Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Bangladesh Crisis

হাসিনা সরকারের পতনে ভারত-বিরোধী কার্যকলাপ বৃদ্ধি করতে পারে বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী, আশঙ্কায় দিল্লি

বাংলাদেশের অস্থিরতার প্রভাব সীমান্তে পড়তে পারে ধরে নিয়ে কেন্দ্র চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পরে দীর্ঘমেয়াদি হিসাবও কষতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে।

স্বরূপনগরের ভারত বাংলাদেশে সীমান্তে সোনাই নদীতে চলছে নজরদারি। ছবি: নির্মল বসু

স্বরূপনগরের ভারত বাংলাদেশে সীমান্তে সোনাই নদীতে চলছে নজরদারি। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৪০
Share: Save:

আওয়ামী লীগ সরকারের আচমকা পতনের পরে কৌশলগত এবং বাণিজ্যিক— দু’ক্ষেত্রেই উদ্বেগ বেড়েছে নয়াদিল্লির। যা অশান্ত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর ভূকৌশলগত প্রেক্ষাপটে ভারতের জন্য শুভ সঙ্কেত নয়। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে ভারত-বিরোধিতার যে আবহ তৈরি হয়েছে, তাকে বাড়তে না দিয়ে, বরং অপেক্ষা করা উচিত সাউথ ব্লকের। পরিস্থিতি অপেক্ষাকৃত শান্ত হলে নতুন ব্যবস্থায় নিজেদের অভ্যস্ত করে ফের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তৈরি করা যাবে। যে ভাবে মলদ্বীপের নতুন সরকার আসার পরে চূড়ান্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিকে কিছুটা সহজ করেছে নয়াদিল্লি।

বাংলাদেশের অস্থিরতার প্রভাব সীমান্তে পড়তে পারে ধরে নিয়ে কেন্দ্র চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পরে দীর্ঘমেয়াদি হিসাবও কষতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে। হরকত-উল-জিহাদি-ইসলামি বা হুজি এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির ভারত-বিরোধী সক্রিয়তা আবারও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। হাসিনা বাংলাদেশের মাটিতে এই জঙ্গি সংগঠনগুলির ঘাঁটি ধ্বংসের পরে নিশ্চিন্ত ছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু এখন বাংলাদেশে ওই জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি যে ফের তাদের নিরাপদ ক্ষেত্র গড়ে তুলবে না, এমন নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

উত্তর ২৪ পরগনায় বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ কর্তারা।

উত্তর ২৪ পরগনায় বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ কর্তারা। ছবি: পিটিআই।

তবে গত দেড় দশকের ‘সোনালি অধ্যায়ের’ পরে যে সব অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে প্রথমটিই হল অন্তর্বর্তী সরকারের চরিত্র ও কার্যকলাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা। বাংলাদেশের সেনাপ্রধানের সঙ্গে এখনও পর্যন্ত নয়াদিল্লির সম্পর্ক মন্দ নয়। কিন্তু যে সরকার তৈরি হবে, তাতে যদি জামাতের প্রতিনিধিত্ব থাকে (যা থাকবে বলেই খবর) তা হলে তা ভারতের জন্য শুভ নয়। দিল্লির সঙ্গে বিএনপি-র কার্যকর সম্পর্ক আগে ছিল, পরেও তা তৈরি করতে হয়তো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বিএনপি-জামাত জোট হলে ভারত-বিরোধিতা প্রবল হবে। নতুন সরকারের জন্য নির্বাচন কবে হবে বা হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। তাই আপাতত যে নেতৃত্বই গঠিত হোক তার সঙ্গে দ্রুত সেতুবন্ধন করতে হবে দিল্লিকে।

দ্বিতীয়ত, হাসিনার প্রতি প্রবল সমর্থনের কারণেই বাংলাদেশের অন্য বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সংলাপের পরিসর তৈরি হয়নি ভারতের। যা এখন চ্যালেঞ্জ। ভারত-বিরোধিতার কারণে যে জমি নয়াদিল্লি হারাচ্ছে, তা ফিরে পেতে অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। তৃতীয়ত, ঢাকার নয়া নেতৃত্ব ভারতের সঙ্গে পুরনো ট্রানজ়িট চুক্তিগুলি বাতিল করতে পারে। সে ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বে পণ্য সরবরাহের জন্য ভারতকে সমস্যার মুখে পড়তে হবে। আগের চুক্তিগুলির ধারাবাহিকতা ধরে রাখা জরুরি। চতুর্থ বিষয় হল, সে দেশে সংখ্যালঘুর উপর নিপীড়নের মতো ঘটনা, যার জেরে ভারতে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE