডাউনের জেরে যতটা বিপর্যয়ের আশঙ্কা ছিল, ‘গ্রস ডোমেস্টিক প্রডাক্ট’ বা জিডিপি বৃদ্ধির হারে তার চেয়ে কিছুটা স্বস্তি দিল। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকের ডিডিপি বৃদ্ধির হার ৩.১ শতাংশ। আজ শুক্রবার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই নিয়ে পুরো আর্থিক বছরের জিডিপি বৃদ্ধির হার দাঁড়াল ৪.২ শতাংশ। গত ১১ বছরে এত নীচে নামেনি আর্থিক বৃদ্ধি।

যদিও এই ত্রৈমাসিকের মধ্যে লকডাউন ছিল মাত্র এক সপ্তাহ। ফলে পরের ত্রৈমাসিকে এক ধাক্কায় জিডিপি বৃদ্ধির হার অনেকটা নীচে নেমে যেতে পারে বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে ‘ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিস’ বা জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয় জিডিপি-র তথ্য প্রসাশ করে বিবৃতিতে দাবি করেছে, করোনাভাইরাস এবং লকডাউনের প্রভাব পড়েছে জিডিপি বৃদ্ধির হারে।

২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ৬.১ শতাংশ। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার আগে থেকেই দেশের অর্থনীতিতে ঝিমুনি চলছিল। অটোমোবাইল, উৎপাদন, পরিষেবা থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রেই ঘনিয়ে আসছিল অশনি সঙ্কেত। ফলে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধি আগের বছরের থেকে নেমে দাঁড়ায় ৫.২ শতাংশে। তার পর সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া কোয়ার্টারে বৃদ্ধির হার আরও কমে হয় ৪.৪ এবং ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া তৃতীয় ত্রৈমাসিকে নেমে যায় ৪.১ শতাংশে। আর শেষ ত্রৈমাসিকে সেই হার নেমে গেল প্রায় ৩ শতাংশে।

আরও পড়ুন: লকডাউনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হোটেল, পর্যটন-সহ পরিষেবা ক্ষেত্র, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

অর্থনীতিবিদরা অবশ্য পূর্বাভাস দিয়েছিলেন ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার হতে পারে ৪.৫ থেকে -১.৫ (ঋণাত্মক) শতাংশের মধ্যে। আবার আর্থিক বৃদ্ধির হার নিয়ে দেশের এক ঝাঁক অর্থনীতিবিদের ভোটাভুটির ব্যবস্থা করেছিল সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। সেই ভোটাভুটির ফলে বলা হয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধি হতে পারে ২.১ শতাংশ। সমীক্ষা সংস্থা মুডিজের পূর্বাভাস ছিল, এই হার ২ শতাংশের কাছাকাছি থাকতে পারে। শুক্রবার শেষ ত্রৈমাসিকের জিডিপির হার প্রকাশের পর সেই অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, করোনাভাইরাসের প্রভাব এবং তার আগে থেকে দেশের অর্থনীতির ঝিমুনিতে জিডিপি যতটা নামবে বলে মনে করা হচ্ছিল, তার চেয়ে কিছুটা ভাল অবস্থানেই রয়েছে। এই আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে এটা কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক।

তবে একইসঙ্গে তাঁরা বলছেন, শুধুমাত্র এই ত্রৈমাসিকের জিডিপি-র হার দেখে করোনাভাইরাসের প্রভাব পুরোটা ব্যাখ্যা করা যাবে না। কারণ দেশে লকডাউন শুরু হয়েছিল ২৫ মার্চ থেকে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত হিসাব করা হয়েছে। ফলে মাত্র এক সপ্তাহের লকডাউন এই হিসেবের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ৩১ মে পর্যন্ত ধরলে লকডাউন হয়েছে দু’মাস এক সপ্তাহ। সেই মেয়াদ আরও বাড়তে পারে। ফলে করোনাভাইরাস এবং লকডাউন অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলেছে, তার হিসেব পাওয়া যাবে ২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথম এবং দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে।

লকডাউনে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে বিমান। সব ক্ষেত্রে এই স্থবিরতা প্রভাব ফেলেছে আর্থিক বৃদ্ধিতে। ছবি: পিটিআই

আরও পড়ুন: ১ জুন থেকে খুলছে ধর্মীয় স্থান, ৭ জুন চালু হচ্ছে অফিসও, বললেন মুখ্যমন্ত্রী

আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ আবার প্রায় নিশ্চিত, পরের ত্রৈমাসিকে আরও নীচে নামবে বৃদ্ধির হার। ব্যাখ্যা করে তাঁরা বলছেন, মাত্র সাত দিনের লকডাউনের জেরেই আর্থিক বৃদ্ধির হার ১ শতাংশ কমে গিয়েছে। ৪.১ থেকে নেমে ৩.১ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু তার পর লকডাউনের জেরে শিল্পের চাকা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। উৎপাদন, পরিষেবা, পর্যটন, বিনোদন— সব ক্ষেত্রে বিপুল লোকসানের বোঝা চাপবে। কোটি কোটি পরিযায়ী শ্রমিক কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরেছেন। তার উপর মার্চ, এপ্রিল এবং মে— প্রথম ত্রৈমাসিকের তিন মাসই কার্যত লকডাউনের মধ্যে থাকছে দেশ। তার বিরাট ঋণাত্মক প্রভাব অবশ্যই আর্থিক বৃদ্ধিতেও পড়বে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in India Coroanvirus Lockdown GDP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy