ফাইল চিত্র।
গত সাত মাস ধরে রাশিয়া ভারত এবং চিনের সীমান্ত সংঘর্ষকে প্রশমিত করে সম্পর্ক জোড়া লাগানোর জন্য নেপথ্য ভূমিকা পালন করে এসেছে ঠিকই। কিন্তু কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, বছরের শেষে দেখা যাচ্ছে ভারতের হাতে রইল পেনসিল! এপ্রিলের পরে একক ভাবে স্থিতাবস্থা বিঘ্নিত করে দখল করা এলাকা এখনও ছাড়েনি চিনা সেনা। এসে গিয়েছে প্রবল শীত। পাশাপাশি, অনেক বোঝানো সত্ত্বেও চিন বিনা গীত নাই মস্কোর!
কূটনৈতিক শিবিরের মতে, ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে ক্রমশ চিনের ছায়া গভীর হচ্ছে। একইসঙ্গে মস্কো আগাগোড়া ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ এবং পরিস্থিতিকে আমেরিকার সঙ্গে যুক্ত করে দেখে চলেছে বলেই ঘরোয়া ভাবে অভিযোগ করছে সাউথ ব্লকের একাংশ।
বছরের গোড়াতেই ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যাবতীয় ভারত-আমেরিকা কেন্দ্রিক উদ্যোগে জল ঢালতে চেয়ে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, ‘‘চিনের ন্যায্য শক্তিবৃদ্ধিকে খর্ব করতে চেয়ে এটা আমেরিকার বিভাজনের রাজনীতি।’’ ভারত এই ‘ফাঁদে’ যেন পা না দেয়, সে ব্যাপারেও নয়াদিল্লিতে সতর্ক করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। বছরের শেষে এসেও, চিনের সঙ্গে জল এত দূর গড়িয়ে যাওয়ার পরেও দেখা যাচ্ছে মস্কো তার অবস্থান থেকে এক ইঞ্চিও নড়েনি। সেই সের্গেই লাভরভকেই সম্প্রতি বলতে শোনা গেল, ‘‘আমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্ব চিন-বিরোধী খেলায় ভারতকে ঘুঁটি হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে।’’
কূটনৈতিক সূত্রের মতে, আমেরিকার বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যে যে অক্ষ তৈরি করছে চিন এবং রাশিয়া, সেটাই এখন তাদের কাছে একমাত্র সত্য। মস্কো এখন তার বিদেশনীতিকে দেখছে একমাত্র সেই অক্ষেরই নিরিখে। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক বা অর্থনৈতিক কারণে নয়, চিনকে রাশিয়ার প্রয়োজন কৌশলগত কারণেও। মধ্য এশিয়ার বহু জায়গাতে রাশিয়ার প্রভাব ক্ষয়িষ্ণু, সেখানে চিনের হাত ধরে চলা ছাড়া উপায় নেই তাদের। চিনের সমর্থন তাদের কাছে এতটাই জরুরি যে তাদের সঙ্গে সামরিক জোট গড়া নিয়েও স্বর তুলছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। চিন যতটা না ‘কোয়াড’ (ভারত, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং জাপানের উদ্যোগ, ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মুক্ত ও উদার বাণিজ্যনীতির জন্য) বিরোধিতায় সোচ্চার তার চেয়ে অনেক বেশি চিৎকার শোনা যাচ্ছে মস্কো থেকে!
ঘটনা হল, মস্কোর মধ্যস্থতায় চিনের চিঁড়ে তো ভিজছেই না পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায়। কিন্তু সেটাই সব নয়। রাশিয়ার ঘোষিত ও চিৎকৃত এই চিন-নির্ভরতার নীতির মধ্যে ক্রমশ ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের পরিসর হারিয়ে যাচ্ছে, মত কূটনীতিকদের। ভারতের সবচেয়ে পুরনো কৌশলগত মিত্র ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পুরনো অংশীদার মস্কোর সঙ্গে আগের মতো দ্বিপাক্ষিক সংযোগ রাখাই এখন চ্যালেঞ্জ দিল্লির কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy