প্রতীকী ছবি।
লকডাউনে আটকে পড়া ভারতে নারী ও শিশু নির্যাতনের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে।
শিশু নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সংগঠন দ্য চাইল্ডলাইন ইন্ডিয়া জানিয়েছে, লকডাউন শুরু হওয়ার প্রথম ১১ দিনের (২০ থেকে ৩১ মার্চ) মধ্যে ফোনে অন্তত ৩.০৭ লক্ষ অভিযোগ পেয়েছে তারা। যার মধ্যে ৯২,১০৫টি শিশু নির্যাতনের নালিশ। যা থেকে স্পষ্ট, লকডাউনের জেরে নির্যাতিতা মহিলা ও শিশুরা তাঁদের নির্যাতনকারীর সঙ্গেই ঘরবন্দি থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে অত্যাচার ক্রমশ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তার জন্য চালু হওয়া ‘চাইল্ডলাইন নম্বর ১০৯৮’কে টোল ফ্রি ও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত নম্বর হিসেবে সরকারকে ঘোষণা করার প্রস্তাব দিয়েছেন সংস্থার ডেপুটি ডিরেক্টর হরলিন ওয়ালিয়া। যাতে অন্তত বিপদে পড়লে দ্রুত অভিযোগ জানানো যায়। হরলিনের মতে, ২২ মার্চ জনতা কার্ফুর পরে ২৪ মার্চ থেকে দেশব্যাপী লকডাউন ঘোষণার পরেই নির্যাতনের নালিশ আগের তুলনায় অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
লকডাউনে ঘরবন্দি শিশুদের মানসিক চাপ কী ভাবে কমানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার একটি কর্মশালার আয়োজন করেছিল নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক। সেখানে হরলিন জানান, নির্যাতনের নালিশ ছাড়াও শিশুদের সমস্যা নিয়ে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছে। শারীরিক অসুস্থতা (১১%), শিশু শ্রমিক (৮%), নিখোঁজ শিশু (৮%), গৃহহীন শিশু (৫%) সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যাও কম নয়। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা জানিয়েছেন, লকডাউনে নারী নির্যাতনের সংখ্যা বেড়েছে। ই-মেলে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ জানিয়েছেন অনেকেই।
রেখার মতে, এই ধরনের ঘটনায় আসল সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। অনেকেই পরবর্তী অত্যাচারের ভয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না। স্বামী বা সঙ্গীর বিরুদ্ধে পুলিশে যেতে তাঁরা ভয় পাচ্ছেন এই ভেবে যে, সঙ্গীকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অত্যাচার করতে পারে। সঙ্গী ছাড়া পেয়ে দ্বিগুণ আক্রোশে নির্যাতন চালাবে। তা ছাড়া লকডাউনের জেরে এই সময়ে বাড়ির বাইরে, বাবা-মা বা অন্য নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ। ফলে মুখ বুজে অনেকেই অত্যাচার সহ্য করছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে শুধু ভারতে নয়, নারী ও শিশু নির্যাতনের সংখ্যা সব দেশেই বেড়েছে। এই অবস্থাকে ‘শ্যাডো প্যানডেমিক’ বলে বর্ণনা করেছে তারা। এই অবস্থায় দুঃস্থ, নিপীড়িত শিশু ও মহিলাদের জন্য স্বাস্থ্য, পুষ্টি, খাদ্য, মানসিক সুস্থতার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে নারী ও শিশু কল্যাণমূলক বড় বড় সংগঠনগুলি। পাশাপাশি আচমকা লকডাউন ঘোষণার পরে দূরে পড়তে যাওয়া বহু পড়ুয়াই বাড়ি ফিরতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ কমাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে হেল্পলাইন চালু করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তবে ইউজিসি-র নির্দেশিকা চালু হওয়ার আগেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই ধরনের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দিল্লি ইউনিভার্সিটি, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার মতো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy